ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ধরা পড়ল ৯ জন ॥ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করে মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাত

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১০ জুন ২০১৬

ধরা পড়ল ৯ জন ॥ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করে মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাত

বিভাষ বাড়ৈ ॥ ফেসবুক, হোয়াটসএ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া একটি চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বিজিপ্রেসের এক কর্মচারীকে নিয়ে একটি চক্র গড়ে তুলেছিলেন অপরাধী চক্রের এ সদস্যরা। ওই কর্মচারীর মাধ্যমে পাওয়া প্রশ্ন তারা ফেসবুক, হোয়াটসএ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন। কখনও কখনও ভুয়া প্রশ্নও পরীক্ষার্থীর হাতে গছিয়ে দিতেন। এদিকে পরীক্ষা হলেই প্রশ্ন ফাঁস যেন একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। অনেকে ক্ষেত্রে প্রশ্ন ফাঁস না হলেও ভুয়া প্রশ্নের বিনিময়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতারকরা। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম অপরাধী চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতারের তথ্য জানিয়ে বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি একইভাবে অনলাইনে ভুয়া প্রশ্ন ফাঁস করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বুধবার গভীর রাতে ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থেকে এই নয়জনকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন মনিরুল ইসলাম। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলোÑ মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে জুয়েল, মোঃ রুবেল বেপারি, মোঃ আবদুস সাত্তার, মোঃ মেজবাহ আহমেদ, মোঃ কাউসার হোসেন, মোঃ আল আমিন, মোঃ ইকরাম হোসাইন, মোঃ হৃদয় হোসেন ও মোঃ জাহাঙ্গীর। এদের সঙ্গী বিজিপ্রেসের ওই কর্মচারী ও নরসিংদীর এক স্কুলশিক্ষককে গোয়েন্দারা আটকের চেষ্টা করছে বলে জানান কর্মকর্তারা। সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, চক্রটি বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্ন ফাঁস করে তা টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীর কাছে বিক্রি করে আসছিল। চক্রটি দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করত। ইকরাম হোসেন উভয় গ্রুপের সঙ্গে ছিল। ফেসবুকে তার ‘আহমেদ নিলয়’ নামে আইডি রয়েছে। তাদের কাজের বিবরণ দিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, এদের সঙ্গে বিজিপ্রেসের এক অসাধু কর্মচারী জড়িত। প্রশ্নপত্র যখন ছাপা হয় তখন সে প্রশ্ন মুখস্থ করে জুয়েল নামের একজনকে লিখে দেয়। জুয়েল লিখে দেয় সাত্তারকে। সাত্তার দেয় হৃদয়কে। আর হৃদয় দেয় আহমেদ নিলয়ের কাছে। নিলয় ফেসবুকে তার বিপণন করে ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা বুঝে নেয়। তাদের দেয়া প্রশ্ন শতভাগ না মিললেও অনেক প্রশ্নই অনেক সময় মিলে যায় বলে জানান তিনি। ফেসবুক ছাড়াও হোয়াটসএ্যাপেও এভাবে প্রশ্ন বিক্রি হতো জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, হোয়াটসএ্যাপে তাদের আট জনের একটি গ্রুপ আছে। এই গ্রুপে তারা আসল প্রশ্নপত্র নয় এমন প্রশ্নপত্র শেয়ার করে। পরে দরদাম ঠিক হয়ে বিকাশে টাকা এলে আল আমিন তা ক্রেতাকে দিত। সম্প্রতি শেষ হওয়া উচ্চ মাধ্যমিকের তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলাকালেও তারা এ কাজ করেছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্যরা এই ধরনের তথ্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে দিলে তারা অভিযান চালিয়ে এই প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে ২০১৬ সালের উচ্চ মাধ্যমিকের রসায়ন (দ্বিতীয় পত্র), হিসাববিজ্ঞান (প্রথম পত্র), পদার্থ বিজ্ঞান (সৃজনশীল), জীববিজ্ঞান (দ্বিতীয় পত্র) ইত্যাদি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র এবং ১০টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। আটক আহমেদ নিলয়কে নিয়ে জনকণ্ঠের প্রতিবেদন প্রকাশ হয় আগেই ॥ এবার এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আহমেদ নিলয় নামের একটি আইডি থেকে রীতিমতো ঘোষণা দিয়েই ফাঁস করা হচ্ছিল প্রশ্ন। বিষয়টি প্রথমেই সরকারের নজরে এনেছিল জনকণ্ঠ। তথ্য-প্রমাণসহ প্রতিবেদন প্রকাশের পর শোরগোল পড়ে যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডে। এক পর্যায়ে ঘটনা তদন্তে নামে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। অধিদফতর জনকণ্ঠের প্রতিবেদনের তথ্য গ্রহণ করে বলেছে, এ অবস্থায় বিষয়টি তদন্ত করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, তদন্ত করার জন্য অধিদফতরের উপপরিচালক (কলেজ-২) মেজবাহ উদ্দিন সরকার ও সহকারী পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) আশেকুল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিবেদন প্রকাশের পরই বিষয়টি নজরে আসে মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুনের। এরপর তার নির্দেশেই গঠন করা তদন্ত কমিটি। জনকণ্ঠ পত্রিকায় ‘পরীক্ষার আগেই এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁস’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। যেখানে এক প্রতারকের বীরদর্পে ফাঁস করা প্রশ্নের নমুনা দেয়া হয়। দেখা গেছে আহমেদ নিলয় নামে একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন ‘প্রতিদিনের মতো আজকের সকাল বেলা প্রশ্ন সবাইকে ফ্রি দিলাম, শুধু প্রমাণ দেয়ার জন্য। পরীক্ষার হল থেকে এসে মিলিয়ে নিও। আর যারা আগের দিন ১০,০০০ টাকা দিতে পেরেছো তাদেরকে একদিন আগে এই প্রশ্নটা দিয়েছিলাম। হ্নঅনেকেই বিশ্বাস করতে পারনি তাদের কাছে প্রমাণ দেয়ার জন্য দিলাম।’ রীতিমতো ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে এভাবেই চলমান এইচএসসি পরীক্ষার একের পর এক প্রশ্ন ফাঁস করা হয়। সরকারের সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষা কর্মকর্তা এমনকি বিটিআরসি কেউই অপরাধীর নাগাল পাচ্ছিল না। পর পর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কয়েকটি পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল ৯টা থেকে ৯টা ৫ মিনিটের মধ্যে ফেসবুকে মূল প্রশ্নের ছবি তুলে হুবহু প্রশ্ন ছেড়ে দেয়া হয়, যেখানে ঘোষণা দিয়েই পরপর একই কাজ নির্বিঘেœ করে যাচ্ছিলেন অপরাধীরা। পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগেই ফেসবুকে ওই নিলয়ের টাইমলাইনে সর্বশেষ জীববিজ্ঞান প্রশ্নপত্রটি পাওয়া যাচ্ছিল। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ফেসবুকে প্রকাশ করা প্রশ্নের হুবহু মিলও পাওয়া গেছে। আহমেদ নিলয় নামের ওই ব্যক্তি তার ফেসবুক পেজে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ঠিক সকাল ৮ টা ৫০ মিনিটে আপলোড করেছিলেন। তিনি তার ফেসবুকে বুয়েট ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। তবে বুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ্র জ্যোতি টিকাদার জানান, তাদের সংগঠনে এই নামের কেউ নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এই ব্যক্তি কেবল নিজের পরিচয় বলাতেই মিথ্যার আশ্রয় নেননি, একই সঙ্গে ফেসবুকে যে ছবি ব্যবহার করেছেন তাও অন্যের। ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে অপরাধীরা মূলত সরকারকে বিব্রত করতে চায় বলেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। শুভ্র জ্যতি টিকাদার বলেন, আহমেদ নিলয় নামের এই ছেলেটার ফেসবুক আমিও দেখেছি। সে বুয়েট ছাত্রলীগ দফতর সম্পাদক পরিচয় দিয়ে ফেসবুক আইডি খুলেছে। এটা একটি ফেক আইডি। জানা গেছে, অপরাধী ছবি ব্যবহারেও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিল। মেজবাউল করিম অপু নামের এক যুবকের ছবি ব্যবহার করে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে ‘আহমেদ নিলয়’ নামের একটি ফেসবুক এ্যাকাউন্ট। বিষয়টি জেনে এরই মধ্যে ওই যুবক এ বিষয়ে পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি(নম্বর ১৪৬৫) করেছেন। ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, কোন এক ব্যক্তি আমার ছবি ব্যবহার করে অপকর্ম করছে। অনলাইন নিউজ পেপারের মাধ্যমে তা জানতে পেরেছি। এদিকে পরীক্ষা হলেই প্রশ্ন ফাঁস যেন একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। অনেকে ক্ষেত্রে প্রশ্ন ফাঁস না হলেও ভুয়া প্রশ্নের বিনিময়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতারকরা। পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা থেকে শুরু করে, সকল নিয়োগ পরীক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা কোনটিই এখন সঙ্কটমুক্ত নয়। পরীক্ষা হলেই প্রশ্ন ফাঁস, না হয় প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়িয়ে দেশজুড়ে প্রতারণা। