ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পোশাকি ঈদ, ঈদে ফ্যাশন

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১০ জুন ২০১৬

পোশাকি ঈদ, ঈদে ফ্যাশন

ঈদের আনন্দটা কারও সঙ্গে শেয়ার করতে পারার যে আনন্দ তার যেন কোন তুলনাই হয় না। তার সঙ্গে সবার অনুভূতিটা এমনই হয়। ঈদের আবহ শুরু হলেই সকলের মধ্যে যে তুমুল উত্তালের গুঞ্জরণ সূচিত হয়। অন্য কোন উৎসবে সেটা একেবারেই অনুপস্থিত। ঈদের রয়েছে একটা আলাদা আমেজ। বয়ঃসন্ধি কালের ঈদে সেই আমেজের রঙিন আমেজ যেন দুকূল ছাপিয়ে যায়। উৎসবময় ঈদ তাই জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ের আনন্দ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর সেটা গভীরভাবে স্মৃতিতাড়িত করে একটা সময়ে এসে কথাচ্ছলে তারা বলে ওঠেনÑ ছিল আমাদের ঈদ। সেই তরুণ বয়সের অপার আনন্দবহুল ঈদ এখন কোথায়। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে সব কিছুরই যে রূপ পাল্টায়। পাল্টে গেছে তেমনি ঈদের রূপটুকুও। সেকালের কৈশোর কিংবা তারুণ্যেও ঈদ যাপনের ছবির সঙ্গে একালের ঈদের ছবি যে মিলবে না তা বলাই বাহুল্য। তবে অনুষঙ্গ হিসেবে ঈদের প্রতিটি ছত্রে যেন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ফ্যাশনেবল পোশাক পরিচ্ছেদ তথা নতুন জামা-কাপড়, জুতো টুপি, আতর পারফিউম, গহনাপত্র, মেহেদিসহ আরও কত কি। শুধু বদলে গেছে প্রেক্ষাপট এবং আঙ্গিক ঈদের সময় আগে থেকেই গজ কাপড় অথবা কাটপিস কাপড় কিনে দর্জি দোকানের শরণাপন্ন হতে হতো। মাপজোক-জামা-প্যান্ট, স্যালোয়ার কামিজ, ফ্রক তৈরি। তারপর এক মোহনীয় আনন্দঘন আবেশে বুকে নতুন জামা জড়িয়ে বাড়িফেরা আর ঈদের দিনে সেই নতুন জামা-কাপড় পরিধান করে দলবেঁধে ঘুরে বেড়ানো। এখন ঈদের প্রধান অনুষঙ্গও নতুন ড্রেস। তবে ভিন্নতা হলোÑ এখন আর দর্জি দোকানে আধুনিক বোধের ছোঁয়ায় ঈদের আবেগময় অভিব্যক্তিটা যেন অন্য এক প্রাণপ্রাচুর্যে ভরে উঠেছে। একালের ঈদের সঙ্গে যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা। অর্থাৎ হাত বাড়ালেই পছন্দের পণ্যটি নিজের মতো করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাতে পেয়ে যাওয়া। এছাড়া ডিজিটাল এনভায়রনমেন্টের একটা গতিশীল স্রোতধারা যেন ঈদের অবয়বটাকে প্রবল আধুনিকতার মোড়কে ঢেকে দিয়েছে। আর সেই আধুনিক কনসেপ্টের সুতোয় গ্রথিত হয়ে গেছে সবারই মন। আর ওই মনের গতি যেন সূর্যরশ্মির গতিকেও হার মানায়। ঈদ মানেই ফ্যাশনেবল ড্রেস মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ফেসবুক, ইন্টারনেটের মহাসমুদ্রে অবিশ্রাম অবগাহন। এক সময়কার পরিবারকেন্দ্রিক ঈদ উদ্্যাপনের ধারাতেও এসেছে পরিবর্তন। যে বাঙালী পরিবারগুলো যুগ যুগ ধরে ছিল একান্নবর্তী পারিবারিক পরিম-লের বৃত্তে আবদ্ধ। সময়ের নিরিখে তা ভেঙ্গে খান খান হয়ে পড়েছে। আর তার প্রভাব পড়েছে জীবনের প্রতিটি স্পন্দনে। মানুষ এখন পূর্বাপেক্ষা ভীষণ আত্মকেন্দ্রিকতার জালে জড়িয়ে পড়েছে পরিবেশ এবং পারিপার্শ্বিকতার ছাঁচে পড়ে। সময়ই বদলে দিয়েছে সব। আনন্দটাও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেছে নানা রঙের। তবে সবকিছু হারিয়ে ঈদের আনন্দটা যেন রুখে গেছে সেই আগের মতোই। এ আনন্দ কখনই একাকী উদযাপন করা যায় না। বন্ধু বা পরিবারের অন্য সদস্য কিংবা আত্মীয়-পরিজনের সমবেত মিলনেই যেন ঈদের অকৃত্রিম আনন্দটা হয়ে ওঠে আন্তরিক। আর ঈদের প্রকৃত উপভোগ্যকালটা যেন সব বয়সেই অসার ছন্দময় ভাল লাগায় পরিপূর্ণতা পায়। তাই ঈদ যেন আবহামানকাল ধরেই বয়ে গেছে এক ও অভিন্ন। সর্বোপরি ঈদের আনন্দটাকে উপভোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে সারাদেশই যেন উন্মুখ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ফ্যাশন হাউসগুলো। শপিংমল থেকে শুরু করে সাধারণ রেজিমেন্ট পোশাকের শোরুম- এমনকি ফুটপাথ ঘিরেও জমে উঠেছে ঈদের বাজার। তাই ঈদ হয়ে উঠেছে ভীষণ ফ্যাশনেবল অথবা ঈদের মূল আকর্ষণটাই যেন ফ্যাশনে রূপান্তরিত হয়েছে। আর সেটা ছড়িয়ে পড়েছে ব্যবহার্য সব কিছুতেই। ড্রেস থেকে শুরু করে জুয়েলারি, ফার্নিচার ইমিটেশন, বিউটি কনসেপ্ট, অর্নামেন্টস, ক্রোকারিজ সর্বত্রই ঈদের ছোঁয়া। তবে সব কিছু ছাপিয়ে যায় পোশাক। শাড়ি, থ্রি-পিস পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট, টিশার্ট, ফতুয়া, কুর্তা এবং অবশ্যই কসমেটিকস, সাজসজ্জা, সু, কোন কিছুই যেন বাদ পড়ে না। ঈদেও রঙে বর্ণোজ্জল হয়ে ওঠে সব। এবার ঈদে এর ব্যতিক্রম হবে না। যার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে চারদিকে। তাই ঈদ শুধু ঈদের বৃত্তেও সীমাবদ্ধ না থেকে ঈদ এখন হয়ে উঠেছে অসম্ভব পোশাক এবং অবশ্যই ফ্যাশনেবল আর স্টাইলিশ। শাড়ি : মনে মন্টু টপস ও পাঞ্জাবি : ট্রাস্ট মার্ট
×