ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংশোধন হচ্ছে বিটিআরসির গাইডলাইন

আগামী মাসেই হচ্ছে এমএনপির নিলাম

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১৪ জুন ২০১৬

আগামী মাসেই হচ্ছে এমএনপির নিলাম

ফিরোজ মান্না ॥ বহু প্রতীক্ষিত এমএনপির নিলাম আগামী মাসে। এমএনপি নিলামের জন্য বিটিআরসি গাইডলাইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে। এখন অপারেটরদের কাছ থেকে আবেদন নেয়া হবে। যদিও অপারেটররা ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এমএনপি নিলামের সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। অপারেটররা বলছে, বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে এই বিরাট কর্মযজ্ঞ শেষ করা সম্ভব হবে না। অপারেটরদের এমন আপত্তি মন্ত্রণালয় কোন আমলে নেয়নি। কারণ এর আগে কয়েক দফা নিলামের সময় পিছানো হয়েছে। এখন আর কোন সময় বাড়ানো হবে না। অপারেটর বদলানোর সুযোগ (এমএনপি) করার বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব এই সেবা কার্যকর করা হবে। এটা আরও আগেই করা হতো। গাইডলাইনে কিছু সংশোধন আনার কারণে নিলাম কিছুটা পিছিয়ে গেছে। এমএনপি নিলামে অপারেটরদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে না। এ সপ্তাহের মধ্যে অপারেটরদের কাছ থেকে আবেদন নেয়া হবে। এমএনপি চালু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি গত বছরের শেষ দিকে এমএনপি চালুর জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দেয়ার পর প্রায় এক বছর কেটে গেছে। এরপরও সেবাটি আমরা চালু করতে পারিনি। আশা করছি সেবাটি এ বছর পুরোপুরিভাবে চালু করতে পারব। সেবাটি চালু হলে গ্রাহকদের সুবিধা বাড়বে। মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে তারা সহজেই অপারেটর বদল করতে পারবেন। সূত্র জানিয়েছে, এমএনপি (মোবাইল নাম্বার পোর্টেবিলিটি) সেবা চালুর বিষয়ে বিটিআরসি দীর্ঘ চার বছর আগে থেকে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করলেও এমএনপি সেবা আলোর মুখ দেখেনি। এই সেবায় গ্রাহকরা ইচ্ছে করলেই নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদল করতে পারবে। এবার ডাক ও টেলিযোগাযোগা প্রতিমন্ত্রী গ্রাহকদের সুবিধার্থে প্রস্তাবটির বিষয়ে ইতিবাচক হয়েছেন। এমএনপি চালু করতে মন্ত্রণালয়ের কোন আপত্তি নেই। যত দ্রুত সম্ভব এটা চালু করা হবে। তখন গ্রাহকরা ইচ্ছে মতো অপারেটর বদল করতে পারবেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, এমএনপির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে। এখন এ সেবা চালু করতে আর কোন বাধা নেই। আমরা গ্রাহক সুবিধার্থে এই সেবা চালু করতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও এমএনপি সেবার ওপর জোর দিয়েছেন। এতে গ্রাহক পর্যায়ে উপকার হবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক হবে। এমএনপি সেবার নিলাম জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। গাইডলাইনেও কিছু সংশোধন আনা হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। অপারেটরদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে বিটিঅঅরসি। তারা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। একটা জটিলতা ছিল এমএনপি চালু করার বিষয়ে। ওই জটিলতা কেটে গেছে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর। সূত্র জানিয়েছে, এমএনপি চালু হলে গ্রাহকের সুবিধা বাড়বে। তখন কোন অপারেটরের কি সুবিধা সেই সুবিধা গ্রাহকরা সুবিধা মতো অপারেটর বদল করে নিতে পারবে। মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি সুবিধা চালু করতে বিটিআরসি একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেবে বলে গত মে মাসে জানিয়েছেন। এমএনপি সুবিধা চালুর বিষয়ে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাজাহান মাহমুদ বলেন, নম্বর না বদলে গ্রাহকদের অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে ২০১৩ সালে জুনে মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছিল বিটিআরসি। অপারেটরদের ২জি লাইসেন্স নবায়ন করার সময় এই নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু নানা কারণে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এখন সব কারণ দূর করে এমএনপি চালু করার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গাইডলাইনে অনুযায়ী অপারেটররা এমএনপি চালু করেনি। বিটিআরসি জানিয়েছে, এমএনপি চালু করতে নতুন গাইডলাইন তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলেই এমএনপির নিলাম করা হবে। ২০১৩ সালে অপারেটরদের এমএনপি সুবিধা বাস্তবায়ন করার বিষয়ে দেয়া নির্দেশনায় বলা হয়, এমএনপি সুবিধা দিতে অপারেটরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০ টাকার বেশি নিতে পারবে না। সাত মাসের মধ্যেই গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে হবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত ও পাকিস্তানে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) সেবা চালু রয়েছে। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে পথ চলতে হলে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশেও এমএনপি সেবা চালু করতে যাচ্ছে।
×