ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন রূপে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লীগ

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১০ জুন ২০১৬

নতুন রূপে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লীগ

স্পোটর্স রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে বর্তমানে যে ফুটবল লীগ হয়, সেটা তেমন আকর্ষণীয় হয় না। দর্শকরাও ঠিকমতো মাঠে আসে না। কিন্তু একটি পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এই প্রথা ভাঙতে চায়। লীগটা শুধু ঢাকায় না রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে চায় তারা। সেই লক্ষ্যে আগামী ৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) স্বত্ব কিনে নিয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক। বার্ষিক ৪ কোটি টাকায় প্রতিষ্ঠানটি এ স্বত্ব কিনে নেয়। বৃহস্পতিবার এক সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। নতুন চুক্তি অনুযায়ী ঢাকাসহ সারা দেশের ৬ ভেন্যুতে প্রিমিয়ার লীগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আর বিপিএলের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ স্পন্সরশিপ মানি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে মাঠে গড়াবে ২০১৫-১৬ মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল। গত বছর ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় এই আসরের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল ফ্যাশন হাউস মান্যবর। এবার লীগের পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকা বদল হচ্ছে। দৃশ্যপটে এসেছে সাইফ পাওয়ারটেক। তবে এক বছরের জন্য নয়, টানা পাঁচ বছর লীগ চালাবে এই প্রতিষ্ঠানটি। তবে ঈদ ও অন্যান্য কারণে লীগ শুরু হতে ৩/৪ দিন দেরির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন বাফুফের পেশাদার লীগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী। উল্লেখ্য, বিপিএল শুরুর তারিখ ছিল আগামী ১৫ জুলাই। লীগের টিকেট বিক্রি থেকে সাইফ পাওয়ারটেক লভ্যাংশ পাবে ৭৫ এবং বাফুফে, জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা পাবে ২৫ শতাংশ। লীগের মিডিয়া পার্টনারও থাকবে। লীগের সিংহভাগ খেলাই হবে ঢাকার বাইরে, যার সবই বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। খেলা হবে ২২ রাউন্ডের। সপ্তাহে কমপক্ষে ৬ দিনই খেলা হবে। বাফুফে লীগের স্বত্ব বিক্রি করলেও টেকনিক্যাল সাপোর্ট, ম্যাচ কমিশনারসহ ম্যাচ সংক্রান্ত সবকিছুর স্বত্ত্ব থাকছে বাফুফের হাতেই। এবারের লীগের খেলা হবে একটু ভিন্ন পদ্ধতিতে। এক ভেন্যুতে এক রাউন্ডের খেলা হবে। সেখানে ১২ দলই গিয়ে হাজির হবে। তারপর খেলা শেষ হলে তারা অন্য ভেন্যুতে চলে যাবে। এভাবে প্রতি ভেন্যুতেই পর্যায়ক্রমে মোট ১২২টি খেলা হবে। গত মৌসুমে মান্যবর প্রিমিয়ার লীগের স্পন্সরশিপ বাবদ বাফুফেকে দিয়েছিল এক কোটি টাকা। এক্ষেত্রে সাইফ পাওয়ারটেক বাফুফেকে দেবে চার কোটি টাকা। পাঁচ বছরে চার কোটি টাকা হারে মোট বিশ কোটিতে লীগের স্বত্ব কিনেছে তারা। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে চেয়েছিল আগামী বছর থেকে লীগের সঙ্গে যুক্ত হতে। কিন্তু চলতি বছরের শেষদিকে বাংলাদেশ সুপার লীগ (বিএসএল) থাকায় (যদিও ভেন্যু সমস্যার কারণে এটি স্থগিত হয়ে গেছে) আগেভাগেই বাফুফের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী হয় তারা। কারণ সুপার লীগের প্রধান পৃষ্ঠপোষকও তারাই। বাফুফে জানিয়েছে, এবারের লীগ হবে ৬ ভেন্যুতে। যদিও মোট সাত ভেন্যুকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। পরে একটি ভেন্যুকে বাদ দেয়া হবে। ভেন্যুগুলো হলোÑ ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, সিলেট জেলা স্টেডিয়াম, রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়াম, বরিশাল জেলা স্টেডিয়াম, ময়মনসিংহের জেলা স্টেডিয়াম এবং গোপালগঞ্জের শেখ মনি ফজলুল হক স্টেডিয়াম। প্রথম চার স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইট আছে। রাজশাহীরটায় ফ্লাডলাইট থাকলেও এর সংস্কার কাজ করবে সাইফ পাওয়ারটেক। দর্শকপ্রিয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, স্প্যানিশ লীগ, জার্মান বুন্দেসলিগা, ইতালিয়ান সিরি এ লীগের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগটাও জনপ্রিয় করে তুলতে চায় সাইফ পাওয়ারটেক। এ লক্ষ্যে, তারা কোটি টাকা খরচ করে ফুটবলের হারানো গৌরবই শুধু ফিরিয়ে আনতে চায় না, ফুটবলকে লাভজনক পর্যায়েও নিয়ে যেতে চায়। এখন দেখার বিষয়, নতুন রূপে, নতুন স্বপ্ন নিয়ে কতটা সফল হয় ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ২০১৫-১৬ মৌসুম।
×