ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় মঞ্চস্থ আত্মপরিচয় সন্ধানী থিয়েটারের ‘নিখাই’

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১০ জুন ২০১৬

শিল্পকলায় মঞ্চস্থ আত্মপরিচয়  সন্ধানী থিয়েটারের ‘নিখাই’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্রিটিশ পিরিয়ডের একটা স্টিমার ঘাটকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। নানা ধরনের লোকের আনাগোনা সেখানে। স্থায়ীভাবে কেউই থাকে না ঘাটে। কিন্তু এক বৃদ্ধ দশবছর ধরে এই ঘাটকে আঁকড়ে পড়ে আছে। রাত-বিরাতে এই ঘাটে কেউ না থাকলেও ওই বৃদ্ধকে ঠিকই পাওয়া যায়। একদিন হঠাৎ মাঝরাতে এক ব্রিটিশ দারোগা তার স্ত্রীকে নিয়ে হাজির হয়। নদী পার হওয়া তাদের জন্য ভীষণ জরুরী। কিন্তু কোন মাঝি-মাল্লা না পাওয়ায় অপেক্ষা করতে হয় তাদের। এরপর একের পর এক ঘটতে থাকে নানা ঘটনা। ঘটনাচক্রে বেরিয়ে আসে একজন মানুষের জন্মের ইতিহাস। এভাবেই এগিয়ে যায় আত্মপরিচয় সন্ধানী নিখাই নাটকের কাহিনী। যেখানে ধর্ম-বর্ণ পেরিয়ে মুখ্য হয়ে উঠেছে মানবতা ও মানবিক দর্শন। থিয়েটারের ৩৪তম এই প্রযোজনাটির ২৭তম মঞ্চায়ন হলো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে। রচনার পাশাপাশি প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন গাজী রাকায়েত। নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক গাজী রাকায়েত বলেন, নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করা ব্যতীত যদি কেউ কাউকে হত্যা করে, তবে বিবেচনা করা হবে সে সমগ্র মানব জাতিকেই হত্যা করল। আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে বিবেচনা করা হবে সে পৃথিবীর সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। সেটা আমার কথা নয়, ধর্মের কথা। যখন কেউ পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে, তখনকি তাকে বাঁচানোর আগে পরীক্ষা করে দেখতে হবে সে হিন্দু, মুসলমান না খ্রীস্টান? শুধু ইসলামেই নয় সব ধর্মেই মানুষকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে সবার উপরে। অথচ মানুষ আজ খ-ে খ-ে বিভক্ত। এই বিভক্তি ধর্মের কারণে নয়, মানুষ তার নিজের স্বার্থেই ধর্মকে ব্যবহার করে এই বিভক্তি টেনে এনেছে। আজ পৃথিবীতে দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে যে দ্বন্দ্ব সেটা এই বিভক্তিকে কেন্দ্র করেই। এই বিভক্তি মানবজাতিকে মহাপ্রলয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু ধর্মে ধর্মে নয়, একই ধর্মের মধ্যে মানুষে মানুষে যে ব্যবধান সেটাও ভয়াবহ! পৃথিবীকে বাঁচাতে হলে মানুষের সঙ্গে মানুষের যে ব্যবধান সেটাকে ঘুচাতে হবে-এর কোন বিকল্প নেই। আর বৈষম্যহীনতা মানবিকতাকে ধারণ করেই আমার এ নাটকের কাহিনী। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রফিকুল ইসলাম রফিক, প্রবীর দত্ত, তৌহিদুল ইসলাম বাদল, ইউসা আনতারা ও পল্লব। গাজী রাকায়েতের আবহসঙ্গীত ও মঞ্চ পরিকল্পনায় আলোক পরিকল্পনা করেছেন ঠান্ডু রায়হান।
×