ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা ঘোমটা খুলে নেমেছেন ॥ নাসিম

গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে ১৯ জুন ১৪ দলের মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১১ জুন ২০১৬

গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে ১৯ জুন ১৪ দলের মানববন্ধন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশে চলমান গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে আগামী ১৯ জুন বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দেশব্যাপী এক ঘণ্টা মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। এছাড়া ঈদ-উল-ফিতরের পর সারাদেশের গ্রামে-গঞ্জে ১৪ দলের সমন্বয়ে গঠিত একাধিক টিম বিরামহীনভাবে এসব হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করবে। শুক্রবার বিকেলে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক শেষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এই কর্মসূচী ঘোষণা করে বলেন, দেশে চলমান গুপ্তহত্যায় জড়িতদের রক্ষার্থে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ঘোমটা খুলে নেমেছেন। অত্যন্ত কাপুরুষোতিভাবে এসব গুপ্তহত্যাগুলো ঘটানো হচ্ছে। অশুভ লক্ষ্য অর্জনের জন্যই এ ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৪ জুন ঝিনাইদহে নিহত পুরোহিতের বাসায় যাবেন ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়া বৈঠকের পর ১৪ দলের নেতারা চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত মাহমুদা খানম মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের প্রতি সমবেদনা জানাতে তার খিলগাঁওয়ের বাসার যান। সেখানে গিয়ে ১৪ দলের নেতারা পুলিশ অফিসারকে সান্ত¡না ও সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি খুনী যে-ই হোক তাকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে ১৪ দলের নেতারা দৃঢ় মনোভাব ব্যক্ত করেন। বৈঠক সূত্র জানায়, ১৪ দলের বৈঠকে সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যাসহ জঙ্গী হামলার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান এবং খুনীদের গ্রেফতারে ব্যর্থতায় প্রশাসনসহ পুলিশ বাহিনীর কঠোর সমালোচনা করেন শরিক দলের কয়েক নেতা। জঙ্গীবাদ দমনে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান জোরদারের আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, জঙ্গীরা এখন শহরকেন্দ্রিক না হয়ে গ্রামকেন্দ্রিক হত্যাকা- ও হামলা শুরু করেছে। প্রশাসন ও জনগণকে একসঙ্গে মিলে এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। বৈঠকে গুপ্তহত্যা নিয়ে খালেদা জিয়ার মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তারা বলেন, এর মাধ্যমে তিনি জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসকে উস্কে দিচ্ছেন। ১৪ দলকে সারাদেশে বিস্তৃত করে এর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে শেখ হাসিনা যখন গুরুত্ব পাচ্ছেন; সৌদি আরবের বিষয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল, সে সৌদি আরবও শেখ হাসিনাকে যে মর্যাদা দিয়েছে, তাতে প্রমাণিত হয়েছে যে, শেখ হাসিনা সরকার নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে। আর দেশ যখন উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির দিকে এগোচ্ছে, শান্তির দ্বীপে পরিণত হতে যাচ্ছে, ঠিক তখনই সুপরিকল্পিতভাবে একের পর এক হত্যাকা- ঘটানো হচ্ছে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা নাকি হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত! এর মাধ্যমে তিনি খুনীদের প্রকাশ্যে প্রটেকশন (নিরাপত্তা) দিচ্ছেন। তবে বিএনপি নেত্রীর এ চরিত্র নতুন নয়। এর আগে তিনি এবং তাঁর স্বামী যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে সব কিছু করেছিলেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নগ্নভাবে, ঘোমটা খুলে নেমেছেন খুনীদের রক্ষা করতে। যারা মারা গেছেন, তাদের পরিবারকে সমবেদনা না জানিয়ে খুনীদের তিনি প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এর নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। তিনি বলেন, যারা ভাবছেন এসব ঘটনার পর আমরা আপোস করব, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কারণ শেখ হাসিনা আপোস করেন না। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন চিরুনি অভিযানে নাকি তাদের কর্মীদের ধরপাকড় করা হবে। কিন্তু বিএনপি তাদের প্রশ্রয় না দিলে তাদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে বৈঠকে মোহাম্মদ নাসিম ছাড়াও ১৪ দল নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর কবির নানক, মুকুল বোস, আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবদুস সোবহান গোলাপ, সুজিত রায় নন্দী, জাতীয় পার্টি-জেপির শেখ শহীদুল ইসলাম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদুল ইসলাম খান, জাসদের (ইনু) হাবিবুর রহমান শওকত, জাসদের (আম্বিয়া) নাজমুল হক প্রধান, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাৎ হোসেন, ন্যাপের এ্যাডভোকেট এনামুল হক, ইসমাইল হোসেন, গণআজাদী লীগের এস কে সিকদার, বাসদের রেজাউর রশীদ খান, তরিকত ফেডারেশনের এমএ আউয়াল, সাম্যবাদী দলের বীরেন সাহা প্রমুখ।
×