ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোপার শেষ আটে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৩ জুন ২০১৬

কোপার শেষ আটে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করে রেখেছিল আগেই। তাই ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে কোস্টারিকার কাছে ৩-২ গোলে হেরেও পরের রাউন্ডে জায়গা করে নিয়েছে কলম্বিয়া। আর ‘এ’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্র ১-০ গোলে হারিয়েছে প্যারাগুয়েকে। তাতেই কলম্বিয়ার সঙ্গে কোপা আমেরিকার শেষ আট নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথমার্ধে তারকা স্ট্রাইকার ক্লিন্ট ডিম্পসের একমাত্র গোলে জয় নিশ্চিত হয় স্বাগতিক দল যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপের অন্য ম্যাচে কলম্বিয়ার পরাজয়ে শীর্ষ দল হিসেবেই কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় জার্গেন ক্লিন্সম্যানের দল। শেষ আটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ দল। ওই গ্রুপে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ব্রাজিলেরই শীর্ষে থাকা প্রায় নিশ্চিত। এর ফলে দ্বিতীয় দল হিসেবে পেরু কিংবা ইকুয়েডরের মধ্যে লড়াই হবে যুক্তরাষ্ট্রের। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের ২৭ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ক্লিন্ট ডিম্পসে। তবের যুক্তরাষ্ট্রের জয়ের নায়ক হলেও মূলত মার্কিনীদের কঠিন রক্ষণভাগের সামনে প্যারাগুয়ে ছিল অসহায়। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর এক মিনিটেই পরপর দুটি হলুদ কার্ড পেয়ে ডিফেন্ডার ডিআন্দ্রে ইয়েডলিন মাঠ ত্যাগ করলে যুক্তরাষ্ট্র ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার পরে পুরোপুরি ডিফেন্সিভ কৌশল অবলম্বন করে। তাতে সফলও হয় ক্লিন্সম্যানের শিষ্যরা। ইয়েডলিন মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে প্যারাগুয়ে লম্বা সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধে বল নিয়ন্ত্রণে রাখলেও কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায়নি। ম্যাচ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের কোচ ক্লিন্সম্যান শিষ্যদের পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দলের পারফর্মেন্স ছিল অসাধারণ। যেভাবে তারা প্রতিপক্ষকে ধরে রেখেছিল, যে ধরনে শৃঙ্খলা তারা মাঠে দেখিয়েছে, একে অপরকে সহযোগিতা করেছে তা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসার যোগ্য। এই দলের মধ্যে দুর্দান্ত স্পৃহা রয়েছে, আমি সত্যিই তাদের নিয়ে গর্বিত।’ ইয়েডলিন লাল কার্ড পাওয়ায় দলের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু তারপরও ক্লিন্সম্যান ২২ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডারের সমালোচনা করেননি। তিনি বলেন, কিছু সময়ের জন্য ইয়েডলিন তার ক্ষোভ ধরে রাখতে পারেনি। তবে আমি নিশ্চিত এই ভুল থেকে সে শিক্ষাগ্রহণ করবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যেতে হলো প্যারাগুয়েকে। এই পরাজয়ের ফলে ২০০১ সালের পর আরেকবার কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্বের বাধা পেরুতে ব্যর্থ হলো প্যারাগুয়ে। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের এই জয়ের পর সবাই দৃষ্টি ছিল হিউস্টোনে কলম্বিয়া বনাম কোস্টারিকার ম্যাচে। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রকে হারানো কলম্বিয়া এই ম্যাচে ড্র করতে পারলেই ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করতে পারত। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে জয়ী দলটি থেকে ১০ জন পরিবর্তন করে মূল একাদশ সাজান কলম্বিয়ার কোচ হোসে পেকারম্যান। আর কোপার নিয়মরক্ষার এই ম্যাচে ব্যাপক পরিবর্তনই কাল হলো তাদের। অন্যদিকে আগের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর কোস্টারিকার মধ্যে ফিরে আসার দৃঢ় প্রত্যয় ছিল। যে কারণে ম্যাচ শুরুর পর থেকেই কোস্টারিকানরা কলম্বিয়াকে চেপে ধরে। তার ফলও পেয়ে যায় তারা। ম্যাচ শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই দুর্দান্ত এক গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ইয়োহান ভেনেগাস। তার অসাধারণ কার্লিং শটের গোলটি এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা গোলের তকমা লেগে গেছে। তবে কোস্টারিকার এই গোলোৎসব অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সাত মিনিটে ফ্র্যাঙ্ক ফাবরা কলম্বিয়ার পক্ষে সমতা ফেরান। কিন্তু ৩৪ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় কোস্টারিকা। এবার অবশ্য ভেনেগাসের ক্রস ফাবরার পায়ে লেগে জালে জড়ালে আত্মঘাতী গোলের লজ্জায় ডুবে কলম্বিয়া। ৫৮ মিনিটে সেলসো বোরগেসের গোলে কোস্টারিকানরা জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ৭৩ মিনিটে হুয়ান কুয়াড্রাডোর সহায়তায় মারলস মোরেনো দলের পক্ষে গোল পরিশোধ করলেও তা ম্যাচশেষে কলম্বিয়ানদের পরাজয় এড়াতে পারেনি। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলে হোসে পেকারম্যানের দল। সেই টুর্নামেন্টে অসাধারণ পারফর্ম উপহার দেন কলম্বিয়ার জেমস রড্রিগুয়েজ। সেই সঙ্গে স্বপ্নের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেই জায়গা করে নেয় তারা। পারফর্মেন্সের সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেই কোপার মঞ্চে আলো ছড়ায় কলম্বিয়া। এক ম্যাচ আগেই শেষ আটের টিকেট নিশ্চিত করে তারা। তবে শেষ ম্যাচে হারায় কলম্বিয়া যে বড় একটা ধাক্কা খেল তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
×