ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরবনে স্মার্ট প্যাট্রোলিং শুরু

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১১ জুন ২০১৬

সুন্দরবনে স্মার্ট প্যাট্রোলিং শুরু

বাবুল সরদার, বাগেরহাট ॥ ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা ও দস্যুতা দমনে শুক্রবার সকাল থেকে ‘স্মার্ট প্যাট্রোলিং’ (স্পাসিয়াল মনিটরিং এনালাইজিং এ্যান্ড রিপোর্টিং টুলস) শুরু হয়েছে। সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জ সদর থেকে এক যোগে শুরু হওয়া এই স্মার্ট পেট্রোলিং প্রাথমিকভাবে চলবে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। বিশ্বের ৩১টি দেশের ১৪০টিরও বেশি জিওলোজিক্যাল সাইডে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বন পাহারা স্মার্ট প্যাট্্েরালিং পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে স্ট্রেনদেনিং রিজিওনাল কো-অপারেশন ফর ওয়াইল্ডলাইফ প্রটেকশন প্রজেক্টের আওতায় শুক্রবার থেকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বন পাহারায় প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের সব ধরনের দস্যুতা দমন এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বন্যপ্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষা করা সহজতর হবে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে সুন্দরবন বিভাগ। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে স্মার্ট প্যাট্রোলিং দলের প্রশিক্ষিত সদস্যরা আধুনিক প্রযুক্তি ও অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বন অপরাধীদের গেফতারে সকাল থেকে অভিযানে নেমেছে। সুন্দরবনের শরণখোলা, চাঁদপাই, নলিয়ান ও বুড়িগোয়ালিনী এই ৪টি রেঞ্জের প্রতিটিতেই ৩টি করে স্মার্ট পেট্রোলিং দলে একজন উর্ধতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৭জন কর্মকর্তা ও ৯জন বনরক্ষী রয়েছে। প্রথম দুটি দল পালাক্রমে ১৫ দিন করে সুন্দরবনের প্রতি রেঞ্জ জুড়ে অভিযান চালাবে। তৃতীয় দলটি স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত থাকছে বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য। প্রতিটি দলের সাথে রয়েছে দুটি করে লঞ্চ, ওপেন টাইপ স্পিডবোট, ফাইবার বডি ট্রলার ও বিশেষ প্রয়োজনে একটি করে কেবিন ক্রুজার। স্মার্ট প্যাট্রোলিংকালে বন ও বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত দস্যুতা দমন ছাড়াও সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ সকল জীবিত বা মৃত বন্যপ্রাণী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে জিআইএস ল্যাবে সংরক্ষণ করবে। এই স্মার্ট প্যাট্রোলিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা ও দস্যুতা দমন এখন সহজতর হবে। খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক বন সংরক্ষক (সিএফ) জহির উদ্দিন আহমেদ জানান, বর্তমানে এই স্মার্ট প্যাট্রোলিং পদ্ধতি বিশ্বের ৩১টি দেশের ১৪০টিরও বেশি জিওলোজিক্যাল স্থানে চালু রয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ডের বনাঞ্চল ও জাতীয় উদ্যানসমূহের জেডএসএল সাইটে স্মার্ট প্যাট্্েরালিং পদ্ধতির ব্যবহার জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এই বন পাহারা ব্যবস্থা সীমিত আকারে ইউএসএইড-বাঘ প্রকল্পের উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম অভয়ারণ্যে চালিয়ে দস্যুতা দমন এবং বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সফল্য এসেছে। সীমিত আকারে পরীক্ষামূলক অভিযানের সাফল্যের পর প্রাথমিকভাবে ৬ মাসের জন্য গোটা সুন্দরবনে স্মার্ট প্যাট্রোলিং অভিযান শুরু হয়েছে।
×