ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় অরল্যান্ডো হত্যাকাণ্ড

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১৬ জুন ২০১৬

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় অরল্যান্ডো হত্যাকাণ্ড

অরল্যান্ডো নৈশক্লাবে রবিবার রাতে গুলির শব্দ যখন ক্রমেই বাড়ছিল আতঙ্কিত মানুষ তখন যে যেভাবে পারে প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত ছিল। এদের মধ্যে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছিলেন টয়লেটে। টয়লেট খোপের নিচে যেহেতু দূর থেকে পা দেখা যায় তাই অনেকে ওপরে কিছু একটা অবলম্বন করে পা লুকানোর চেষ্টা করে। ক্লাবের এক কাস্টমার ৫২ বছর বয়সী অরল্যান্ডো মেয়ে বন্ধুসহ সেই টয়লেটগুলোর একটিতে আশ্রয় নেন। তিনি জানান, আক্রমণকারী ওমর মতিন বন্দুক হাতে টয়লেট পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে গুলি চালাতে থাকেন। ওই কাস্টমার নিরাপত্তার জন্য নিজের প্রকৃত নাম গোপন রেখে অরল্যান্ডো নামে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বলেন, মতিন ছিলেন নীরব। নীরবে গুলি ছুড়তে ছুড়তে তিনি ওই জায়গা ত্যাগ করেন। পালস নামের সমকামী নৈশক্লাবটিতে রবিবার ভোর রাতে চলা তিন ঘণ্টার গুলি বর্ষণকালে অনেকেই টয়লেটে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এতে অরল্যান্ডো ও তার মেয়ে বন্ধুও মারা যেতে পারতেন কিন্তু তারা যে কারণেই হোক বেঁচে যান। অরল্যান্ডো বলেন, তিনি টয়লেটের ভেতর থেকে শুনতে পাচ্ছিলেন কেউ যেন কারও কাছে এসএমএস টেক্সট না পাঠায় সেজন্য হামলাকারী হুঁশিয়ার করে দিয়ে সেলফোনগুলো নিয়ে নেন। মতিন এরপর ৯১১ তে ফোন করে জঙ্গীগ্রুপ আইএসের প্রতি আনুগত্যের ঘোষণা দেন। হামলাকারী বলেন, সিরিয়ায় মার্কিন চলমান রক্তপাতের প্রতিবাদে তিনি এ কাজ করেছেন। এখন যদি পুলিশ চলে আসে তবে আরও লোককে হত্যা করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দেন। রাত দুইটা থেকে প্রায় ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলে মতিনের একক বন্দুক হামলা। ভোর পাঁচটার সময় পুলিশ আসে। পুলিশের একটি দল টয়লেটের পেছন দিকে দেয়াল ভেঙ্গে সেখানে আটকাপড়া লোকজনকে উদ্ধার করে। অন্য দলটি হামলাকারীকে পাকড়াও করার চেষ্টা করে। বন্দুকধারী মতিন এ সময়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। রবিবার ভোররাতের ওই ঘটনা সম্পর্কে পুলিশের দেয়া বিবৃতি এবং অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিওর সঙ্গে অরল্যান্ডো দেয়া বর্ণনার মিল রয়েছে। রাত দুইটায় গোলাগুলি শুরু হওয়ার সময় নৈশক্লাবের কাস্টমার ২৫ বয়সী আমান্ডা আলভিয়ার তখন তার সঙ্গীর সঙ্গে নাচছিলেন। নাচ বন্ধ করে তিনি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ঘটনার ভিডিও করা শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর আমান্ডাও নিহত হন এবং ভিডিও বন্ধ হয়ে যায়। সেই ভিডিওটি পরে স্ন্যাপচার্টে আপলোড করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, গুলি শুরুর প্রথম দিকে নৈশক্লাবে আসা অনেক লোকজনই পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু হামলাকারী ক্লাবের আরও ভেতরে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করলে তারা আর বের হতে পারেনি। প্রথম দিকে ক্লাবের সশস্ত্র নৈশপ্রহরীরা হামলাকারীকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ এসে তাদের সঙ্গে হাত মেলায়। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×