ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সামরিক ভূমিকা সম্প্রসারণ

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ১২ জুন ২০১৬

সামরিক ভূমিকা সম্প্রসারণ

আফগানিস্তানে সামরিক ভূমিকা সম্প্রসারিত করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইতোপূর্বে তালেবানের বিরুদ্ধে ১৫ বছর ধরে চলমান যুদ্ধ গুটিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেও ওয়াশিংটন সে প্রতিশ্রতি থেকে সরে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর এএফপি ও আলজাজিরা অনলাইনের। ওবামার প্রেস সচিব জশ আর্নেস্ট শুক্রবার বলেন, আফগানিস্তানে সামরিক দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে চায়। ২০১৪ সালে কম্ব্যাট সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেয়ার পর দেশটিতে এখন অল্পসংখ্যক সৈন্য রয়েছে। তাদের প্রধান কাজ আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় উপদেশ দেয়া। কিন্তু পেন্টাগন সামরিক ভূমিকাকে আরও সম্প্রসারিত করতে চাইছে। আর্নেস্ট বলেছেন, আফগান বাহিনীর প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি মার্কিন বাহিনী প্রয়োজনে যে কোন সামরিক অভিযানে অংশ নিতে প্রস্তুত আছে। তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আফগান বাহিনী ঠিক পেরে উঠতে পারছে না। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী কাবুলসহ তালেবান দেশের বিভিন্ন স্থানে বহু হামলা চালিয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে ওবামা তার সেনাবাহিনীকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। আর্নেস্ট বলেছেন, মার্কিন সৈন্যরা আফগানিস্তানে আগ বাড়িয়ে সামরিক পদক্ষেপ নেবে না। বরং আফগান বাহিনীর সঙ্গে থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। আফগান যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ওবামা ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসেন। আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘতম এ যুদ্ধ শেষ করা ছিল ওবামা প্রশাসনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধ শুরু করে। আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক জোট আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র বিন লাদেনকে ৯/১১ হামলার নেপথ্যের হোতা বলে বিবেচনা করে থাকে। এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত দুই হাজারের মতো মার্কিন সৈন্য নিহত হয়েছে। সৈন্যদের একটি বড় অংশ প্রত্যাহার করার পর গত বছর আফগান বাহিনী পুরো দেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিলেও তালেবানকে বাগে আনতে পারেনি। তালেবান এখনও দেশের যে কোন স্থানে বড় ধরনের হামলা করতে সক্ষম। ২০১১ সালের মার্চে আফগানিস্তানে এক লাখের মতো মার্কিন সৈন্য ছিল। সেটি এখন ৯ হাজার ৮শ’-তে কামিয়ে আনা হয়েছে। এ সৈন্যদের একটি বড় অংশের কাজ আফগান মন্ত্রণালয়গুলো পাহারা দেয়া। সামান্যসংখ্যক যুদ্ধক্ষেত্রে আফগান বিশেষ বাহিনীকে সহায়তা দিয়ে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে কেবল বিশেষ বাহিনী নয় বরং সকল আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে অভিযানে মার্কিন সৈন্যরা থাকবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এ সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫শ’-তে নামিয়ে আনার কথা থাকলেও সেটি করা হচ্ছে না। সাম্প্রতিক একাধিক হামলা প্রমাণ কওে, তালেবানের লড়াই করার ক্ষমতা শেষ হয়ে যায়নি। এসব হামলায় গত এক বছরেই পাঁচ হাজারের বেশি আফগান সৈন্য প্রাণ হারিয়েছে, যে কারণে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ওবামা বাকি সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন না। আফগান যুদ্ধের ধারাবাহিকতা পরবর্তী মার্কিন প্রেসেিডন্টকেও বহন করতে হবে। গত মাসে মার্কিন ড্রোন হামলায় আফগান তালেবানপ্রধান মোল্লা আখতার মনসুর পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে নিহত হন। ওবামা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, তালেবানের নতুন নেতাও আগের মতো যুদ্ধংদেহী তৎপরতা চালিয়ে যাবেন।
×