ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রিমিয়ার ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ে সার্বিকভাবে শীর্ষে থাকা শামসুরের দল গাজী এবং দেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে বোলিংয়ে শীর্ষে থাকা মাশরাফির দল কলাবাগান কেসি ওঠেনি সুপার লীগে

বোলিংয়ে মাশরাফি ব্যাটিংয়ে শামসুর শীর্ষে

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ১১ জুন ২০১৬

বোলিংয়ে মাশরাফি ব্যাটিংয়ে শামসুর শীর্ষে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের প্রাথমিক পর্ব শেষ। ১২ দল নিয়ে লীগ শুরু হলেও এখন সেখান থেকে সেরা ৬ দল পরবর্তী রাউন্ড খেলবে। সুপার লীগের প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়েই নিশ্চিত হবে চ্যাম্পিয়নশিপ। তবে সুপার লীগের এই মর্যাদার লড়াইয়ে থাকতে পারছেন না দেশ সেরা অনেক তারকা ক্রিকেটারই। এর মধ্যে প্রিমিয়ার লীগে এখন পর্যন্ত দুই সেরা পারফর্মারই থাকছেন না সুপার লীগে। ব্যাটিংয়ে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান শামসুর রহমান শুভ এবং দেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে বোলিংয়ে শীর্ষে থাকা কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার আপাতত প্রিমিয়ার লীগ শেষ হয়ে গেছে। দু’জনের দলই সুপার লীগে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে বোলিং নৈপুণ্যে এক নম্বরে আছেন শীর্ষস্থান নিয়ে সুপার লীগে পা রাখা ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের শ্রীলঙ্কান বাঁহাতি স্পিনার চতুরঙ্গ ডি সিলভা। ব্যাটিং-বোলিং নৈপুণ্যে বেশ কয়েকজন কাছাকাছি আছেন। তাদের দলগুলো সুপার লীগেও খেলবে। সে কারণে শামসুর এবং মাশরাফি দু’জনই শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারবেন না সেটা প্রায় নিশ্চিত। চতুরঙ্গ ১১ ম্যাচে ২৩ উইকেট নিয়েছেন। ২২ উইকেট নিয়ে দুই নম্বরে মাশরাফি। ভিক্টোরিয়ার পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বীরও ২২ উইকেট। বোলিং গড়ের কারণে এক ধাপ পিছিয়ে তিনে আছেন রাব্বী। তবে একটি উইকেট পেলেই তিনি মাশরাফিকে ছাড়িয়ে যাবেন। তাই শীর্ষস্থান হারাবেন মাশরাফি এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ দারুণ ফর্মে থাকা রাব্বী সুপার লীগেও ঝড় তুলবেন সেটাই স্বাভাবিক। তার যুদ্ধটা মূলত সতীর্থ চতুরঙ্গের সঙ্গেই। কারণ চার নম্বরে থাকা শেখ জামাল ধানম-ির অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও সুপার লীগে খেলতে পারছেন না। তিনি ২১ উইকেট নিয়েছেন। ২০ উইকেট নিয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের নাঈম ইসলাম পাঁচে এবং ১৭ উইকেট নিয়ে আটে থাকা আবাহনী লিমিটেডের তাসকিন আহমেদের সঙ্গেই লড়াই হবে রাব্বীর। অবশ্য প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের আলআমিন হোসেন (১৬ উইকেট) ও মোহামেডানের দুই পেসার হাবিবুর রহমান (১৫ উইকেট) ও শুভাশিষ রায় (১৫ উইকেট) তারাও দারুণ কিছু করতে পারলে উঠে আসতে পারেন