ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনীতিকদের সম্মানে খালেদার ইফতার, আমন্ত্রিতরা আসন না পাওয়ায় হট্টগোল

প্রকাশিত: ০৭:৫৪, ১২ জুন ২০১৬

রাজনীতিকদের সম্মানে খালেদার ইফতার, আমন্ত্রিতরা আসন না পাওয়ায় হট্টগোল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পঞ্চম রোজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে রাজনীতিকদের সম্মানে তিনি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। ইফতার মাহফিলে আমন্ত্রণ পেলেও আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা দলের কোন নেতা অংশ নেননি। তবে এ ইফতার মাহফিলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অবশ্য এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এদিকে, ইফতার মাহফিলের আমন্ত্রিত অনেক অতিথি কনভেনশন সেন্টারে প্রবশের পর বসার সুযোগ না পেয়ে হৈ-হট্টগোল শুরু করেন। এ নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে একপর্যায়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে স্টেজে চলে যান। ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব) অলি আহমদ, জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) মুহাম্মদ ইব্রাহিম, বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, পিপলস লীগের সভাপতি গরীবে নেওয়াজ, ডেমোক্র্যাটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈফুদ্দিন আহমেদ মণি, মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান এএইচএম কামরুজ্জামান খান, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি মুফতি মুহম্মদ ওয়াক্কাস, এলডিপির মহাসচিব মহাসচিব ড. রেদওয়ান আহমেদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবুর রহমান প্রমুখ। খালেদা জিয়ার ইফতার মাহফিলে বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, দলের সিনিয়র নেতা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, মেজর (অব) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, ডাঃ জাহিদ হোসেন, এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্মমহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ প্রমুখ। বসুন্ধরা কনভেনশনের নবরাত্রি হলে আসন সংখ্যা ১ হাজার ৬০০। আর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয় ২ হাজার ৩০০ জনকে। ফলে ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় তিনগুণ লোকের উপস্থিতিতে ভেতরে বসার আসন না পাওয়ায় সেখানে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। দাওয়াত কার্ড হাতে নিয়েও টেবিলে টেবিলে ঘুরেও কোন আসন না পাওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন আমন্ত্রিত অতিথি ও দলের নেতাকর্মীরা। অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের ওপর ক্ষিপ্ত হতে দেখা যায়। খালেদা জিয়ার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ইফতার মাহফিলে গিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা। তাকে পাশে নিয়ে টেবিলে বসেন খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। হঠাৎ বিদিশার আগমনে সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে বিদিশার উপস্থিতির কারণে তাৎক্ষণিকভাবেই অনেক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মন্তব্য করতে দেখা যায়। এর আগে কনভেনশন সেন্টারের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে অনেক নেতাকর্মীর সঙ্গে খারাপ আচরণও করা হয়। আমন্ত্রণ কার্ড দেখানোর পরও কোন কোন অতিথিকে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি করে ভেতরে প্রবেশের সময় চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে তারা বলতে থাকেন, ‘ইফতার মাহফিলে এসেছি নাকি সিনেমা হলে এসেছি।’
×