ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ জিতলেই সর্বশেষ দল হিসেবে সুপার লীগে গাজী গ্রুপ

জামালকে বিদায় করে সুপার লীগে মোহামেডান

প্রকাশিত: ০৭:০০, ৯ জুন ২০১৬

জামালকে বিদায় করে সুপার লীগে মোহামেডান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও আবাহনী লিমিটেডের পর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবও বুধবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের সুপার লীগে খেলা নিশ্চিত করে নিয়েছে। ‘সাদা-কালো’ শিবির শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৫৮ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে হারিয়েছে। এই জয় পেয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম দল হিসেবে সুপার লীগে উঠেছে মোহামেডান। হারে শেখ জামালের বিদায় ঘণ্টা বেজেছে। সুপার লীগে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। তবে এখনও সুপার লীগের ৬ দলের একটি মিলেনি। বাকি একটি দল নির্ধারণ হবে আজ। বুধবার আরও দুটি ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির জন্য তা হতে পারেনি। আজ হবে। ম্যাচগুলো শেষ হতেই সুপার লীগের শেষ দলটি মিলে যাবে। বুধবার যে একটি ম্যাচ হয়েছে, তাতে বাজিমাত করেছে মোহামেডানই। টস জিতে ফিল্ডিং নেয় মোহামেডান। এ ম্যাচে বৃষ্টির বাগড়া হয়। সকাল ৯টায় খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১১টায় শুরু হয়। সেই সঙ্গে ৫০ ওভার থেকে ৮ ওভার করে কমিয়েও দেয়া হয়। ৪২ ওভারে খেলা হয়। নির্ধারিত ওভারে ভারতের পাঞ্জাবের বিপুল শর্মার (৪/২৪) স্পিন ঘূর্ণির সামনে কুপোকাত হয়ে যায় শেখ জামাল ব্যাটসম্যানরা। ৪২ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৮৭ রান করতে সক্ষম হয়। জবাবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসে আবার জ্বলে ওঠেন মোহামেডান অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান নাঈম ইসলামও দেখান ব্যাটিং ঝলক। মুশফিকের অপরাজিত ৬৬ ও নাঈমের ৫১ রানে ৩২.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান করে সহজ জয়ই পায় মোহামেডান। লীগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে এসে সুপার লীগে খেলাও নিশ্চিত করে নেয়। এখন আরেক দলের সুপার লীগে খেলা নিশ্চিত করার পালা। বিকেএসপিতে রূপগঞ্জ ও ব্রাদার্স ম্যাচটি বৃষ্টির জন্য হয়নি। মাঠ খেলার অনুপযোগী। তাই একটি বলও মাঠে গড়াতে পারেনি। রিজার্ভ ডে’তে গড়িয়েছে ম্যাচ। ম্যাচটিতে জিতলে রূপগঞ্জ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে চলে যাবে। আর ব্রাদার্স জিতলেও কোন লাভ নেই। কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি ও ক্রিকেট কোচিং স্কুলের সঙ্গে রেলিগেশন খেলার সম্ভাবনা তাদেরই সবচেয়ে বেশি। এ ম্যাচটি নিয়ে তাই স্বাভাবিকভাবেই কারও আগ্রহ নেই। তবে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ভিক্টোরিয়া-গাজী গ্রুপের ম্যাচের দিকে সবারই দৃষ্টি থাকছে। প্রথম কারণ, হঠাৎ করেই মঙ্গলবার রাতে সিসিডিএম সিদ্ধান্ত জানায়, অনিবার্যকারণবশত ম্যাচটি বৃহস্পতিবার হবে। এখানে গাজী গ্রুপ সুবিধা নেয়ার সম্ভাবনার গুঞ্জনই ভাসছে। সিসিডিএমের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টি মাঠ খেলার অনুপযোগী বলেই এ ম্যাচের সূচী পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকি দুই ম্যাচের দলগুলো তাদের বিদেশী ক্রিকেটার ধরে রাখতে বুধবারই খেলতে চেয়েছে। না হলে বুধবারের সবম্যাচই বৃহস্পতিবার হত। এরপরও গাজী গ্রুপের সুবিধা নেয়ার কথাই শোনা যাচ্ছে। এখন দেখা যাক, গাজী গ্রুপ কি করতে পারে। দ্বিতীয় কারণ, এ ম্যাচটির ওপরই সুপার লীগের ষষ্ঠ নাম্বার দলটি মিলবে। যদি গাজী গ্রুপ হারে তাহলে প্রাইম ব্যাংক উঠে যাবে সুপার লীগে। আর গাজী গ্রুপ জিতলে তারাই খেলবে সুপার লীগে। ষষ্ঠ নম্বর দলটি তখন গাজী গ্রুপই হবে। প্রথমত, লীগ পর্বে প্রাইম ব্যাংককে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ। ‘হেড টু হেডে’ এগিয়ে রয়েছে। আবার রানরেটেও এগিয়েই আছে গাজী গ্রুপ। এখন দেখা যাক কি হয়। মোহামেডানের সেই চিন্তা নেই। শুরুতে চমক জাগানো দলটি সুপার লীগ খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিল। অবশেষে সুপার লীগ খেলবে মোহামেডান। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মোহামেডানের বোলাররা বুধবার যে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন, তাতেই আত্মবিশ্বাস দেখা গেছে। সেই আত্মবিশ্বাস ব্যাটসম্যানদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় উইকেটে মাহবুবুল করিম ও মার্শাল আইয়ুব মিলে ৫৬ রানের, পঞ্চম উইকেটে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নাজমুস সাদাত মিলে ৪২ রানের ও অষ্টম উইকেটে জাবিদ হোসেন ও বোলার হয়ে ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠা শফিউল ইসলাম ৪৫ রানের জুটি না গড়লে আরও কম রান স্কোরবোর্ডে জমা হত। শেখ জামালের হার আরও আগেই হয়ে যেত। জিতলে মোহামেডানের সামনে ওভার প্রতি পাঁচের কম রান নিতে হবে। এ কি আর খুব আহামরি কিছু! মোটেও না। তাই বুঝিয়ে দিলেন মুশফিক ও নাঈম। তবে অর্ধশতক করে, ৫২ বলে ৮ চারে ৫১ রান করে যে নাঈম আউট হয়ে যান, তখন খানিকটা চাপে পড়ে মোহামেডান। কিন্তু ততক্ষণে ২১.১ ওভারে ১১১ রান হয়ে যায়। তাই স্বস্তি থাকে। দুই উইকেট ৩৮ রানে পড়ে যাওয়ার পর মুশফিক-নাঈম জুটি গড়েন। তৃতীয় উইকেটে দুইজন মিলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন। যা মোহামেডানকে জয়ের সুবাতাস পাইয়ে দেয়। এরপর বিপুল শর্মাও ৩৪ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। ততক্ষণে ম্যাচ জিততে ৭ রানের দরকার থাকে মোহামেডানের। আরিফুল হক নেমে ৫ রান নেন। মুশফিক শেষ পর্যন্ত ৮২ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৬৬ রান করে ম্যাচই জিতিয়ে দেন। মোহামেডানকে সুপার লীগেও ওঠান। মুশফিকের ‘ভায়রা’ মাহমুদুল্লাহ একাই যেন দলকে জেতাতে চেষ্টা করে যান। বল হাতে ৩ উইকেট নেন। তবে হেরে শেখ জামালের এবার ঢাকা লীগ যাত্রা এখানেই শেষ হয়ে যায়। স্কোর ॥ শেখ জামাল ইনিংস ১৮৭/৮; ৪২ ওভার (মামুন ১, মাহবুবুল ২৯, মার্শাল ২৭, মাহমুদুল্লাহ ২৭, মুক্তার ৪, নাজমুস ২৫, জাবিদ ২৮, আরাফাত ৫, শফিউল ২৫*, মাসুদ ৩*; বিপুল ৪/২৪)। মোহমেডান ইনিংস ১৮৮/৪; ৩২.২ ওভার (এজাজ ৮, হাবিবুর ১৫, নাঈম ৫১, মুশফিক ৬৬*, বিপুল ৩৪, আরিফুল ৫*; মাহমুদুল্লাহ ৩/৫২)। ফল ॥ মোহামেডান ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ বিপুল শর্মা (মোহামেডান)।
×