ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় টিউবওয়েল বসালেই গ্যাস

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ১১ জুন ২০১৬

ভোলায় টিউবওয়েল বসালেই গ্যাস

ভোলার আদি নাম ছিল দক্ষিণ শাহাবাজপুর। সেই নামেই ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ শাহাবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র নাম দেয়া হয়েছে। ৮০ দশকে গ্যাস কূপের সন্ধান পাওয়া গেলেও তা তোলার কাজ শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। কিন্তু এত বছর পরও গ্যাস সংযোগ পায়নি স্থানীয়রা। তবে গ্যাসের বিধিবদ্ধ সংযোগ না পেলেও তিন ইউনিয়নের মানুষের মনে ক্ষোভ নেই। এই প্রাকৃতিক গ্যাস ওই এলাকার মানুষ গত ২০-২৫ বছর ধরে বিনা পয়সায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে। এতে নেই কোন খরচ। উল্টো অনেকেই বাড়তি আয় করছে। ভোলা শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে ঢোকামাত্র গাছে গাছে ঘরের টিনের চালে এমনকি বিদ্যুতের তারের সঙ্গে জড়িয়ে বাড়ি-ঘরে গ্যাসের সংযোগ দেয়া হয়েছে। প্রথমে মোটা তারের সংযোগ মনে হয়। একটু ভাল করে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়, এটি বিদ্যুতের তার নয়। মোটা পাইপ। আর ওই পাইপ দিয়েই বাসা বাড়িতে গ্যাস নেয়া হয়েছে। এভাবে কি গ্যাস সংযোগ দেয়া যায়? উত্তর পাওয়া যায় যে কোন বাড়িতে ঢুকলেই। কাচিয়া ইউনিয়নের হাসান সিকদারের বাড়িতে দেখা যায়, প্রাকৃতিক গ্যাস তোলার পর স্থানীয় পদ্ধতির ব্যবহার। হাসান সিকদার জানান, ২০ বছর আগে তিনি ২০/২২ হাজার টাকা ব্যয় করে টিউবওয়েল বসান। দেখেন টিউবওয়েল চেপে পানি ওঠাতে হচ্ছে না। নিজে নিজেই ২৪ ঘণ্টা পানি পড়ছে। শুধু পানিই নয়। পানির সঙ্গে গ্যাসও উঠছে। একদিকে পানি ব্যবহার, অন্যদিকে টিউবওয়েলের পাইপের মাথায় সিলিন্ডার লাগিয়ে ওই সিলিন্ডার থেকে পাইপ লাইনের সাহয্যে গ্যাসের চুলার সঙ্গে সংযোগ দিয়ে জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করা যাচ্ছে। গৃহবধূ মোবাশ্বেরা বেগম জানান, গত ১৫ বছর ধরে তারা টিউবওয়েল থেকে গ্যাস উঠিয়ে বাসায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে তাদের আর কোন জ্বালানি খরচ নেই। শুধু মোবাশ্বেরা বেগমই নয়, বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া, টবগী, পক্ষীয়া ইউনিয়নের কয়েক শ’ পরিবার এভাবেই স্থানীয় পদ্ধতিতে গ্যাস ব্যবহার করছে। আবার অনেকে টিউবওয়েল থেকে বেরিয়ে আসা গ্যাস ছোট ছোট দোকান হোটেলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করে দু’পয়সা বাড়তি আয় করছে। এদিকে চার বছর আগে শাহাবাজপুর গ্যাস ফিল্ডের কূপ খননের পর উত্তোলিত গ্যাস সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির মাধ্যমে ভোলা পৌর-সভার মাত্র ২০ কিলোমিটার এলাকায় আবাসিক সংযোগ দেয়া হয়। ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভোলার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে নতুন করে ভোলা পৌর এলাকায় আরও ২০ কিলোমিটার গ্যাস লাইন টানা হয় ও বোরহানউদ্দিন পৌর এলাকায় আবাসিক সংযোগের জন্য পাইপলাইন টানা হচ্ছে। কিন্তু নতুন কোন সংযোগ দেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাস মজুদের খবরে ইতোমধ্যে গ্যাসভিত্তিক ২টি বিদ্যুৎ প্লান্ট গড়ে উঠেছে। -হাসিব রহমান, ভোলা থেকে
×