ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এসপি বাবুলের স্ত্রী হত্যায় আওয়ামী লীগ জড়িত ॥ খালেদা

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১০ জুন ২০১৬

এসপি বাবুলের স্ত্রী হত্যায়  আওয়ামী লীগ  জড়িত ॥ খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যায় আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমানের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। খালেদা জিয়া বলেন, দেশে চলমান সব গুম-খুনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত। এদের ধরলেই সব গুম-খুনের রহস্য উদ্ঘাটন হবে। তিনি বলেন, এক দেশে দুই আইন চলতে পারে না। নাইকোর মামলার সঙ্গে আমি জড়িত নই, শেখ হাসিনা জড়িত। তাই তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, সাত খুনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করলে সরকারী দলের প্রভাবশালী লোকদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পর সঠিকভাবে বিচার হলে শেখ হাসিনাও দোষী হবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতায় আসার পর স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী ১৫টি মামলা থেকে মুক্ত হয়েছেন। অথচ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া চলছে। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা নাইকো মামলা চলতে হলে শেখ হাসিনাকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। খালেদা জিয়া বলেন, আমরা আগে বাকশালীতে পড়েছিলাম, আবার সেদিকে ধাবিত হচ্ছি। জনগণ বিশ্বাস করে না বিচার ও বিচার বিভাগ স্বাধীন। দেশে এখন দুই ধরনের আইন আছে। একটি আইনে বিরোধী দলের বিচার দ্রুত করা হচ্ছে, অন্য আইনে সরকারী দলের লোকদের কোন বিচার করা হচ্ছে না। এক দেশে দুই আইন চলতে পারে না। চীফ জাস্টিস, জজ এবং আইনজীবীদের উদ্দেশ তিনি বলেন, বিচার যদি করতে হয় তাহলে শেখ হাসিনারও বিচার করতে হবে। বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের মামলার চেক কে কোথায় নিয়েছে, কী করেছে, তা আমাদের কাছে রেকর্ড আছে। সকল আইনজীবী বিচারকদের কাছে আমরা ন্যায়বিচার চাই। এর বেশি কিছু আমাদের চাওয়ার নেই। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিচারপতি টিএইচ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, দলের সিনিয়র নেতা এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ্যাডভোকেট জয়নাল আবদিন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব এবং সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী প্রমুখ। উল্লেখ্য, প্রথম রোজায় রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে এতিম ও আলেম-ওলামাদের সঙ্গে ইফতার করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। দ্বিতীয় রোজায় তিনি গুলশানের বাসায়ই ইফতার করেন। আর তৃতীয় রোজায় ইফতার করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের সঙ্গে। ১১ জুন রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারের ৪নং হলে রাজনীতিবিদদের সম্মানে ইফতারের আয়োজন করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ১২ জুন পেশাজীবী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ইফতারের আয়োজন করবেন তিনি। এছাড়া ১৩ জুন কূটনীতিকদের সম্মানে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ইফতারের আয়োজন করবেন গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে। ১৫ জুন ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর), একইস্থানে ১৬ জুন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) ও ১৮ জুন মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণীতে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) ইফতার মাহফিলে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া। ১৯ জুন হোটেল সোনারগাঁওয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ইফতার মাহফিলে অংশ নেবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ২১ জুন তিনি বনানীর সেরিনা হোটেলে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এনডিপি), ২৩ জুন গুলশানের ইমান্যুয়েলস কনভেনশন হলে লেবার পার্টির ও ২৬ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
×