ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্রাম শেষে মিরপুরে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় মুস্তাফিজ

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১০ জুন ২০১৬

বিশ্রাম শেষে মিরপুরে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় মুস্তাফিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান এখন শুধু ‘স্টার’ই নন, যেন ‘সুপার স্টার’! যেখানে তাকে দেখা যাচ্ছে, ভক্ত-সমর্থকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। তাকে এক পলক দেখার চেষ্টা করছেন। ‘মুস্তাফিজ, মুস্তাফিজ’ বলে চিৎকার করছেন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার দুপুরেও ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই ঘটার কথা না! এদিনই যে মিরপুরে মুস্তাফিজকে ফিট করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সাতক্ষীরা থেকে ফিরে মুস্তাফিজ শুরু করে দিয়েছেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। মুস্তাফিজের সমস্যাগুলো আসলে কী? যে কারণে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে? যতদূর জানা গেছে, হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে ভুগছেন মুস্তাফিজ। আইপিএল খেলার আগে থেকেই এ সমস্যা ছিল। আইপিএল খেলে এ সমস্যা আরও বেড়েছে। এর সঙ্গে আইপিএল চলাকালে ঠিক মতো না খাওয়ায় ওজনও কমে গেছে। ২ কেজি ওজন কমেছে। যা বাড়তে হবে। এ্যাঙ্কেলে নিচের দিকেও খানিক সমস্যা রয়েছে। এ তিন সমস্যা দূর করার জন্যই এখন ফিজিও-চিকিৎসকরা কাজ করবেন। যা দূর হতে অন্তত ১০ দিন সময় লাগবে। এমনও হতে পারে তিন সপ্তাহও লেগে যেতে পারে। আইপিএল খেলে ৩০ মে দেশে ফিরে পরদিনই সাতক্ষীরায় পরিবারের কাছে যান মুস্তাফিজ। ৯ দিন সাতক্ষীরায় থেকে বুধবার রাতে ঢাকায় ফেরেন মুস্তাফিজ। বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়ে যায় পুনর্বাসন। মুস্তাফিজকে ফিট করাও শুরু হয়ে যায়। নিজেকে ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে দুপুর ১২টার দিকে মিরপুরে আসেন এ পেসার। প্রথম দিনের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় মুস্তাফিজ জিমে কিছুটা সময় কাটান। ফিজিওর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন প্রায় দুই ঘণ্টা করে এই পেসারকে ইনজুরি কাটাতে কাজ করতে হবে। শুরুতে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ দিন টানা চলবে মুস্তাফিজের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। টানা খেলার কারণে ইনজুরিতে পড়া মুস্তাফিজকে বিসিবির ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম পরীক্ষা করেন। তিনি জানান, মুস্তাফিজের অবস্থা আগের চেয়ে বেশ ভাল। আগামী সপ্তাহে আবারও তার পরীক্ষা করা হবে এবং রিপোর্ট দেয়া হবে। আইপিএল চলাকালীন সময় মুস্তাফিজ হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়েন। একটি ম্যাচও খেলতে পারেননি। এখন মুস্তাফিজের অপেক্ষায় আছে কাউন্টি দল সাসেক্স। তবে কবে মুস্তাফিজকে পাবে সাসেক্স তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কাউন্টি দল সাসেক্সের অধিনায়ক লুক রাইট বলেছেন, ‘আমরা মুস্তাফিজের অপেক্ষায় আছি। আমরা খুবই ভাগ্যবান। ডেভিড উইসি ক্যারিবীয়ান প্রিমিয়ার লীগে খেলতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা তাকে রেখে দিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি না মুস্তাফিজুরের হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি বর্তমান কি অবস্থা। তবে আমরা তার (মুস্তাফিজের) জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করি তার শারীরিক অবস্থা খারাপ না।’ মুস্তাফিজকে কাউন্টিতে দেখতে চান কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহেও। কোচ এ নিয়ে বলেছেনও, ‘আমি মনে করি ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে খেললে মুস্তাফিজ উপকৃত হবে। কাউন্টিতে যদি তারা বাংলাদেশের চার পেসারকেও নিত তাহলে চারজনকেই পাঠিয়ে দেয়ার পক্ষে আমি সায় দেব। মুস্তাফিজুর রহমানকে যেহেতু কাউন্টির সাসেক্স দল নিয়েছে, আমি চাই শরীর ফিট হলে সে সেখানে খেলুক।’ সেই ফিটনেসই পুরোপুরি ফিরে পাচ্ছেন না মুস্তাফিজ। তাই তো তাকে বিশ্রামে রাখার পক্ষেই বিসিবি। সম্প্রতি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘কোচ মনে করেন, ও কাউন্টি ক্রিকেটে খেললে আমাদের জন্য ভাল। সামনে আমাদের ইংল্যান্ডে খেলা আছে। মুস্তাফিজ যে অভিজ্ঞতা অর্জন করবে সেটা আমাদের কাজে আসবে। তবে ওর ফিটনেসটাই সবার আগে। এখন পর্যন্ত আমরা যে রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে ওর ফিজিক্যাল কন্ডিশন অত ভাল না। আমরা খুব একটা ঝুঁকি নেব না। যদি দেখি ও ফিট আছে, তাহলে খেলতে যেতে পারবে। এখন আপাতত বিশ্রামে আছে। চার-পাঁচদিন পর ঢাকায় আসবে। আবার ইভাল্যুয়েশন হবে, ওকে একটা প্রোগ্রাম দেয়া হবে। পরবর্তী ইভাল্যুয়েশনের আগে সঠিক করে বলা কঠিন হবে।’ সাসেক্সকে তাই অপেক্ষাতেই থাকতে হচ্ছে। শুরুতে ১০ দিন চলবে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। এরপর আবার বোলিং করার বিষয়ওতো আছে। তা ঠিকমতো করতে পারলেই না খেলতে পারবেন মুস্তাফিজ। সেই খেলা যেন ঠিকমতো করতে পারেন, বল হাতে যেন ‘কাটার’ মারতে পারেন; এজন্যই নিজেকে ফিট করার প্রক্রিয়া বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে দিয়েছেন মুস্তাফিজ।
×