ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিড়ি-সিগারেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মন্ত্রীদের দেখা করা উচিত নয় ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৩ জুন ২০১৬

বিড়ি-সিগারেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মন্ত্রীদের দেখা করা  উচিত নয় ॥ তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধূমপানকে নিরুৎসাহিত করার জন্য তামাক ও তামাকপণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক ও কর আরোপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তথ্যমন্ত্রী বলেন, তামাকমুক্ত দেশ গড়তে চাইলে এ পণ্যের ওপর উচ্চহারে কর ধার্য করতে হবে। এমনকি বিড়ি ও সিগারেট ব্যবসায়ীদের কথা শোনা ও তাদের সঙ্গে মন্ত্রীদের দেখা করাও উচিত নয়। তামাকজাত পণ্যে নিয়ে উকালতি করার কোন জায়গা নেই। রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভ (আরডিসি) আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০১৬-১৭: বিড়ি শ্রমিক ও বিড়ি শিল্প’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, তামাকের ওপর দিন দিন শুল্ক বাড়ছে। ধূমপান নিরুৎসাহিত করার জন্য তামাক ও তামাকপণ্যের ওপর আরও উচ্চহারে শুল্ক ও কর আরোপ করা উচিত। তবে এও মনে রাখতে হবে বিড়ি শ্রমিকরা যে পরিবেশে কাজ করে তা কাজের উপযোগী নয়, ফলে তার আধুনিকায়ন অতি জরুরী। সেই সঙ্গে বিড়ি শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারের বড় পরিকল্পনা হাতে নেয়া উচিত। এমনকি তাদের জন্য থোক বরাদ্দসহ শ্রমিকরা যাতে ন্যূনতম মজুরি পায় সে লক্ষ্যে সরকারকে বিশেষ মনোযোগী হতে হবে। ধূমপান মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য সম্পূরক রাজস্বনীতি গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভ এর চেয়ারপার্সন প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, আমরা সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের বিরোধী কেননা সেটা স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কিন্তু সরকারের রাজস্বনীতি চর্বণযোগ্য তামাক এবং সকল ধরনের ধূমপান উপকরণের ব্যাপারে অভিন্ন নীতি অনুসরণ করছে না। তাই আমরা এই নীতিরও বিরোধী। অধিক কর আরোপের ফলে অনেক বিড়ি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি সরকারকে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহ্বান জানান। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. মুহাম্মদ আব্দুস সবুর বলেন, বাজেটে বিড়ির প্রতি যে বৈষম্যমূলক কর আরোপ করা হয়েছে তা স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান পরিপন্থী। এতে করে বিড়ি শ্রমিকরা যে অসাম্যের শিকার হচ্ছেন তা মুক্তিযুদ্ধের সময় শ্রমিকের প্রতি যে অঙ্গীকার তারও বিরোধী। বিড়ি-শিল্পে বৈষম্যমূলক কর বৃদ্ধির বিরোধিতা করে বিড়ি-শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এম কে বাঙালী বলেন, বৈষম্যমূলক কর বিড়ি শ্রমিকদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তাই শ্রমিকদের পুনর্বাসন করতে হবে। সংগঠনের সভপতি প্রণব দেবনাথ বলেন, তামাকপণ্য থেকে সরকার প্রচুর কর আদায় করলেও বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানি এক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পেয়ে আসছে। এমনকি সিগারেটের তুলনায় বিড়িতে কর বেশি। তাই বিড়ি শিল্পের ওপর কর কমানো উচিত। মিজ জান্নাত-এ-ফেরদৌসীর সঞ্চালনা ও ডা. ওয়াজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কাজী মো. আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, আহসানুল হক নওয়াব প্রমুখ।
×