ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভৈরবে বেহাল সড়ক

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১১ জুন ২০১৬

ভৈরবে বেহাল সড়ক

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভৈরব, ১০ জুন ॥ মেঘনা নদীর ভাঙ্গন থেকে ভৈরব নদীবন্দর ও শহর রক্ষায় নির্মিত জিল্লুর রহমান শহররক্ষা বাঁধ এবং বাঁধ ঘেঁষে তৈরি করা রাস্তাটির বেহালদশায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অতিনিম্নমানের কাজ হওয়ায় রাস্তাটির অধিকাংশ স্থানে খানাখন্দ আর বাঁধের জমি অবৈধ দখলদারদের হয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জনকল্যাণে সরকারের ২১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে গ্রহণ করা প্রকল্পটি ভেস্তে যাবার উপক্রম হয়েছে। অবিলম্বে এসব অব্যবস্থা থেকে মুক্তি চায় এলাকার মানুষ। মেঘনা নদীর ভাঙ্গন থেকে ভৈরব নদীবন্দর ও শহরকে রক্ষা করার লক্ষ্যে এবং নদীবন্দর থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের সাথে মূল শহরকে পাশ কাটিয়ে বিকল্প সড়ক যোগাযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০১০-১১ অর্থবছরে ২১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিল্লুর রহমানের নামে নির্মাণ করে ১৮৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জিল্লুর রহমান ভৈরব শহররক্ষা বাঁধ ও বাঁধ ঘেঁষা ৭০০ মিটার সড়ক। যার নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১২-১৩ অর্থ বছরে এবং ২০১২ সালের ১৬ জুন এ কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ নাজমুল হাসান। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের কাজের ফলে বছর না ঘুরতেই সড়কটির অধিকাংশ স্থানে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে সেটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বাঁধ এলাকাজুড়ে অবৈধ দখলদারদের করাল থাবায় অল্পদিনের ব্যবধানেই গড়ে ওঠে শত শত স্থাপনা। সড়কটির পাশে বেশ কয়েকটি পরিবহন সংস্থা গড়ে ওঠায় এবং ওইসব পরিবহন সংস্থার মাল রাস্তার ওপর লোড-আনলোড করায় ভৈরব লঞ্চ ও কার্গো টার্মিনাল থেকে যাত্রী সাধারণ ও পণ্য বিকল্প পথে পারাপার করে বন্দর শহরটির যানজট নিরসন করার পরিকল্পনাও ভেস্তে যায়। উল্টো জন ভোগান্তি বেড়ে বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। অন্যদিকে রাস্তা ও বাঁধের ওপর কয়েকশ’ লোক প্রতিদিন পুরাতন ড্রাম মেরামতের কাজ করে। তাদের রাখা সারিবদ্ধ হাজার হাজার ড্রাম রাস্তা ও বাঁধের ওপর রাখায় যান চলাচলসহ মানুষের যাতায়াতে অসুবিধার সৃষ্টি করছে । স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তাটির বেহালদশায় বন্দর এলাকায় বহু পূর্ব থেকে গড়ে ওঠা পেঁয়াজ-রসুন ও ধান-চালের আড়তের মাল ঠিকমতো পরিবহন করতে না পারায় তারা দুর্ভোগে পড়েছেন। তাদের আড়তে মাল সহজে পরিবহন করতে না পারায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতারা তাদের কাছ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে এ পথে চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা জানান, রাস্তাটির বেহালদশায় তাদের যানবাহন চালনায় বিঘœ ঘটছে। প্রায়ই অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনায় পড়ছেন তারা। এতে করে যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ তাদের যানবাহন হুমকির মুখে পড়ছে। প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে তাদের যানবাহনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। এতে করে তারা আর্থিক লোকসানের মুখে পড়ায় আয়- রোজগারও কমে যাচ্ছে। সড়কটির নির্মাণকালে অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ হওয়া, অবৈধ দখলদার, ট্রান্সপোর্ট ও ড্রাম ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম ইত্যাদির কথা স্বীকার করে পৌর মেয়র এ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ জানান, এই অনিয়ম ও দৌরাত্ম কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যেহেতু রাস্তাটি রেলওয়ের ভূমিতে। অচিরেই তিনি এ বিষয়ে রেলওয়ের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন।
×