ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

অমিতাভ রেজার আয়নাবাজি

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ৯ জুন ২০১৬

অমিতাভ রেজার আয়নাবাজি

বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বিজ্ঞাপন নির্মাতার নাম অমিতাভ রেজা। অমিতাভ রেজা প্রায় হাজারখানেক টেলিভিশন বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেছেন। বিজ্ঞাপন নির্মাণের পাশাপাশি তিনি নাটকও নির্মাণ করেন। আয়নাবাজি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ছোটবেলা থেকেই তার চলচ্চিত্র নিয়ে আগ্রহ এবং বড় হয়ে চিত্র পরিচালক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। অমিতাভ রেজা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ভারতের বিখ্যাত পুনে ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু চলচ্চিত্রের প্রতি প্রচ- আগ্রহের কারণে তিনি ইকোনমিক্সের পরিবর্তে ফিল্ম এ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে পড়াশোনা করেন। তবে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার আগেই তিনি দেশে ফিরে আসেন। ২০০১ সালে হাওয়া ঘর নাটকের মাধ্যমে তার নাট্য নির্মাণ শুরু হয়। হাওয়া ঘরের চিত্রনাট্য তিনি পুনেতে থাকাকালীন সময়েই লিখেছিলেন। দেশে ফিরে তিনি মাছরাঙা প্রোডাকশন থেকে একুশে টেলিভিশনের জন্য হাওয়া ঘর নির্মাণ করেন যা দর্শক সমাদৃত হয়। ফলে তিনি বিজ্ঞাপন নির্মাণের সুযোগ পান। অবশ্য এ বিজ্ঞাপন নির্মাণের কারণে তার আর চলচ্চিত্র সম্পাদনা বিষয়ে পড়াশোনা করা হয়ে উঠেনি। তিনি প্রায় আটটি টেলিভিশন নাটক নির্মাণ করেন। হাওয়া ঘর এবং ‘একটি ফোন করা যাবে প্লিজ’ নাটকের জন্য তিনি মেরিল প্রথম আলো শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা পুরস্কার লাভ করে। অমিতাভ রেজা তার বিজ্ঞাপন নির্মাণ কাজের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন- এর নাম হাফ স্টপ ডাউন। এছাড়া তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে আসবেন এমন কথা বহুদিন ধরে শোনা গেলেও তা বাস্তবে রূপ পেতে অনেক সময় নেয়। ২০১৩ সালে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের উদ্যোগে বুটিক সিনেমার কথা ঘোষণা করা হয় যেখানে অমিতাভ রেজাও ‘প্রক্সি’ শিরোনামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বুটিক সিনেমাই বন্ধ হয়ে যায়। অমিতাভ রেজা ২০০৭ সালে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন মডেল তারকা জেনিকে। চার বছর সংসার করার পর তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। ২০১০ সালে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে যায়। পরবর্তীতে অমিতাভ আবারও গোপনে বিয়ে করেন। প্রথম বিবাহ বার্ষিকীর কেক কাটার ছবি শেয়ার করার মাধ্যমে তার এ বিয়ের খবর জানা যায়। তার দ্বিতীয় স্ত্রী জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী মিথিলার ছোট বোন মিম। অমিতাভ রেজার পৈতৃক বাড়ি কিশোরগঞ্জে, তবে তিনি জন্মেছেন ১৯৭৬ সালের ১ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নানা বাড়িতে এবং বড় হয়েছেন ঢাকার ভূতের গলিতে। অমিতাভ রেজা জানান, আয়নাবাজি ছবির গল্প আয়না নামে একজন অভিনয় শিল্পী আয়নাকে কেন্দ্র করে। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে তার একটি নাটকের দল আছে। প্রেমে পড়ে হৃদির। জীবনের তাগিদে তাকে পা দিতে হয় এক নতুন শহরে। বদলে যায় সে। এই চরিত্রে মনপুরাখ্যাত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করেছেন। তার বিপরীতে আছেন নাবিলা। একটি বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে পার্থ বড়ুয়াকে। সিনেমাটির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন গাউসুল আলম শাওন, হীরা চৌধুরী, সোহেলসহ অনেকে। কনটেন্ট ম্যাটারস লিমিটেড প্রযোজিত ও হাফ স্টপ ডাউন লিমিটেডের নির্মিতব্য ‘আয়নাবাজি’। চলচ্চিত্রের কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন গাউসুল আলম শাওন। সংলাপ লিখেছেন অনম বিশ্বাস ও আদনান আদীব খান। চিত্রগ্রহণে থাকছেন রাশেদ জামান। পরিচালক জানিয়েছেন বাণিজ্যিক বা আর্টফিল্ম কোনটাই হবে না আয়নাবাজি। বরং তিনি সব শ্রেণীর দর্শকের জন্য সিনেমা নির্মাণ করতে চান। ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি প্রসঙ্গে জানান, ভারতীয় চলচ্চিত্র আমাদের কিছুই করতে পারবে না। তার ভাষায় ভারতীয় চলচ্চিত্র আসলেও আমরা নিজেদের চলচ্চিত্র দিয়ে টিকে থাকব। এখন অপেক্ষার পালা। ‘আয়নাবাজি’ মুক্তি পাবে শীঘ্রই।
×