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে অস্থিরতাও। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, কয়েক ক্ষেত্রে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় মানুষ আস্থা হারিয়েছে। এখন এই আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়াতে প্রশ্ন ফাঁস ও প্রতারনার অন্যতম কারন অভিহিত করে শিক্ষাবিদরা বলছেন, এখন প্রশ্ন ফাঁস না হলেও পরীক্ষায় মানুষের আস্থা নেই। তাই পরীক্ষার বিষয়ে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। প্রশ্ন ফাঁসে শিক্ষকরাও জড়িয়ে পড়ছেন ॥ সঙ্কট এদিকে নতুন মোড় নিয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসে গত এক বছরে দেখা গেছে, অপকর্মে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছেন খোদ অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকরাই। পরীক্ষার শুরুর দুই-তিন ঘণ্টা আগেই বান্ডিল খুলে প্রশ্নের উত্তর ঠিক করে শিক্ষকরাই পৌঁছে দিচ্ছেন পরীক্ষার্থীদের কাছে! গত এক বছরে এইচএসসি পরীক্ষায় রাজধানীতে এমন ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন নামীদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন ফাঁস করে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার কেলেঙ্কারিতে সম্প্রতি ফেঁসে গেছে রাজধানীর ডেমরার গোলাম মোস্তফা মডেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। টানা তিন বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষায় একই অপকর্ম করে প্রতিষ্ঠানের পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তি প্রায় শতভাগ নিয়ে এলেও শেষ পর্যন্ত প্রমাণসহ ধরা খেল গবর্নিং বডির সভাপতি, সদস্য, অধ্যক্ষসহ পুরো চক্র। এইচএসসিতেও নির্দিষ্ট সময়ের তিন ঘণ্টা আগেই এখানে পরীক্ষা নেয়ার প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরীক্ষার দিন ভল্ট থেকে প্রশ্ন বের করে সকাল সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের হলরুমে একত্র করে প্রশ্নের সমাধান করা হয়েছে। প্রমাণ মিলেছে গত বছরও নির্ধারিত সময়ের আগে পরীক্ষা নিয়ে ৬০ জনের মধ্যে ৫৯, অর্থাৎ ৯৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পেয়েছিল। শাস্তিহীনতাই প্রশ্ন ফাঁসের বড় কারণ ॥ ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রকাশ বা বিতরণের সঙ্গে জড়িত থাকলে শাস্তি ন্যূনতম তিন বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ।ডসহ অর্থদ-।’ পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন ১৯৮০ এবং সংশোধনী ১৯৯২-এর চার নম্বর ধারায় স্পষ্ট করে এই শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো আইন প্রণয়নের পর পাবলিক, বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় শতাধিকবার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটলেও এক মাস শাস্তিরও নজির নেই কোন অপরাধীর। কেলেঙ্কারির পর পরীক্ষা স্থগিত করে অন্তত ৩৪ বার তদন্ত কমিটি গঠন করে সঙ্কট সমাধানের সুপারিশ করা হলেও আজ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি একটি সুপারিশও। ফলে একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁস শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাগাতার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ম্লান হতে বসেছে সরকারের অনেক অর্জন। জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শেখ একরামূল কবীর বলছিলেন, আসলে শিশুদের পরীক্ষা নিয়েও এখন একটি মহল ভুয়া প্রশ্ন ছেড়ে দিয়ে বাণিজ্য করে। তার পরও বিভিন্ন সময় কিছু পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় মানুষ আস্থা হারিয়েছে। এই আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে আস্থা হারিয়েছে বলে সকল পরীক্ষা নিয়েই গুজবে কান দেয়া ঠিক নয়। তিনি বলেন, আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুরো প্রক্রিয়াকে মানুষের কাছে আরও স্বচ্ছ করতে হবে। একটি জাতীয় কমিটি করা যেতে পারে। যে কমিটি করলে মানুষের আস্থা বাড়বে। তবে এই কমিটি কোন প্রশ্ন দেখতে পারবে না। তারা পরীক্ষা মনিটরিং করবে। অপরাধীরা ধরা পড়ছে, এটা একটা ইতিবাচক দিক।
×