ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তৌফিক অপু

ঘরে ঘরে ঈদ প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৩ জুন ২০১৬

ঘরে ঘরে ঈদ প্রস্তুতি

সব উৎসবেরই থাকে নিজস্ব প্রস্তুতি। উৎসবকে আনন্দঘন করে তুলতে থাকে পরিকল্পনা। বাঙালী মুসলমানের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসব ঈদ। ঈদ-উল-ফিতরকে ঘিরে বাঙালী মুসলমান আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। একমাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদ-উল-ফিতর। দীর্ঘ সিয়াম সাধনার পর যে উৎসব তাকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ বেশি। আর যেহেতু এই ঈদ-উল-ফিতর আমাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব, তাই মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনাও বেশি। সেই উৎসাহ ছড়িয়ে পড়ে কেনাকাটায়। শুধু পরনের পোশাকে নয়, এই কেনাকাটা ছড়িয়ে পরে তৈজসপত্র থেকে শুরু করে আসবাবপত্রেও। তবে রমজানের ঈদে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে কাপড়ের বাজারে। এ সময় রীতিমতো কেনার হিড়িক পড়ে যায়। পাড়ার ছোট ছোট শপিংমল থেকে শুরু করে অভিজাত বিপণিবিতান সবখানেই নামে মানুষের ঢল। মানুষের এই আগ্রহ এবং আস্থার প্রতিদান দিতেই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোও রুচি, চাহিদা এবং সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করে নিয়ে আসে নতুন নতুন পোশাক। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস, বুটিক শপের ডিজাইনাররা মানুষের চাহিদা এবং আগ্রহের কথা বিবেচনা করে নিত্যনতুন ডিজাইন তৈরিতে মনোযোগী হয়। রোজার ঈদকে সামনে রেখে মেলাগুলো তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছে। এবার ঈদে প্রাধান্য পাচ্ছে বর্ষকাল। বৃষ্টিভেজা সময় এবং গরম এই দুই মিলিয়ে সিলেক্ট করা হয়েছে কাপড়। এ প্রসঙ্গে বেইলি রোড ঈদ জামদানি মেলার উদ্যোক্তা মোঃ আমিন জানান গরমকে প্রাধান্য দিয়ে এবারের মেলায় কাপড় এবং ডিজাইন সিলেক্ট করা হয়েছে। শাড়ির মধ্যে রয়েছে জামদানি, মসলিন এবং সিল্ক। ডিজাইনেও রয়েছে বেশ ভেরিয়েশন। কারচুপি, হাতের কাজ ছাড়াও নকশী ডিজাইনের বেশকিছু শাড়ি রয়েছে। বাংলাদেশ উইভার্স এ্যান্ড মেন্যুফেকচার বিজনেস এ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ মেলা পরিচালিত হচ্ছে। মোট স্টল রয়েছে ৮৫টি। এর মধ্যে শুধু জামদানি শাড়ি কেন্দ্র করে স্টল রয়েছে ১৮টি। আর নারী উদ্যোক্তাদের স্টল রয়েছে ১৫টি। মেলা প্রসঙ্গে আরেক উদ্যোক্তা ওসমান গনি বলেন, ঈদ উৎসবকে আরও বেশি গতিশীল করতেই মেলার উৎপত্তি। ক্রেতারা মেলায় এলে শপিংমলের চেয়েও ভিন্ন কিছু টেস্ট পাবেন। যেমন এ মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পোশাক-আশাক এবং তৈজসপত্র ছাড়াও বিভিন্ন কুটির শিল্পের দেখা পাবেন। যা সহজেই ক্রেতাকে আকৃষ্ট করবে। আশা করি মেলার আয়োজন ক্রেতাদের ভাল লাগবে। ঈদকে উপলক্ষ করে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে চলছে ঈদমেলা। যার প্রয়োজনীয়তা এবং কদর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফ্যাশন হাউসগুলোর ভেতরে রীতিমতো প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। কোন হাউস কত ভাল ডিজাইনের পাঞ্জাবি তৈরি করবে এবং ডিজাইনভেদে পাঞ্জাবির মূল্য একেক রকম। বড়দের পাশাপাশি বাচ্চাদের পাঞ্জাবিও পাওয়া যায়। পাঞ্জাবি-পায়জামা সেট ৫৫০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। আর বড়দের পাঞ্জাবি পড়বে ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। পাঞ্জাবির সঙ্গে আর যে পোশাকটির কথা মনে আসে, তা তরুণীদের শাড়ি। যে কারণে ফ্যাশন হাউসগুলো নারীদের অন্যান্য পোশাকের পাশাপাশি শাড়িকে গুরুত্ব দেয় বেশি। বিভিন্ন মোটিফ ডিজাইনের শাড়ি ইতোমধ্যে শোরুমগুলোতে শোভা পাচ্ছে। শাড়ির কাপড় এবং ডিজাইনের রকমফেরও প্রচুর। টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি, হাফ সিল্ক, সুতির মধ্যে কোটা শাড়ি, সুতির শাড়ি এ্যাগ্রি কটন, রাজশাহী সিল্ক, বলাকা সিøক এমনকি মসলিন শাড়িও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। সুতির শাড়ি পাওয়া যাবেÑ ৬০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে। সিফন জর্জেট পাথর বসানো শাড়ির মূল্য পড়বে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৬ হাজার টাকা। টিস্যু কাপড়ের ডিজাইনের শাড়ির মূল্য ১ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। মসলিন ৩ হাজার ২০০ থেকে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। তাঁত ৩৫০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা। জামদানি ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। ঈদের কেনাকাটার আগে অবশ্য আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখা প্রয়োজন। আর শিশুদের পোশাক নির্বাচনের বেলায় এ বিষয়টি তো আরও জরুরী। মডেল : সেলিম ও নীহারিকা পোশাক : মেনস ক্লাব
×