ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাহুল শর্মা

‘দ্য গ্রেটেস্ট’ মোহাম্মদ আলী

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১০ জুন ২০১৬

‘দ্য গ্রেটেস্ট’ মোহাম্মদ আলী

উত্থানটা তাঁর বক্সিং দিয়ে। বক্সিং রিংয়ের ইতিহাস পাল্টে দিয়ে জয় করেছেন ক্রীড়াবিশ্ব। তবে বর্ণবাদ ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়ে জয় করেছিলেন পুরো বিশ্বটাই। বলছিলাম কিংবদন্তি বক্সার মোহাম্মদ আলীর কথা। দীর্ঘদিন ধরেই বক্সিংয়ের বাইরে ছিলেন আলী। রিংয়ে এবং রিংয়ের বাইরে যে মুখকে ব্যবহার করতেন অস্ত্র হিসেবে, সেই মুখটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শেষ দিকে। এবার থেমে গেল শ্বাস-প্রশ্বাসও। গত ৩ জুন ‘দ্য গ্রেটেস্ট’ নামে পরিচিত মোহাম্মদ আলী চলে গেলেন না ফেরার দেশে। জীবন বদলে দেয়া বাইসাইকেল সময়টা ১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি রাজ্যের লুইসভিলে মোহাম্মদ আলীর জন্ম। বাবা ক্যাসিয়াস মারসেলাস ক্লে। পেশায় রংমিস্ত্রি। বাবার নামানুসারে প্রথমে আলীর নাম রাখা হয় ক্যাসিয়াস মারসেলাস ক্লে জুনিয়র। পরে অবশ্য একাধিকবার নাম পরির্বতন করেন তিনি। সর্বশেষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাম রাখেন মোহাম্মদ আলী। বয়স তখন তাঁর ১২। জন্মদিনে একটা বাইসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন বাবা। একদিন সাইকেলটি চুরি হয়ে যায়। পুলিশের কাছে ছুটে গেলেন আলী। চুরির অভিযোগ জানিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। পুলিশ অফিসার মার্টিনকে বললেন, সাইকেল চোরকে পেলেই পেটাবো। অফিসার মার্টিন তখন ছিলেন শহরের বক্সিং কোচ। তিনি আলীকে বলেন, চোরকে পেটাতে হলে তো লড়াই করা জানতে হবে। আর এ জন্য অফিসার প্রস্তাব দিলেন বক্সিং শেখার। পরদিন থেকে মার্টিনের কাছেই বক্সিংয়ের হাতেখড়ি কিশোর আলীর। মার্টিনের কাছেই আলী শিখেছিলেন কীভাবে রিংয়ে প্রজাপতির মতো নেচে নেচে মৌমাছির মতো হুল ফোটাতে হয়। তারপরের ইতিহাস সবারই জানা। ১৮ বছরেই প্রথম সোনা ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে প্রথম সোনা জিতেন আলী। তখন বয়স মাত্র ১৮। এর মাধ্যমেই শুরু হয় তার বর্ণিল ক্যারিয়ার। অবশ্য সেই মেডেল তিনি রাগের মাথায় ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন ওহায়ো নদীতে। ঘটনাটা রোম থেকে ফেরার কিছু দিনের মধ্যেই। বন্ধুকে নিয়ে এক রেস্তোরাঁয় ঢুকতে গিয়ে বাধা পান। কারণ এই রেস্তোরাঁয় শ্বেতাঙ্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষেধ। এ কথা শুনেই গর্জে ওঠেন আলী। তর্ক-বিতর্ক চলতে চলতে এক দল শ্বেতাঙ্গের সঙ্গে মারপিট বাধে তাঁর। এ ঘটনা দাগ কাটে আলীর মনে। তার পরই ক্ষোভে রোম থেকে জিতে আনা অলিম্পিকের সোনা নদীতে ছুড়ে ফেলেন। এভাবেই নানা নাটকীয়তায় চলতে থাকে আলীর জীবন। বক্সিং ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ১৯৮১ সালে। তখন তাঁর নামের পাশে ছিল তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপের খেতাব। ক্যারিয়ারের ৬১টি লড়াইয়ের মধ্যে ৫৬টিতে জয়লাভের রের্কডও আছে তাঁর। গাহি মানবতার গান মোহাম্মদ আলী কেবল পেশাদার খেলোয়াড়ই ছিলেন না। ছিলেন সাম্প্রদায়িকতা, বর্ণবাদ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরও। তিনি ছিলেন