ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেটে একটি দাবিও মানা হয়নি ॥ রিহ্যাব

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১৩ জুন ২০১৬

বাজেটে একটি দাবিও মানা  হয়নি ॥ রিহ্যাব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে রিহ্যাবের একটি দাবিও মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। রবিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে রিহ্যাবের মতামত : প্রস্তাবিত বাজেট ২০১৬-১৬’ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন এ অভিযোগ করেন। আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় ১৩টি প্রস্তাব দিয়েছিলাম যার একটিও আমলে নেয়নি। এজন্য আগামীতে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ করব কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। সুদে হাউজিং লোনের জন্য যে কোন পরিমাণের একটি তহবিল গঠন, রেজিস্ট্রেশন ব্যয় হ্রাস এবং আয়কর কমানোসহ বেশকিছু প্রস্তাব দেয়া হয়। যার একটিরও প্রতিফলন ঘটেনি। সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের দাবিগুলো পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলাম সরকারের পক্ষ থেকে একটি তহবিল গঠনের ওপর। এছাড়া মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জন্য আবাসন সমস্যা নিরসনে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা, আবাসন খাতে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আমরা ‘হাউজিং লোন’ নামে একটি রিফিন্যান্সিং তহবিল গঠনের দাবিও করেছিলাম, যা পূরণ হয়নি। আলমগীর সামসুল আলম বলেন, ঢাকার আশপাশে ১২৫০ বর্গফুট বা তার থেকে ছোট ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৭ থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হলেও আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াবে। এই দাবিও মানা হয়নি। রেজিস্ট্রেশনকে জাতীয় রাজস্ব আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত উল্লেখ করে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশনের হার ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ হওয়ার কারণে জমি বেচাকেনা কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ। সেই লক্ষ্যে রেজিস্ট্রেশন খরচ ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু আমাদের দাবি বিবেচনা করা হয়নি। এই বাজেট ঘোষণায় আবাসন খাতে প্রস্তাবিত আয়করের পরিমাণ পরিবর্তনের ফলে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের মৌলিক অধিকার বাসস্থানের ব্যয় বেড়ে যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছে রিহ্যাব। আবাসন শিল্পের বর্তমান সঙ্কট উত্তরণের বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরে সংগঠনটি। এগুলো হচ্ছেÑ আবাসন শিল্পের ক্রান্তিকাল উত্তরণের জন্য স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা নিতে দ্রুত একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হোক এবং স্টিম্যুলাস প্যাকেজ দেয়া হোক। শহর এলাকায় ৫ বছরের জন্য ‘ট্যাক্স হলিডে’ এবং শহরের বাইরে ১০ বছরের জন্য ‘ট্যাক্স হলিডে’ প্রচলন করা। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্বল্প আয়ের ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জনসাধারণের জন্য যে কোন পরিমাণ টাকার তহবিল গঠনপূর্বক দীর্ঘমেয়াদী ‘সিঙ্গেল ডিজিট সুদে রি-ফাইন্যান্সিং পুনঃপ্রচলন’ করা। আবাসন শিল্পে অন্যান্য দেশের মতো শিল্প ঋণসহ শিল্প সুবিধার প্রচলন করা। রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ৪ শতাংশ করে কমানো ও অপ্রদর্শিত অর্থ সৃষ্টি প্রবণতা কমানো। সেকেন্ডারি মার্কেটের রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ১ ও ২ শতাংশ করে মানি ফ্লো বাড়ানো। নগদ ও খুচরা পণ্য ক্রয়ে ভ্যাট ও উৎসে কর বন্ধ করা। নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে ইউটিলিটি বিলসমূহ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেটে নির্ধারণ করা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাব সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরন্নবী চৌধুরী শাওন, সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভুইয়া, আহকাম উল্লাহ, প্রকৌশলী সরদার মোহাম্মদ আমিন, প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রমুখ।
×