ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাগরে আধিপত্য মানব না

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৯ জুন ২০১৬

সাগরে আধিপত্য মানব না

কোন দেশেরই এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আধিপত্য কায়েম করা উচিত নয় এবং বেজিংকে দক্ষিণ চীন সাগর ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং তাদের মিত্র ও বন্ধুদের উপস্থিতি মেনে নিয়েই বাস করতে হবে। ওয়াশিংটনে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আলোচনাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত চীনের কাছে এ সুস্পষ্ট বার্তাই পাঠিয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে দু’পক্ষ জানায় যে, ভারত ৩৪ সদস্যের মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিশের (এমটিসিআর) সদস্য হওয়ার পক্ষের সব বাধা দূর করেছে। চীন এ ক্ষেপণাস্ত্র বিস্তার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সদস্য নয়। এতে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির প্রতি আপত্তি জানানোর সর্বশেষ দিন ছিল সোমবার এবং কেউই তা জানায়নি। মার্কিন প্রশাসনের এক উর্ধতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন যে, ভারতকে এমটিসিআরের সদস্য করতে এক রাজনৈতিক ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে এবং কিছু টেকনিক্যাল ইস্যুর নিরসন যার আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। চলতি মাসের শেষদিকে নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ারস গ্রুপের (এনএসজি) পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এতে ভারতের অন্তর্ভুক্তিতে সহায়তা করা ওয়াশিংটনের জোর লক্ষ্য। এমটিসিআর সদস্যরা এনএসজিরও মূল অংশ বলে বেজিংয়ের প্রতি বার্তাটি পরিষ্কার : নয়াদিল্লীর পক্ষে চীন বাদে এনএসজির সংখ্যাগরিষ্ঠ, সম্ভবত সব সদস্যের সমর্থন রয়েছে। চীন পাকিস্তানকে ওই ক্লাবের সদস্য বানানোর চেষ্টায় ভারতের সদস্য লাভের পথে বাধা দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী মোদি এনএসজি সদস্য পদের জন্য সুইজারল্যান্ডের কাছ থেকে নিঃশর্ত সমর্থন পান এবং ওয়াশিংটনের পর তিনি মেক্সিকোর কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রকাশ্যেই মার্কিন সমর্থন জানিয়েছেন। মঙ্গলবারের বৈঠকের পর মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় মোদি নয়াদিল্লী এমটিসিআর এবং এনএসজি উভয় ক্লাবের সদস্যপদ লাভের প্রতি সমর্র্থনের জন্য ওবামার প্রতি প্রকাশ্যে কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন। এরপর তারা ওয়ার্কিং লাঞ্চে যোগ দেন এবং সেখানে আলোচনা চালিয়ে তাদের সঙ্গে তাদের প্রতিনিধি দলও অংশ নেয়। দ্বিপক্ষীয় সমগ্র বিষয়ে আলোচনার সময় চীনকে এক বিপজ্জনক শক্তি হিসেবেই দেখা হয়। কারণ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে চীনা শক্তি প্রদর্শন ব্যবসা-বাণিজ্য ও জ্বালানি সরবরাহের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। এ অঞ্চলে বিশ্বের শতকরা ৬০ ভাগ মানুষের বাস। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, অন্য কোন দেশকে লক্ষ্য করে এ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা হয়নি। কিন্তু আলোচনার বিষয়বস্তু ও ফলাফল এবং এ অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক রোডম্যাপ স্পষ্টত আভাস দেয় যে, ওয়াশিংটন ও দিল্লী চীনকে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরে অপ্রতিহত আধিপত্য কায়েম করতে দেবে না; সেখানে সবারই স্থান হতে হবে। বৈঠকের আগে ওবামা প্রশাসন জানিয়েছেন যে, ভারত এশিয়া নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাতা না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ভারতের প্রতিরক্ষা সমর্থ গড়ে তুলতে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোন আনুষ্ঠানিক যুক্তরাষ্ট্র-ভারত জোট গঠিত হওয়া বা নাই হোক।
×