মানবতারপক্ষে নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়েও তিনি সোচ্চার ছিলেন মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। কোন ধরনের প্রলোভন তাকে এ পথ থেকে ফেরাতে পারেনি। ষাটের দশকে মোহাম্মদ আলী যখন খ্যাতির তুঙ্গে, তখন ভিয়েতনামে চলছিল মার্কিন আগ্রাসন। ওই সময় মার্কিন সেনাবাহিনী অন্য ১১ জন কৃষ্ণাঙ্গের সঙ্গে আলীকেও নিয়ে যায় টেক্সাসের পুরনো এক পোস্ট অফিসে। মার্কিন আইনের আওতায় তাদের বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার আদেশ দেয়া হয়। সেখানকার একটি কক্ষে তাদের ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য শপথ পড়তে বাধ্য করার চেষ্টা চলে। কিন্তু মোহাম্মদ আলী শপথ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। একজন সেনা কর্মকর্তা তার কাছে এর কারণ জানতে চান। আলী চুপ থাকেন। এরপর তাকে কক্ষের বাইরে নিয়ে গিয়ে হুমকি দেয়া হয়। দ্বিতীয়বার কক্ষে ফিরেও শপথ নিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। পরে তিনি এর প্রতিক্রিয়ায় একটি লিখিত বিবৃতিও দেন। তারপর একদিকে আলীর বিরুদ্ধে নেয়া মার্কিন সরকারের অবস্থানের বিপরীতে প্রতিবাদ চলতে থাকে। অন্যদিকে আলীর বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানায় মার্কিন বিচার বিভাগ। সংক্ষিপ্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষে ১৯৬৭ সালের ২০ জুন তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়। এ ঘটনার পরেও উপরন্তু প্ল্যাকার্ড-বিবৃতির মাধ্যমে মাঠে নেমে পড়েন ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার কাজে। এ ঘটনার জেরে মার্কিন সরকার তার বক্সিং লাইসেন্স বাতিল করে প্রদত্ত খেতাব কেড়ে নেয়। তবে এক বছরের মধ্যে উচ্চ আদালত তার সাজা বাতিল করে। ভিয়েতনাম যুদ্ধে যোগ না দেয়ার কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে আলী সে সময় বলেন, ‘কেন আমাকে বলা হচ্ছে ইউনিফর্ম পরে ১০ হাজার মাইল দূরে গিয়ে ভিয়েতনামের অশ্বেতাঙ্গ মানুষদের ওপর বোমা আর বুলেট নিক্ষেপ করতে? ভিয়েতনামের মানুষের সঙ্গে আমার তো কোন বিরোধ নেই। কেবল শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য বজায় রাখার জন্য মানুষের ওপর অত্যাচার করা, খুন করা, বোমা ফেলার কাজে যুক্ত হব না আমি। পৃথিবীর বুকে এসব অবিচার বন্ধ হওয়া উচিত। আমি বলব, এখানেই (যুক্তরাষ্ট্রে) রয়েছেন আমাদের (মানবতার) শত্রুরা। যারা নিজেদের অধিকার ও স্বাধীনতা আদায়ের জন্য লড়াই করছে তাদের (ভিয়েতনামের মানুষদের) দাসে পরিণত করার একটি মাধ্যম হয়ে আমি আমার ধর্ম, আমার মানুষ এবং আমার নিজের মর্যাদাহানি করতে পারব না।’ এ সময় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে উঠলে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আলী। একজন বক্সার হলেও বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেয়ার জন্য তাঁর ডাক পড়তে থাকে। এ রকম সময়েই হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চার হাজার শিক্ষার্থীর সামনে তার বিখ্যাত ‘ব্ল্যাক ইজ বেস্ট’ বক্তব্য দেন। নিষেধাজ্ঞা যখন উঠল তখন আলীর বয়স ২৯। ইতোমধ্যেই বক্সিং সার্কিটে এসে গেছেন তরুণ প্রজন্মের বক্সাররা। বয়স কম। ক্ষীপ্রতা বেশি। কিন্তু এসব তোয়াক্কা করেননি আলী। তিনি যে মোহাম্মদ আলী। তিনি