ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমরা অন্যায়ের শিকার ॥ দুঙ্গা

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৪ জুন ২০১৬

আমরা অন্যায়ের শিকার ॥ দুঙ্গা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বলি হয়ে শতবর্ষী কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে ব্রাজিল। উরুগুয়ের পর সেলেসাওদের বিদায়ে অনেকটাই আকর্ষণহীন হয়ে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর। তবে ব্রাজিলের বিদায় কিছুতেই মানতে পারছেন না দলটির কোচ কার্লোস দুঙ্গা। তিনি এক সাক্ষাতকারে স্পষ্টভাবে বলেছেন, ব্রাজিলকে অন্যায়ভাবে বিদায় করা হয়েছে। ফুটবল খেলে বাদ পড়েনি ব্রাজিল। বিশ্বের ব্রাজিল ভক্তরাও রেফারি ও আয়োজকদের মু-ুপাত করছেন। সবার অভিযোগ, ব্রাজিলকে বিদায় করতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এমনিতেই ইনজুরির কারণে কোপা আমেরিকা শুরুর আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন ব্রাজিলের বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড়। দলে ছিলেন না এ সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার নেইমারও। ফলে ব্রাজিলকে ফেবারিটের আসনে বসাতে দ্বিধা করেছিলেন অনেকেই। তাই বলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেবে পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ীরা! এটা ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত অকল্পনীয় এই পরিস্থিতির মধ্যেই পড়তে হয়েছে সেলেসাওদের। রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বলি হয়ে ১৯৮৭ সালের পর প্রথমবারের মতো কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছে পেলের দেশকে। ম্যাচ শেষে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন ব্রাজিলের কোচ কার্লোস দুঙ্গা। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যে ব্রাজিলের সমর্থকরা খেলাটা দেখেছে। আর তারা দেখেছে যে, কীভাবে ব্রাজিলকে ছিটকে যেতে হলো। আমরা যেভাবে বিদায় নিয়েছি তার সঙ্গে ফুটবলের কোন সম্পর্ক ছিল না। এটা পরিষ্কার হ্যান্ডবল ছিল। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তের ওপর আমাদের কিছু করার নেই। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক বলেন, আমি বুঝতে পারছি না রেফারি আর সহকারী (রেফারি) মিলে ৪ মিনিট কেন আলোচনা করলেন এবং এর পর কোন সমাধান হলো না। ব্রাজিল বিদায় নিয়েছে, কিন্তু এই বিদায় ফুটবল খেলে নয়। তাহলে কিসের জন্য ব্রাজিলের বিদায়? দুঙ্গার কথার না বলা অংশটার মধ্যেই লুকিয়ে আছে উত্তর। এক্ষেত্রে ব্রাজিল কোচ ইঙ্গিত করেছেন রেফারি চার মিনিট ধরে হেডফোনে কার সঙ্গে কথা বলছিলেন সেটাকে। পেরুর বদলি খেলোয়াড় রুইডিয়াজ এন্ডি পোলোর ক্রসটা রিসিভ করার সময় ঊরু আর হাত দুটিই ব্যবহার করেছেন। সেখান থেকেই গোল। এরপর দু’দলের খেলোয়াড়েরা রেফারিকে ঘিরে নিজেদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা চালাতে থাকেন। এ সময় রেফারি কানে বসানো হেডফোন দিয়ে কথা বলেন দীর্ঘক্ষণ। সবার ধারণা তিনি কথা বলেছেন চতুর্থ অফিসিয়ালের সঙ্গে। কিন্তু তাতে লাভ কী? কথা বলা আর রিপ্লে দেখা ছিল যে শুধুই লোক দেখানো! এবারের কোপায় গোললাইন প্রযুক্তি থাকার কথা ছিল। কথা ছিল ভিডিও সহযোগিতাও পাবেন রেফারিরা। ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন বোর্ড যেসব নতুন নিয়ম চালু করেছে, সেগুলো কার্যকর হবে। রেফারিদের ভুল সিদ্ধান্ত কমাতে ব্যবহার করা হবে ভিডিও প্রযুক্তি। এবারের টুর্নামেন্টে বেশ কিছু নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে ঠিকই। যেমন ফাইনালের আগ পর্যন্ত অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা হবে না। নকআউট পর্বে ৯০ মিনিট পর্যন্ত ফল নির্ধারিত না হলে সরাসরি টাইব্রেকার, শুধু ফাইনালে খেলা হবে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ালে চতুর্থ বদলি খেলোয়াড় নামানো যাবে। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগমুহূর্তে জানানো হয়, বেশ কিছু প্রথাগত নিয়মের পরিবর্তন থাকলেও ভিডিও রেফারি থাকবেন না। যে কারণে চার মিনিট ধরে যার সঙ্গেই কথা বলে থাকুন না কেন মূল রেফারি, অন্য প্রান্তে ভিডিও রেফারি ছিলেন না নিশ্চিত। ফলে কার্যত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যত বিলম্বই তিনি করে থাকুন না কেন, যতই বারবার রিপ্লে দেখে ব্রাজিল সমর্থকদের আশায় বুক বাঁধুক না কেন, প্রথম সিদ্ধান্ত বাতিলের কোনো সুযোগ ছিল না। হয়েছেও তাই। এ কারণে আবারও প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টা সামনে চলে এসেছে।
×