ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার হুঁশিয়ারি ॥ ইউরোপে সৈন্য মোতায়েনে কানাডার সাহায্য চায় যুক্তরাষ্ট্র

মস্কো ন্যাটোকে হারাবে! ॥ ৬০ ঘণ্টায়

প্রকাশিত: ০৪:০০, ১১ জুন ২০১৬

মস্কো ন্যাটোকে হারাবে! ॥ ৬০  ঘণ্টায়

রাশিয়া মাত্র ৬০ ঘণ্টায় ন্যাটো বাহিনীকে পরাজিত করতে পারে। পশ্চিমের সঙ্গে দেশটির উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এক নেতৃস্থানীয় মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে প্রতিহত করতে পূর্ব ইউরোপে এক নতুন ন্যাটো বাহিনী গড়ে তুলতে কানাডার সাহায্য চাইতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র এর পূর্ব ইউরোপীয় মিত্রদের কাছ থেকে সমর্থন পেতে অসুবিধার মুখে পড়েছে। খবর নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড ও ইয়াহু নিউজের। যখন রাশিয়া ন্যাটোর বিরোধিতা করতে পশ্চিম অভিমুখে সৈন্য মোতায়েন করেছে, তখন ওই ভীতিকর হুঁশিয়ারি দেয়া হলো। রাশিয়া, ইউক্রেন ও ইউরেশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল কার্পেন্টার বলেন, পাশ্চাত্য ও ন্যাটো কোন রুশ হুমকি মোকাবেলার জন্য এখন বাস্তবে প্রস্তুত নয়। তিনি সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্কিত কমিটির শুনানিতে সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার ব্যাপক ভৌগোলিক ও সময়গত সুবিধা রয়েছে কিন্তু ২০১৭ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র এর মিত্রদের রক্ষা করতে আরও ভাল অবস্থানে থাকবে। এর মাত্র চার মাস আগে বিশ্বনীতি বিষয়ক অলাভজনক গবেষণা সংস্থা র‌্যান্ড রাশিয়ার বৃহত্তর অভীলাষ নিয়ে উদ্বেগ এবং রুশ বাহিনী এসব এলাকায় ৬০ ঘণ্টায় পৌঁছতে পারে বলে অনুমান ব্যক্ত করে। এটি সতর্ক করে দেয় যে, ন্যাটো এর সবচেয়ে অরক্ষিত সদস্যদের ভূখ- রক্ষা করতে সফল হতে পারবে না। এ সদস্যরা হলোÑ ইস্তোনিয়া, লাতভিয়া ও লিথুয়ানিয়া প্রজাতন্ত্র। তবে এটি মত ব্যক্ত করে যে, সাত ব্রিগেড সৈন্য নিয়ে বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর দ্রুত পতন এড়ানো সম্ভব। এতে বিমান শক্তির সমর্থনপুষ্ট তিনটি ভারি সাঁজোয়া ব্রিগেড থাকতে হবে। বিমানগুলোকে ভূমি থেকে সহায়তা দিতে হবে। র‌্যান্ডের গত ফেব্রুয়ারির সতর্কবাণী এখনও সঠিক কিনা এবং ন্যাটো ওই হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুত কিনা, সিনেটর করি গার্ডনার কার্পেন্টারকে এ প্রশ্ন করেন। কার্পেন্টার বলেন, ২০১৭ সালের শেষদিকে যখন জোটের পূর্ব সীমান্তে মোতায়েন করার মতো আমাদের এক অতিরিক্ত সাঁজোয়া ব্রিগেড কম্ব্যাট টিম থাকবে তখন আমরা প্রস্তুত থাকব বলে আমি আস্থাশীল। পূর্ব সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে পোল্যান্ডে এক যুক্ত মহড়ায় ন্যাটো অংশ নিচ্ছে। জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলো রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান শক্তি প্রদর্শনে ভীত হয়ে এ ১০ দিনের মহড়ার আয়োজন করেছে। ন্যাটোর ১৯টি সদস্য রাষ্ট্র এবং পাঁচ অংশীদার দেশ ওই মহড়ায় সৈন্য পাঠিয়েছে। এতে সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং জলে, স্থলে ও আকাশে হুমকির ত্বরিত যৌথ জবাব দেয়ার সামর্থ্য পরীক্ষা করা হবে। এ মহড়া যে ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বাড়াবে তা নিশ্চিত। রাশিয়া এর পশ্চিম দিকে সৈন্য মোতায়েন করছে। ন্যাটো এ মহড়া সত্ত্বেও পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোতে পালাক্রমে চার হাজার সৈন্য মোতায়েন করতে মন্থরতার পরিচয় দিচ্ছে। কেবল ব্রিটেন ও জার্মানিই প্রত্যেকে ১০০০ সৈন্যের এক ব্যাটালিয়ন পাঠাতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় ব্যাটালিয়ন সরবরাহ করবে এবং এতে চতুর্থ ব্যাটালিয়ন পাঠানোর মতো কোন দেশকে খুঁজে বের করতে হবে ন্যাটোকে। এক পোলিশ কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়, ওয়ারশ শীর্ষ সম্মেলনই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সর্বশেষ ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র চায় সেটি যেন সফল হয়। সম্ভবত কানাডার সাহায্য চেয়ে চতুর্থ দেশটি যাতে খুঁজে পাওয়া যায়, যুক্তরাষ্ট্র তা নিশ্চিত করবে। কানাডার জাতীয় প্রতিরক্ষা বিভাগের এক মুখপাত্র বলেন, ন্যাটোর প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে কার্যকর অবদান রাখতে কানাডা বিভিন্ন উপায়ের কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ্যান্তনি মাচিয়েরেভিচ বৃহস্পতিবার ওয়ারশতে বলেন, ন্যাটো পরিকল্পনার যে কোন সমস্যা ইতিবাচক উপায়ে নিরসন করা হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।
×