ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কষ্টার্জিত জয়ে শেষ আটে ঢাকা আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৫ জুন ২০১৬

কষ্টার্জিত জয়ে শেষ আটে ঢাকা আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একেই বলে কপালের নাম গোপাল! কপালগুণের হঠাৎ গোলেই কিনা শেষ আটে নাম লেখাল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড! ‘ওয়ালটন ফেডারেশন কাপ’ ফুটবল আসরে মঙ্গলবার ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবাহনী ১-০ গোলে হারায় ফেনী সকার ক্লাবকে। এই ম্যাচে ড্র করলে বা হারলেই বিদায় নিতে হতো আবাহনীকে। কিন্তু উল্টো নিজেদের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা ফেনী সকারকেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দেয় আবাহনী। এই ম্যাচে নিদেনপক্ষে ড্র করলেই শেষ আটে যাওয়ার টিকেট মিলত সকারের। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় আবাহনী। ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হয়েছে জর্জ কোটানের আবাহনী। আবাহনী তাদের প্রথম ম্যাচেই যাদের কাছে ০-১ গোলে হেরে শিকার হয়েছিল অঘটনের, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘই হয়েছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। ফলে ‘এ’ গ্রুপে আরামবাগের পর কোয়ার্টারে নাম লেখাল আবাহনী। অথচ এই গ্রুপে আবাহনীই ছিল ফেবারিট দল, তারাই কিনা শঙ্কায় পড়েছিল টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার! শুধু তাই নয়, সকারের সঙ্গে ম্যাচ শুরুর আগে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে ছিল আবাহনী! জিতলে মানরক্ষা ও শেষ আটে যাওয়ার স্বস্তি, আর হারলে বা ড্র করলে পত্রপাঠ রিক্ত হস্তে বিদায় ... এমন সমীকরণ ও কঠিন চাপ মাথায় নিয়ে খেলতে নামে আকাশী-নীল শিবির। পুরো ম্যাচে জিতলেও তাদের পারফর্মেন্স নিদারুণ হতাশ করেছে দর্শকদের। অনায়াসে বলা যায়, ধুঁকে ধুঁকে জিতেছে আবাহনী! শুধু তাই নয়, ম্যাচের শেষ ২৯ মিনিট ১০ জনের সকারকে পেয়েও আরেকটা গোলও আদায় করে নিতে পারেনি তারা। এই দল নিয়ে কোনমতে শেষ আটের টিকেটটা পেয়ে গেলেও আসলে কতদূর যেতে পারবে তারা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ম্যাচ শুরুর মাত্র ৪৫ সেকেন্ডে প্রথম গোলটা আদায় করে নেয় আবাহনী। চলমান টুর্নামেন্টে এটা দ্রুততম গোলের রেকর্ড। নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবার থ্রু পাসে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে ডানপ্রান্ত থেকে ইংলিশ ফরোয়ার্ড লি এ্যান্ড্রু টাক বাঁ পায়ের তীব্র গড়ানো শটে গোলরক্ষক সুজন চৌধুরীকে পরাস্ত করেন। ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি সুজন (১-০)। ম্যাচ শেষে সেরা খেলোয়াড়দের পুরস্কার লাভ করেন লি টাক। ৫৩ মিনিটে সতীর্থর ক্রস থেকে বক্সে বল পেয়ে হেড নেন লি টাক। অল্পের জন্য বল জালে ঢোকেনি। ৫৪ মিনিটে বক্সে বল পেয়ে শট নেন আবাহনীর মিডফিল্ডার ফয়সাল মাহমুদ। কিন্তু বক্সে দাঁড়ানো সকারের ৬ ফুটবলারের শক্ত রক্ষণ দেয়ালে বল লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বলে শট নেন ফরোয়ার্ড নাবিব নওয়াজ জীবন। ফল হয় একই। ৬১ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ফেনী সকার। প্রতিপক্ষের ফুটবলারকে অবৈধভাবে বাধা দেয়ায় ইফতেখারুল আলম শাকিলকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড ও লালকার্ড দেখান রেফারি জসিম উদ্দিন। ৮০ মিনিটে সকারের বক্স থেকে আবাহনীর লি টাকের শট গোলরক্ষকের গায়ে লেগে ফেরত আসায় গোল বঞ্চিত হয় আবাহনী। ৮১ মিনিটে বক্সের কাছ থেকে আবাহনীর ডিফেন্ডার প্রাণতোষ কুমারের শট চলে যায় সকারের পোস্ট ঘেঁষে। ৮৬ মিনিটে আবাহনীর বক্সের কাছেই ফ্রি কিক পায় সকার। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার উচে ফেলিক্স। ৮৯ মিনিটে সকারের বক্সে সানডে চিজোবার দুর্বল শট ব্যর্থ হয়। ইনজুরি টাইমে আরও একবার ব্যর্থ হন সানডে। তার শট ফিরিয়ে দেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয়েই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয় ঢাকা আবাহনীর। তবে তাদের এই জয় ছিল সৌভাগ্যপ্রসূত, স্বস্তির ও গৌরবের নয়!
×