জানেন, কী করতে হবে তাঁকে! আবার শুরু হলো লড়াই। একের পর এক প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করছেন। এর মধ্যেই জো ফ্রেজিয়ারের সঙ্গে সেই দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ। যে ম্যাচ আজও বক্সিংয়ের ইতিহাসের পাতায় অমর। শেষপর্যন্ত মুখোমুখি হলেন, হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন জর্জ ফোরম্যানের। ৩০ অক্টোবর ১৯৭৪ খেতাব পুনরুদ্ধার করেন আলী। ৩২ বছর বয়সে ২৫ বছর বয়সী ফোরম্যানকে হারিয়ে। ‘স্বর্গ দেখতে চাইলে বাংলাদেশে যাও’ কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর কাছে বাংলাদেশ ছিল স্বর্গ। তার একটি বিখ্যাত উক্তি ছিলো, ‘স্বর্গ দেখতে চাইলে বাংলাদেশে যাও।’ ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ ঘুরে দেশে ফিরে গিয়ে এই উক্তিটি করেন তিনি। ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত দেশে ভ্রমণ শুরু করেন তিনি। মোহাম্মদ আলীর আগ্রহ ছিলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষত মুসলিম দেশগুলোতে তার জনপ্রিয়তা কেমন। ১৯৭৮-এ বাংলাদেশে এসে নিজের জনপ্রিয়তায় মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। বিমানবন্দরে আলীকে স্বাগত জানাতে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। সে সময় তার বাংলাদেশ সফর নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও বানানো হয়। বাংলাদেশের নাগরিকত্বও দেয়া হয়েছিল মোহাম্মদ আলীকে। বাংলাদেশের সৌন্দর্য ও এদেশের মানুষের আতিথেয়তা ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছিলেন আলী। তিনিই কি সর্বকালের সেরা মোহাম্মদ আলীই কি সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদ? গত শতাব্দীর শেষে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত স্পোর্টস ম্যাগাজিন ‘স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড’ এবং বিবিসি দুটো আলাদা সমীক্ষায় আলীকে শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াবিদের স্বীকৃতি দেয়। তার নিজের খেলা বক্সিং-এ আলী কি এক নম্বর? এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেননা আলী নিজে সুগার রে রবিনসনের মতো অত বক্সিং বাউট জেতেননি। সুগার রে রবিনসন ১৩১ পেশাদার বাউটে একটা মাত্র হেরেছেন, আলীর অবস্থান সেখানে কোথায়? আলী একবারও না হারা রকি মার্সিয়ানের থেকে বেশি ম্যাচ হেরেছেন। বক্সিং বিশেষজ্ঞরা আলীর বক্সিং স্টাইলে অনেক ত্রুটি দেখেছেন। ইএসপিএনের দুটি সমীক্ষায় তিনি সর্বকালের বক্সার তালিকায় দু’নম্বরে। একটায় সুগার রে পেছনে, অন্যটায় জো লুইয়ের পেছনে। অনেকে বলেন, তার ‘অন দ্য রোপস’ স্টাইল ছাড়া আর কিছুতেই কোন নতুনত্ব নেই। কিন্তু এত কিছু কিছুর পর মোহাম্মদ আলী সবাইকে ছাপিয়ে শুধু ক্রীড়া বিশ্বেই নয়, গোটা বিশ্বই জয় করে নিয়েছিলেন। অনন্য আলী রাজনীতি, ধর্ম, সমাজতত্ত্ব-সব মিলেমিশে এক হয়ে যায় আলীর চমৎকার কথাবার্তায়। একটা সময় আমেরিকাতে আফ্রিকান-আমেরিকানদের স্বীকৃতি ছিল না সেভাবে। মার্টিন লুথার কিং নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন। ১৯৬৩ সালে প্রথম কৃষাঙ্গ অস্কারও জিতেছিল। তবু বক্সিং রিংয়ে আলীর আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত কৃষাঙ্গরা ভাবতে পারেনি, আমরাও অসাধারণ। আলীই