ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সান্ত¡না খুঁজছেন এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, বৃষ্টিতে ড্র লর্ডস টেস্ট, আম্পায়ার-বিতর্কে লঙ্কানদের ‘পতাকা’ প্রতিবাদ, ২-০ তে সিরিজ ইংল্যান্ডের, ম্যাচসেরা জনি বেয়ারস্টো, যৌথভাবে সিরিজসেরা বেয়ারস্টো ও কুশল সিলভা

বেয়ারস্টো-হেলসে মুগ্ধ কুক

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৫ জুন ২০১৬

বেয়ারস্টো-হেলসে মুগ্ধ কুক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ দুই দিনে বৃষ্টির দাপটে ড্র হয়েছে লর্ডস টেস্ট। তবে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই ২-০তে ‘ইনভেস্টেক’ সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে ইংলিশরা। প্রতি বিভাগে অতিথিদের নাস্তানাবুদ করেছে ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে জনি বেয়ারস্টো আর এ্যালেক্স হেলস ছিলেন দুর্দান্ত। অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তাদের। বোলিংয়ে আলো ছড়িয়েছেন দুই বিশ্বস্ত যোদ্ধা জেমস এ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড। ভরাডুবির মাঝে অতিথি শ্রীলঙ্কার সান্ত¡না কুশল সিলভা ও নুয়ান প্রদীপের নৈপুণ্য। তেমনটাই জানিয়েছেন সেনাপতি এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। সিরিজে আলোচিত ঘটনার মধ্যে রয়েছে কুকের রেকর্ডময় ১০ হাজারি ক্লাবে প্রবেশ, এ্যান্ডারসনের সাড়ে ৪শ’ উইকট, এবং শেষদিকে এসে আম্পায়ারিং বিতর্ক। ‘বৃষ্টিতে লর্ডস টেস্ট ড্র হয়েছে। এখানে আবহাওয়ার ওপর কারও হাত নেই। তবে সার্বিকভাবে ছেলেরা ভাল খেলেছে। বেয়ারস্টো আর হেলসের কথা আলাদা করে বলতে হবে। ওরা ক্রমশ পরিণত হয়ে উঠছে। দারুণ দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করছে। বোলিংয়ে জিমি-ব্রড যথারীতি দুর্দান্ত। আমি খুশি, তবে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কারণ নেই। দলে উন্নতির অনেক জায়গা রয়েছে।’ বলেন প্রথম ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলক অতিক্রম করা কুক। অভিষেকের পর কম বয়সে এ রেকর্ড গড়তে তিনি পেছনে ফেলেন গ্রেট শচীন টেন্ডুলকরকে। অন্যদিকে সফরকারী শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ম্যাথুস বলেন, ‘আমাদের শুরুটা ছিল খুবই বাজে। ইংল্যান্ড ফেবারিট হিসেবেই সিরিজ জিতেছে। তবে ধীরে হলেও আমরা উন্নতি করেছি। দ্বিতীয় টেস্ট শেষদিনে নিয়ে আসা, এরপর বৃষ্টি না হলে লর্ডসের ফল আমাদের দিকেও আসতে পারত! ব্যাট হাতে কুশল সিলভা আর বোলিংয়ে প্রদীপ প্রতিশ্রুতির ছাপ রেখেছে। স্পিনে হেরাথও ভাল করেছে।’ ইংল্যান্ডের কন্ডিশন সবসময় উপমহাদেশের দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জিং। সিরিজে সেটিই ফুঁটে উঠেছে। বিশেষ করে স্বাগতিক পেস আক্রমণের কাছে কার্যত অসহায় ছিল লঙ্কান টপঅর্ডার ব্যাটিং। প্রথম টেস্টে ইংলিশদের ২৯৮ রানের জবাবে ৯১ ও ১১৯ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। সফরকারীরা তিন দিনেই হারে ইনিংস-ব্যবধানে। এ্যান্ডারসন ১০ (৫+৫), আর ব্রড নেন ৫ (৪+১) উইকেট। অবশ্য ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দিয়ে ম্যাচসেরা হন বেয়ারস্টো। সেই তুলানায় দ্বিতীয় টেস্টে কিছুটা উন্নতি করে লঙ্কানরা। প্রথম ইনিংসে ৪৯৮ রানের জবাবে ১০১ রানে গুটিয়ে গেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে করে ৪৭৫ রান (ফলোঅনে)! ১২৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন দীনেশ চান্দিমাল, কুশলের ব্যাট থেকে আসে ৬০। তবে প্রথম ইনিংসে মঈন আলির অপরাজিত ১৫৫ ছাপিয়ে ইংলিশদের জয়ের ‘নায়ক’ এ্যান্ডারসন (৩/৩৬ ও ৫/৫৮)। লর্ডসের শেষ টেস্টে ইংল্যান্ডের ৪১৬/১০ ও ২৩৩/৭ (ডিক্লে.)Ñ এর বিপরীতে লঙ্কানরা ২৮৮ রান করলে জয়ের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৬২। কিন্তু শেষ দুই দিনে বৃষ্টির বাগড়ায় ৭৮/১ (২৪.২ ওভার)Ñ পরই খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ১৬৭* ও ৩২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দিয়ে ম্যাচসেরা বেয়ারস্টো। ২ সেঞ্চুরিতে ১২৯ গড়ে সর্বোচ্চ ৩৮৭ রান করে সিরিজসেরার পুরস্কারও পকেটে পুড়েছেন বেয়ারস্টো। দুই হাফসেঞ্চুরির সাহায্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৯৩ রান ঝুলিতে পুড়ে তার সঙ্গে ভাগ বসিয়েছেন লঙ্কান কুশল সিলভা। সর্বোচ্চ ২১ উইকেট নিয়েছেন এ্যান্ডারসন। এর মধ্য দিয়ে প্রথম ইংলিশ বোলার ও ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় পেসার হিসেবে সাড়ে ৪ শ’ উইকেটের (১১৬ টেস্টে ৪৫৪) মালিক এখন তুখোড় এই গোলকবাজ। সিরিজে নেতিবাচক দুটি ঘটনাই ঘটে লর্ডস টেস্টে। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যান ও আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে ভর্ৎসনা পেতে হয়েছে এ্যান্ডারসনকে। আর চতুর্থ দিনে প্রদীপের বলে বোল্ড হয়েছিলেন হেলস। কিন্তু আম্পায়ার বিতর্কিত ‘নো’ ডাকলে প্রতিবাদে ড্রেসিং রুমের ব্যালকানিতে থাকা পতাকা নামিয়ে প্রতিবাদ জানায় শ্রীলঙ্কা!
×