ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পান্থ আফজাল

ক্লিওপেট্রা ॥ ইতিহাসের কিংবদন্তি নারী

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১০ জুন ২০১৬

ক্লিওপেট্রা ॥ ইতিহাসের  কিংবদন্তি নারী

সপ্তম ক্লিওপেট্রা ফিলোপেটর ইতিহাসে কেবল ক্লিওপেট্রা নামে পরিচিত, ছিলেন প্রাচীন মিসরীয় টলেমিক বংশের কিংবদন্তি সর্বশেষ সক্রিয় ফারাও। তার রাজত্বের পর, মিসর তৎকালীন সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত রোমান সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশে পরিণত হয়। ক্লিওপেট্রা ছিলেন প্রাচীন মিসরীয় টলেমিক বংশের সদস্য। মহামতী আলেকজান্ডারের একজন সেনাপতি আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর মিসরে কর্তৃত্ব দখল করেন ও টলেমিক বংশের গোড়াপত্তন করেন। এই বংশের বেশিরভাগ সদস্য গ্রিক ভাষায় কথা বলতেন, এবং তাঁরা মিসরীয় ভাষা শিখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। ফলে রোসেত্তা স্টোনের সরকারী নথিপত্রেও মিসরীয় ভাষার পাশাপাশি গ্রিক ভাষার প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। অপরদিকে ব্যতিক্রমী ক্লিওপেট্রা মিসরীয় ভাষা শিখেছিলেন এবং নিজেকে একজন মিসরীয় দেবীর পুনর্জন্ম হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। তাঁর জীবনীকাররা বলেন, ক্লিওপেট্রা ছিলেন নজরকারা ও অসম্ভব রকমের সুন্দরী। তার ঠোঁট দুটি ছিল গোলাপের পাপড়ির ন্যায়, নাক ছিল সুউন্নত, আর চোখজোড়া ছিল অত্যন্ত মায়াময়। তার কণ্ঠস্বর ছিল বীণার তারের ধ্বনির মতো। জীবনিকাররা আরও বলেন, স্বর্গের দেবতা প্লেটোর ছিল মাত্র চার ধরনের তোষামোদকারী কিন্তু ক্লিওপেট্রার ছিল হাজারো ধরনের গুণমুগ্ধ ভক্ত ও তোষামোদকারী। ক্লিওপেট্রা অসম্ভব বিলাসবহুল জীবন যাপন করতেন। ক্লিওপেট্রার বয়স যখন আঠারো বছর তখন তার বাবা মারা যান এবং তিনি মিসরের রানী হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হন (খ্রিস্টপূর্ব একান্ন অব্দে)। সেই সঙ্গে রাজা হন তার আপন ছোট ভাই ও স্বামী পনেরো বছর বয়স্ক টলেমী অষ্টম (মতান্তরে ত্রয়োদশ)। অবশ্য ভাই-বোনের এই বিয়ে টলেমী রাজবংশে নতুন কিছু ছিল না। তার বাবা-মাও ছিলেন আপন ভাই বোন। আসলে টলেমী রাজবংশের উত্তরাধিকার যাতে অন্য কারও হাতে না যায় এজন্যই ক্লিওপেট্রার বাবা এই রাজনৈতিক বিয়ের ব্যবস্থা করেন। পিতার মৃত্যুর পর এই কিশোর-কিশোরী সিংহাসনে বসলেও বেশিদিন টিকতে পারেনি। কিছুদিনের মধ্যেই বিদ্রোহীরা ক্লিওপেট্রাকে বিতাড়িত করেন, যদিও রাজা থেকে যান তার স্বামী/ভাই অষ্টম টলেমী। রাজ্যহারা ক্লিওপেট্রা সিজারের সঙ্গে দেখা করে তাকে আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব করেন এবং বিনিময়ে সিজারও ক্লিওপেট্রাকে মিসরের সিংহাসনে বসাবার প্রতিশ্রুতিদেন। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন জুলিয়াস সিজার, বসিয়েছিলেন ক্লিওপেট্রাকে মিসরের সিংহাসনে। রোম শাসক অগাস্টাস সিজার যখন আলেকজান্দ্রিয়ার রাজ প্রাসাদ দখল করে ক্লিওপেট্রার শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন তখন দেখেন হাজারো রতœমালা বিভূষিত হয়ে রানী ক্লিওপেট্রা শুয়ে আছেন তার সোনার সিংহাসনে। তবে জীবিত নয় মৃত। কিংবদন্তি আছে ক্লিওপেট্রা নাকি সাপের দংশনে মারা গিয়েছিলেন।
×