ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইফতার ও মুখের রোগ

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১৪ জুন ২০১৬

ইফতার ও মুখের রোগ

ইফতারে বেগুনী : বেগুন দ্বারা তৈরি বেগুনী ছাড়া আমাদের দেশে ইফতারি পূর্ণতা লাভ করে না। ইফতারে বেগুনি একটি আদর্শ খাবার হতে পারে। ইফতারে যেহেতু ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে বেগুনী উপকারী হতে পারে। কারণ বেগুনীর বেগুন এলডিএল কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে থাকে। বেগুন হজমে সাহায্য করে। ইফতারিতে মুড়ি, খেজুর বা অন্য খাবারের সঙ্গে অনেক মুক্ত র‌্যাডিকেলস আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ভেজাল খাবারের কারণে। ফলে ক্যান্সার পর্যন্ত সৃষ্টি হতে পারে। বেগুনীতে বিদ্যমান ফাইটোকেমিক্যালস, কোলরোজেনিক এসিড এবং নাসুনিন আমাদের শরীরের মুক্ত র‌্যাডিকেলসসমূহ অপসারণে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া বেগুনে বিদ্যমান কোলরোজেনিক এসিড এন্টিমিউটোজেনিক হওয়ায় কোন কোষকে ক্যান্সার কোষে মিউটেশনে বাধা প্রদান করে। সারাদিন রোজা রাখার পর বেগুনী থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। যারা কিডনি রোগী তাদের ক্ষেত্রে প্রোটিন জাতীয় খাবারে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। সে ক্ষেত্রে বেগুনী তাদের ইফতারে একটি আদর্শ খাবার হতে পারে। ক্রনিক কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে বেগুনী তৈরি করার সময় বেগুনের টুকরার ওপরের প্রলেপ যেন বেসনের তৈরি না হয়ে ময়দার তৈরি হয়। কারণ কিডনি রোগীদের প্রোটিন জাতীয় খাবারে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। বেগুনের টুকরার ওপর ময়দার প্রলেপ দিয়ে বেগুনী উপকারী হবে শুধুমাত্র কিডনি রোগীদের জন্য নয় বরং সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে। কারণ বেসনেও ভেজাল দেয়া হয়। শুধুমাত্র কিডনিতে অক্সালেট জাতীয় পাথর থাকলে বেগুনী খাওয়া নিষেধ। ইচ্ছা করলে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগীরা বেগুনী খেতে পারেন। এক্ষেত্রে বেগুনী হতে হবে অলিভ অয়েল ভাজা। কারণ অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেলে কোন কোলস্টেরল থাকে না। তাই ইফতারে ময়দার প্রলেপ দেয়া বেগুন অলিভ অয়েলে ফ্রাই করে খেতে পারেন প্রাণ ভরে কোন প্রকার ভয়ভীতি ছাড়াই। যাদের বেগুনে এলার্জি রয়েছে তারা বেগুনের পরিবর্তে পেপে স্লাইস করে তার ওপরে ময়দার প্রলেপ দিয়ে ফ্রাই করে খেতে পারেন যা পেপেনী নামে নামকরণ করা যেতে পারে। রমজান মাসে রাতের খাবারে মাছ এবং বেগুন তরকারি একটি আদর্শ খাবার যা সার্বিক স্বাস্থ্য ভাল রাখে। এলার্জিজনিত মুখের আলসার রোগীদের ইফতারির সময় অতিরিক্ত লেবুর শরবত পান করা ঠিক নয়। এছাড়া সাইট্রাস জাতীয় ফল যত কম খাওয়া যায় ততই ভাল। ইফতারির সময় মুখের আলসার রোগীদের অতিরিক্ত ঠাণ্ঠা পানি পান করে ইফতারি শুরু করা উচিত নয়। অতিরিক্ত ঠাণ্ঠা বা অতিরিক্ত গরম উভয় জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। মুখের আলসার রোগীদের অতিরিক্ত ভাজাপোড়া জাতীয় ইফতারি গ্রহণ করা ক্ষতিকর। তবে কোন প্রকার জটিলতা দেখা দিলে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ মোবাইল : ০১৮১৭-৫২১৮৯৭ ই-মেইল : [email protected]
×