সাদা-কালো পৃথিবী অকস্মাৎ করে তুলেছিলেন রঙিন। একটা নোবেল, একটা অস্কার যা পারেনি, তা-ই করে দেখিয়েছিলেন তিনি। এ জন্য কখনও তিনি বক্সার, কখনও জোকার, কখনও ধর্মীয় প্রচারক, কখনও বা ম্যাজিসিয়ানের ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর এভাবেই অনন্য সাধারণ হয়ে উঠেন মোহাম্মদ আলী। অজানা আলী একাধিকবার নাম বদল : মোহাম্মদ আলীর আগের নাম, ‘ক্যাসিয়াস ক্লে’-এর পেছনের কাহিনীটিও বেশ মজাদার। তাঁর নামকরণ করা হয়েছিল ঊনবিংশ শতকের বিখ্যাত এক দাসপ্রথাবিরোধী নেতার নামে। ক্যাসিয়াস মারসেলাস ক্লে নিজে শ্বেতাঙ্গ হলেও দাসপ্রথার বিলুপ্তির জন্য বেশ জোরেশোরে আন্দোলন করেছিলেন। মোহাম্মদ আলী নামটি পছন্দ করার আগেও, এই বক্সার নিজের নাম পরিবর্তন করেছিলেন। তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ নেতা ম্যালকম এক্সের অনুকরণে নিজের নাম রেখেছিলেন ক্যাসিয়াস এক্স। পরে ১৯৬৪ সালে মোহাম্মদ আলী নামটি গ্রহণ করেন এই কিংবদন্তি বক্সার। বিমানে চড়তে ভয় : বিমানে চড়তে ভয় পেতেন মোহাম্মদ আলী। এমনকি ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে অংশ নেয়ার জন্য যখন তাঁকে বিমানে চড়ার কথা বলা হয়, তিনি রাজি ছিলেন না। প্রস্তাব করেছিলেন জাহাজে যাওয়ার জন্য। অবশ্য এই আপত্তি ধোপে টেকেনি। ইরাক যুদ্ধ : ১৯৯০ সালে ইরাক যখন কুয়েত দখল করে নেয়, তখন মোট ১৫ জন মার্কিন নাগরিককে বন্দী করা হয়। সে সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুসলমান ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ আলী স্বয়ং ইরাকে যান তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করতে। রাজধানী বাগদাদে ইরাকী শাসক সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি সেসব বন্দীকে মুক্ত করেও এনেছিলেন তিনি। আলীর তিনটি বই: ক্যারিয়ারের ওপর ভিত্তি করে তাঁর লেখা তিনটি বই হচ্ছে- দ্য গ্রেটেস্ট, মাই ওন স্টোরি এবং দ্য সোল অব দ্য বাটারফ্লাই। জাদুকর : আলী কিন্তু টুকটাক জাদুও জানতেন। এর মধ্যে ছিল রুমাল অদৃশ্য করে ফেলা কিংবা মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি ওপরে শূন্যে ভেসে থাকা। বিখ্যাত জাদুকর ডেভিড কপারফিল্ড পর্যন্ত আলীর জাদুতে মুগ্ধ হয়েছিলেন। সুফিবাদী : মরমিবাদের দিকে ঝোঁক ছিল আলীর। এ প্রসঙ্গে ‘অ্যাপ্রোচিং আলী’র লেখক মিলার বলেন, ‘২০০৫ সালের দিকে আলী নিজেকে সুফি হিসেবে ঘোষণা করেন। ইসলামের সব ধারার মধ্যে সুফিবাদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যাওয়ার কথা বলেন তিনি।’ যোগাযোগের নতুন কায়দা : ১৯৮৪ সালে ৪২ বছর বয়সে আলীর পারকিনসন্স রোগ ধরা পড়ার পর অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন কৌশল অবলম্বন করেন তিনি। সেই সময় তিনি হাত ও আঙ্গুল, মুখের ভাব, চোখের ইশারার মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন। শেষ কথা বক্সিং বা মুষ্টিযুদ্ধ শক্তির খেলা। এই খেলার প্রধান অস্ত্র হিংস্রতা। মোহাম্মদ আলী এই খেলাকেই নিয়ে গিয়েছিলেন শিল্পের স্তরে। ক্রীড়াশৈলিতে সৌন্দর্যময় করেছিলেন। নিজেকে তিনি শুধু ক্রীড়া জগতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। নিজের কণ্ঠস্বরকে সবসময় উচ্চারিত করেছেন যুদ্ধের বিপক্ষে, মানবতার পক্ষে। আর এ জন্যই তিনি ‘দ্য গ্রেটেস্ট’। ৎধযঁষং৭৬৯@ুধযড়ড়.পড়স
×