শীর্ষস্থানে। তবে বোলিং নৈপুণ্যে সত্যিই বিস্ময়কর নৈপুণ্য দেখিয়েছেন কলাবাগান কেসি অধিনায়ক মাশরাফি। একক নৈপুণ্যে একাধিক ম্যাচ জিতিয়েছেন তিনি দলকে। ব্যাট হাতেও জ্বলে উঠেছেন। আবার বল হাতেও পুরো লীগেই প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে ছিলেন। সেটা তার নৈপুণ্য দেখেই নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ থেমে গেছে! চলতি লীগে আর মাঠে দেখা যাবে না তাকে। কারণ কলাবাগান কেসি সুপার লীগে উঠতে পারেনি প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে নেট রানরেট এবং হেড-টু-হেড উভয় বিবেচনায় পিছিয়ে থাকার কারণে। উভয় দলের পয়েন্ট ছিল সমান ১২! তাই মাশরাফি ম্যাজিক থাকছে না আর। এছাড়া জাতীয় দলের বোলারদের মধ্যে পেসার রুবেল হোসেন আছেন ২৪ নম্বরে। ১০ ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ২৬.৩৮ গড় ও ৪.৩৮ ইকোনমিতে ১৩ উইকেট। টি২০ বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে থাকা তরুণ পেসার আবু হায়দার রনিও ৯ ম্যাচে পেয়েছেন ১৩ উইকেট। এবারের লীগে এক ইনিংস সেরা বোলিং নৈপুণ্য অবশ্য লেগস্পিনার জুবায়ের হোসেনের। জাতীয় দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকা আবাহনীর এ তরুণ স্পিনার লীগের প্রথম ম্যাচেই কলাবাগান কেসির বিপক্ষে ৩৪ রানে শিকার করেছিলেন ৬ উইকেট। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা রাখতে পারেননি। তিনি ৭ ম্যাচ খেলে ১৩ উইকেট নিয়ে আছেন ২২ নম্বরে। আর ব্যাটিংয়ে সার্বিকভাবে শীর্ষে থাকা শামসুরের রান ৫৫৮। দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা এ ওপেনার এবার রানের মধ্যেই ছিলেন। ১ সেঞ্চুরি ও ৪ অর্ধশতকসহ ৫৫.৮০ গড়ে এ রান করে এক নম্বরে তিনি। লীগের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসটিও তিনিই খেলেছেন। ১৩৬ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন আবাহনীর বিপক্ষে বিকেএসপিতে। তবে দারুণ চমক দেখিয়েছেন ভিক্টোরিয়ার ওপেনার আব্দুল মজিদ। টানা দুটি শতক হাঁকিয়ে ব্যাটিং নৈপুণ্যে উঠে এসেছেন দুই নম্বরে। ২ সেঞ্চুরি ও ৩ হাফসেঞ্চুরিসহ তার রান এখন ৪৮.৯০ গড়ে ৫৩৮! শুরু থেকেই শীর্ষে থাকা দোলেশ্বরের ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেন তান্না ৫২৬ রান করে এখন তিনে। বর্তমান জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে ব্যাটিংয়ে শীর্ষে মাহমুদুল্লাহ। সার্বিকভাবে পাঁচে থাকা মাহমুদুল্লাহ ৪৯.৭০ গড়ে ২ সেঞ্চুরিসহ করেছেন ৪৯৭ রান। দুই ধাপ পিছিয়ে সাতে আছেন আবাহনীর ওপেনার তামিম ইকবাল। তিনি ৪৮.১০ গড়ে ৪৮১ রান করেছেন ১ সেঞ্চুরি ও ৪ হাফসেঞ্চুরিসহ। মোহামেডান অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ৫২.৫০ গড়ে ৪২০ রান করে ১১ নম্বরে, মোহাম্মদ মিঠুন ৪৩.৬৬ গড়ে ৩৯৩ রান করে ১৭ নম্বরে (৪ হাফসেঞ্চুরি) এবং নাসির হোসেন ৫৩.১৪ গড়ে ২ হাফসেঞ্চুরিতে ৩৭২ রান করে ২১ নম্বরে ও ২২ নম্বরে থাকা সাব্বির রহমান রুম্মান ৪০.৮৮ গড়ে ১ সেঞ্চুরি ও ২ অর্ধশতকসহ করেছেন ৩৬৮ রান।
×