ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রোকাইয়া হাসিনা নীলির ‘রবির কিরণ’

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৪ জুন ২০১৬

রোকাইয়া হাসিনা নীলির  ‘রবির কিরণ’

সাজু আহমেদ ॥ দেশের নন্দিত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রোকাইয়া হাসিনা নীলি। সম্প্রতি বেঙ্গল মিউজিক কোম্পানির উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছে শিল্পীর ষষ্ঠ একক এ্যালবাম ‘রবির কিরণ’। এ্যালবামে রবীন্দ্রনাথের প্রেম পর্যায়ের ১০টি গান স্থান পেয়েছে। কলকাতার সঙ্গীত পরিচালক দূর্বাদল চট্টোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে গানগুলো রেকর্ড হয়েছে। ‘রবির কিরণ’ এ্যালবামটি কাজ হয় ২০১৪ সালে। ইতোমধ্যে গানগুলো নিয়ে শ্রোতাদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিল্পী। দেশের রবীন্দ্র অনুরাগীদের অতি প্রিয় শিল্পী রোকাইয়া হাসিনা নীলি গত চার দশক ধরে নিরলসভাবে সঙ্গীত চর্চা করে আসছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি তিনি অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় এবং রজনীকান্তের গানও করেন। তার কণ্ঠে পুরনো দিনের বাংলা গানও শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। শিল্পীর পুরনো দিনের বাংলা গানের এ্যালবাম এ বছর প্রকাশিত হবে বলে জানা গেছে। সঙ্গীত ক্যারিয়ারের স্বীকৃতি হিসেবে চতুর্থ গানের এ্যালবাম ‘কী সুর বাজাও’ এর গানের জন্য নীলি রবীন্দ্রসঙ্গীতে শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক এ্যাওয়ার্ড-২০০৮ পান। স্বাধীনতা একাডেমি ফাউন্ডেশন গুণী এই শিল্পীকে রবীন্দ্রসঙ্গীতে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘সম্মাননা ২০১৪’ প্রদান করে। নন্দিত শিল্পী নীলির জন্ম ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায়। ছোটবেলাতেই তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক শহীদ বুদ্ধিজীবী (মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১) রাশীদুল হাসানের কন্যা নীলি। বাবাই তাঁর সঙ্গীতের প্রথম অনুপ্রেরণা। রোকাইয়া হাসিনা তাঁর চতুর্থ গানের এ্যালবামটি তাঁর বাবাকে উৎসর্গ করেন। নীলি ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তন থেকে সঙ্গীতে পাঁচ বছরের কোর্স সম্পন্ন করেন। প্রয়াত আব্দুল আহাদ ও ওয়াহিদুল হক এবং ড. সন্জীদা খাতুনের প্রিয় ছাত্রী এই শিল্পী। তিনি বরেণ্য রবীন্দ্র ও গণসঙ্গীত শিল্পী প্রয়াত অজিত রায়ের গড়া সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘অভ্যুদয়’ এর পরিচালক ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের ভূয়সী প্রসংশা পেয়েছেন নীলি। বিশেষ করে গত বছর ২৮ আগস্ট আমেরিকার টেক্সাস বেঙ্গলী এ্যাসোসিয়েশনের আমন্ত্রণে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন তিনি। বাংলাদেশী প্রবাসীদের সংগঠন ফোবানার আমন্ত্রণে নীলি ৬ সেপ্টেম্বরে পারফর্মিং আর্ট সেন্টার, সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউজ ইয়র্কে গান করেন। এর আগে ২ সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশীদের সাংস্কৃতিক সংগঠন রঙ্গলয় শিল্পীর একক সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করে। মুম্বাইয়ে রবীন্দ্র নাট্য মন্দিরে প্রেসিডেন্সি কলেজ এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত বাংলা সংস্কৃতি উৎসবে আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে নীলি ২০১৪ সালের ১ মার্চ রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের আধুনিক গানও গান। এ ছাড়া আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে নীলি ৩০ সেপ্টেম্বরে হংকং, ২১, ২২, ২৩ এবং ২৪ অক্টোবর ২০১২ সিঙ্গাপুর, ২০১৩ সালের ৬ জুলাই অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এবং ২০১১ সালের ৩ মার্চ জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট গান পরিবেশন করেন। রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির ৭৫ বছর উদ্যাপন উপলক্ষে ১৯৯৮ সালে নিউইয়র্কে শিল্পীর একক সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়েছিল। রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে নতুন প্রজন্মের আগ্রহ থাকলেও আগের মতো শিল্পী তৈরি হচ্ছে না কেন। এ প্রসঙ্গে নীলি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির অবাধ উন্মুক্ততায় নতুন প্রজন্মের শিক্ষাথীরা চর্চার চেয়ে অনেকটাই প্রচার বিমুখ। একারণে রবীন্দ্রনাথের গানের যে ধারা সেই ধারায় একনিবিষ্টতা রক্ষা করতে পারছে না তারা। এই অবস্থায় রবীন্দ্রনাথের গানের চর্র্র্র্র্র্র্চার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথকে পুরোপুরি ধারণ এবং লালন করার পরামর্শও দেন নীলি।
×