ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবাজারের দোভাষীদের কথা

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১০ জুন ২০১৬

বঙ্গবাজারের দোভাষীদের কথা

বিদেশে বাংলাদেশের পোশাকের বেশ সুনাম। তাই অনেক বিদেশিও ঢাকার বঙ্গবাজারে আসেন কমদামে পোশাক কিনতে। তাঁদের সহায়তা করেন একদল দোভাষী। তেমন কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই দিব্যি কয়েকটি ভাষায় কথা বলেন তাঁরা। কথা বলাই তাঁদের মূল কাজ : বঙ্গবাজারের সামনে খোলা আকাশের নিচেই সকাল থেকে বসে থাকেন তাঁরা। সবার সতর্ক দৃষ্টি থাকে বাজারের সামনে এসে থামা গাড়িগুলোর দিকে। কোন বিদেশী এলেই ছুটে যান সেদিকে। তারপর বিদেশী ক্রেতাদের চাহিদা বুঝে উপযুক্ত দোকানে নিয়ে যান। এমন সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে যে দোভাষীর যে ভাষায় দক্ষতা বেশি তিনি পান সেই দেশের ক্রেতা। অনেক সমস্যা : বঙ্গবাজার এলাকাতেই জন্ম মিরাজুল আলমের। দীর্ঘদিন ধরে এ বাজারে দোভাষীর কাজ করছেন। বঙ্গবাজারের দোভাষীদের অনেক সমস্যা। বসার কোন জায়গা নেই, নেই কোন পরিচয়পত্র। পরিচয়পত্র না থাকায় বিদেশীরা অনেক সময় তাঁদের বিশ্বাসই করতে চায় না। বঙ্গবাজারেও বিদেশী হত্যার প্রভাব : হোসেন চৌধুরী জানালেন, বঙ্গবাজারে এখন এমনও দিন যায় যেদিন একজন বিদেশীরও দেখা মেলে না। মালয়েশীয় ভাষা জানা হোসেন মনে করেন, সম্প্রতি দেশে জঙ্গী হামলায় কয়েকজন বিদেশী নিহত হওয়ার কারণেই বঙ্গবাজারে বিদেশীদের আগমন কমেছে। বিদেশীদের কাছ থেকেই ভাষা শেখা : দোভাষী মোঃ সালাউদ্দীন ইংরেজী, আরবী এবং ফিলিপিনো ভাষায় কথা বলতে পারেন। ভাষা তিনটি তিনি কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বা কোন শিক্ষকের কাছ থেকে শেখেননি। সালাউদ্দীন জানালেন, ছোটবেলায় বঙ্গবাজারে বিদেশীরা এলে তাঁদের পেছন পেছন ঘুরতেন, ঘুরতে ঘুরতেই শিখে ফেলেছেন কাজ চালানোর মতো ভাষা। ‘স্মার্ট’ দোভাষী পারভীন : সালাউদ্দীনের মতো পারভিন ইসলামও বিদেশীদের সঙ্গে বঙ্গবাজারে ঘুরে ঘুরেই একাধিক বিদেশী ভাষা শিখেছেন। পারভীন এখন আর বিদেশী ক্রেতা কখন আসবে তার অপেক্ষায় থাকেন না। মোবাইলে বিভিন্ন হোটেলের গাড়ি চালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগেই জেনে নেন কোন দিন কখন কোন বিদেশী আসবেন। সবে মিলে করি কাজ : রাবেয়া খাতুন জানালেন, বঙ্গবাজারে দীর্ঘদিন ধরে দোভাষীরা মিলেমিশে কাজ করছেন। বাজারের ব্যবসায়ীরাও তাঁদের সহায়তা করেন বলে জানালেন তিনি। রোকসানা চামেলী জানালেন, নারী হওয়ার বিড়ম্বনার কথা। বললেন, রাস্তার পাশে বসে বিদেশীদের জন্য অপেক্ষা করতে হয় বলে অনেক সময় পথচারীদের আজেবাজে মন্তব্য শুনতে হয় তাঁদের। সূত্র : ডয়েচে ভেলে
×