ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সমস্যায় জর্জরিত ৪৮ বছরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ১১ জুন ২০১৬

সমস্যায় জর্জরিত ৪৮ বছরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১০ জুন ॥ ‘একটুখানি বৃষ্টি হলে গড়িয়ে পড়ে পানি’ পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের সেই বিখ্যাত আসমানী কবিতার লাইন মনে করিয়ে দেয় দেশ যখন ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে! শিক্ষাক্ষেত্রে দেশে যখন বৈপ্লবিক পরিবর্তনের হাওয়া বইছে তখন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালে যে কারো মনে হবে এর কোন অভিভাবক নেই। রাজ্জাক হাওলাদার একাডেমি একটি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৯ সালে এলাকার কিছু নীরব মুজিব সেনার চেষ্টায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। বর্তমানে রাজ্জাক হাওলাদার একাডেমিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮শ’। মাদারীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র পুরানবাজার মাছের আড়ৎ সংলগ্ন এলাকায় এটি অবস্থিত। দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও বস্তিবাসীসহ এলাকার হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অথচ জেলার এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আজ বহুমুখী সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। দীর্ঘ অবহেলার শিকার এই বিদ্যালয়ের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বিবেচনায় ১৯৯৮ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর ৩টি শ্রেণীকক্ষ বিশিষ্ট একটি একতলা ভবন নির্মাণ করে দেয়। কিন্তু যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। বর্তমানে ৩টি শ্রেণীকক্ষসহ সেই পুরনো আমলের দুটি টিনের ঘরই বিদ্যালয়ের একমাত্র সম্বল। বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের টিনশেড ঘরটি ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনের ৪টি শ্রেণীকক্ষে ৩শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে পাঠদান করতে হয়। সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে পূর্ব দিকের ঝুঁকিপূর্ণ টিনের ঘরটি ভেঙ্গে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কায় স্কুল ছুটি দিতে বাধ্য হয় শিক্ষকরা। ২ বছর আগে কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের ৯০ফুট দেয়াল বিধ্বস্ত হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন করেও মেরামত করতে পারেননি শিক্ষকরা। ফলে সব সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় নিরাপত্তাহীন অবস্থায়। একাডেমির প্রায় ৮শ’ ছাত্রছাত্রীর জন্য নেই পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ, আসবাবপত্র, চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ, বিজ্ঞানাগার। পাশাপাশি নেই শিক্ষার পরিবেশ। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যালয়টি মাছের আড়ৎ ও মাছ বাজার সংলগ হওয়ায় বাজারের যাবতীয় ময়লা-আবর্জনাযুক্ত পানি মাঠে প্রবেশ করে। ফলে ছাত্রছাত্রীদেরকে ক্লাস চলার সময় দুর্গন্ধ ভোগ করতে হয়।
×