ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শাহজালালে বিপুল ভারতীয় মুদ্রা উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১১ জুন ২০১৬

শাহজালালে বিপুল ভারতীয় মুদ্রা উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগাম তথ্য নিয়েই শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা আবুল বাশারের কাছে জানতে চায়, কোন কারেন্সি সঙ্গে আছে কিনা। বাশার দিব্যি জানিয়ে দেন, থাকার প্রশ্নই ওঠে না। তারপরই বেল্টে গিয়ে তার লাগেজ থেকে বের করে আনা হয় বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মুদ্রা। শুক্রবার সকাল নয়টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আটক করা হয় এসব মুদ্রাসহ। শুল্ক গোয়েন্দার নজরদারিতে যে তিনি অনেক আগে থেকেই ছিলেন তা অজানা ছিল বাশারের। এমনকি গত পাঁচ দিন আগে তিনি যে পাকিস্তান গেছেন সে তথ্যও রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। ৩০ কেজি ওজনের ব্যাগ নিয়ে এসেছেন বাশার। শুল্ক গোয়েন্দারা বাশারকে বেল্টে নিয়ে তাকে দিয়েই বের করে আনলেন সেই কাক্সিক্ষত ব্যাগ। কিন্তু বাশার স্বীকার করছিলেন না কারেন্সি (মুদ্রা) কোথায় রয়েছে। ব্যাগে কী কী আছে? বাশারকে এক গোয়েন্দার প্রশ্ন। সরল ভাষায় বাশারের উত্তর, ‘বালিশ, তোষক আর দুই সেট ক্রোকারিজ স্যার।’ তাহলে কারেন্সি? আবার প্রশ্ন। বাশার এবার কড়া ভাষায়Ñ ‘বিশ্বাস না হলে খুলে দেখুন স্যার।’ একঝাঁক গোয়েন্দার সামনে ব্যাগ থেকে একে একে বের করা হলো সবকিছু। বাশারের কথাই ঠিক! কারেন্সি কই?। কিন্তু পরে তোষক, বালিশ কাটা হলে ভেতর থেকে তুলার পরিবর্তে বের হতে থাকল কাড়ি কাড়ি নোট। গোয়েন্দাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভারতীয় রুপী মিলল। মোট এক কোটি ৩০ লাখ ভারতীয় রুপী সঙ্গে এনেছিলেন ফেনী জেলার বাসিন্দা এই ধূর্ত পাচারকারী আবুল বাশার (৪০)। বাশার ও তার রিসিভকারী সোবহানকে আটকের কাহিনী সাংবাদিকদের সামনে বর্ণনা করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের করাচী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। করাচী থেকে প্রথমে জি৯৫৪০ ফ্লাইট যোগে শারজাহ। শারজাহ থেকে শুক্রবার (১০ জুন) সকাল নয়টায় এয়ার এ্যারাবিয়ার জি৯৫১৭ ফ্লাইটযোগে শাহজালালে। পাসপোর্ট অনুযায়ী আবুল বাশার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। রুপী তো পাওয়া গেল, কিন্তু রিসিভ করবে কে, কাকে দেয়া হবে, কোথায় পৌঁছানো হবেÑ ভয় দেখিয়ে বাশারকে গোয়েন্দাদের প্রশ্ন। বাশার বুঝলেন, বাঁচার রাস্তা নেই। শেষে বাশারের স্বীকারোক্তি। স্যার, ‘বিমানবন্দরের গাড়ি পার্কিং এলাকায় একজন অপেক্ষা করবে, আমি ব্যাগ তাকে পৌঁছে দেব। তাকে ধরতে এবার বাশারকে দিয়েই ফাঁদ পাতলো শুল্ক গোয়েন্দারা। বাশারকে একটি লাগেজ দিয়ে যাত্রীর বেশে পাঠানো হলো পার্কিংয়ে। পেছনে ছদ্মবেশে শুল্ক গোয়েন্দা। পার্কিং এলাকায় গিয়ে গোয়েন্দারা হতবাক। সাদা রঙের টয়োটা (ঢাকা মেট্রো-গ-৩১-৮৩৮৫) নিয়ে এক ভদ্রলোক দাঁড়ানো। বাশার ব্যাগ এগিয়ে দিতেই রিসিভ করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়লেন ভদ্রবেশী মুদ্রা পাচারকারী আবদুস সোবহান (৫৮)। তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে। দুইজনকে আটকের পর চলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আটক মুদ্রাগুলো জাল। ঈদকে সামনে রেখে কোন অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করতে আনা হয়েছিল মুদ্রাগুলো।
×