ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধার কাছে ধরাশায়ী চট্টগ্রাম আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৪ জুন ২০১৬

মুক্তিযোদ্ধার কাছে ধরাশায়ী চট্টগ্রাম আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফেডারেশন কাপ ফুটবলে ‘ডেথ গ্রুপ’ হচ্ছে গ্রুপ ‘বি’। এই গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল হচ্ছে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। কেননা সর্বশেষ দুটি টুর্নামেন্টের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টুর্নামেন্ট ও স্বাধীনতা কাপ চ্যাম্পিয়ন তারাই। অথচ বন্দরনগরীর দলটিই কিনা চলমান ফেডারেশন কাপ ফুটবল থেকেই ছিটকে পড়ার হুমকিতে! সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম খেলায় তারা ১-০ গোলে হেরে গেছে গত আসরের রানার্সআপ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের কাছে। এই জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত করল মুক্তিযোদ্ধা। তাদের পয়েন্ট ৩। পক্ষান্তরে ২ ম্যাচে ১ ড্র ও ১ হারে ১ পয়েন্ট চট্টগ্রাম আবাহনীর। শেষ আটে তাদের যাওয়াটা প্রায় অসম্ভবই। তবে এই গ্রুপের শেষ ম্যাচে যদি শেখ রাসেল ১-০ গোলে মুক্তিযোদ্ধার কাছে হেরে যায়, তখন গোল তফাতে/লাল কার্ড ও হলুদ কার্ড প্রাপ্তির সমীকরণে ক্ষীণ হলেও একটা সম্ভাবনা থাকবে চট্টলার দলটির। আগের ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী ১-১ গোলে শেখ রাসেলের সঙ্গে ড্র করেছিল। সোমবার গ্যালারিতে দর্শক যে পরিমাণ উপস্থিত ছিলেন তার চেয়ে বেশি প্রেসবক্সে ছিল সাংবাদিকই! খেলার মধ্যে ছিল না কোন সুনির্দিষ্ট আক্রমণের পরিকল্পনা। দেখে মনে হয়েছে ৯০ মিনিট মাঠের সীমানার মধ্যে বলের পেছনে বা কখনও বল নিয়ে দৌড়াতে হয় তাই ছোটাছুটি! মাঝে মাধ্যে উভয় দলের একে অন্যের সীমানায় এলোমেলো আক্রমণ! তবে খেলার শেষদিকে ৮২ মিনিটে বদলি ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ রবিন গোল করলে ১-০ তে এগিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা। চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার রেজাউল করিম রেজা ছুটে গিয়ে গোল রক্ষা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলে এগিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা। নির্ধারিত ৯০ নিমিটের খেলাতে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকে মুক্তিযোদ্ধা। অতিরিক্ত ৩ নিমিটের সঙ্কেত দেন চতুর্থ রেফারি। এরপর পরই পেনাল্টি পায় চট্টগ্রাম আবাহনী। মুক্তি অধিনায়ক সাইদুল হক বক্সে ফেলে দেন আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড সেইন্ট প্রিয়াক্সকে। রেফারি মিজানুর রহমান পেনাল্টির বাঁশি বাজান। তবে মরোক্কান মিডফিল্ডার তারিক আল জানাবি বল বাইরে মেরে হতাশ করেন আবাহনী সমর্থকদের। ফলে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। নতুন মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে প্রায় ১২-১৩ কোটি টাকা খরচ করে দল গড়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী। মামুনুল-জাহিদ-নাসিরদের মতো তারকা ফুটবলার আর সেøাভাকিয়ান কোচ যোজেফ প্যাভলিক দলে ভিড়িয়েও তেমন কোন চমকই দেখাতে পারছে না বন্দর নগরীর দলটি। যার প্রতিফলন গ্যালারিতে উপস্থিত হাতে গোনা অল্পসংখ্যক দর্শক। ম্যাচের প্রথমার্ধ যেন মনে করিয়ে দেয় গত মৌসুমের পয়েন্ট তলানিতে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনীকেই। ১১ মিনিটে বক্সের ভেতর মুক্তিযোদ্ধার নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড আহমেদ কোলো মুসার হেডের বল ঝাঁপিয়ে পড়েও নাগাল পাননি চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। চট্টগ্রাম আবাহনীর এক ডিফেন্ডার কর্নারের বিনিময়ে দলকে এ যাত্রা রক্ষা করেন। আবাহনীর অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম ছিলেন দু-একটি ভাল সুযোগ সৃষ্টি করা ছাড়া পুরো খেলায় ছিলেন নিষ্প্রভ। ৫৮ মিনিটে দারুণ শট করেছিলেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া। বক্সে ঢুকে নেয়া তার তীব্র শটটি ফিস্ট করে মুক্তিযোদ্ধাকে বিপদমুক্ত করেন গোলরক্ষক মামুন খান। ৭৫ মিনিটে বক্সে বল পেয়েও বল বাইরে মেরে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগটা হাতছাড়া করেছেন মুক্তির মুসা। তারপর ৮২ মিনিটে রবিনের সেই কাক্সিক্ষত গোল মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে। তারপরই চট্টগ্রাম আবাহনীর সেই দুর্ভাগ্যের পেনাল্টি মিস এবং পরাজয়ের নীল বেদনায় আক্রান্ত হওয়া।
×