ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রুখতে হবে জুলুমবাজি

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৯ জুন ২০১৬

রুখতে হবে জুলুমবাজি

মোঃ রিদওয়ানুর রহমান ‘দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন’ করতে হয়- কথাটি আমাদের জানা। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এখন যেন ঠিক এর উল্টো ব্যবস্থা প্রচলিত। কতগুলো শব্দ আছে যার চর্চা অমাদের সমাজে এখন নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেগুলোর অন্যতম হলো চাঁদাবাজি; শুধু চাঁদাবাজি কেন চাঁদা শব্দটি শুনলেও মানুষ এখন অস্বস্তি এবং অসহায়ত্বের নিশ্বাস ফেলে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে সামাজিক ব্যাধিতুল্য এই চাঁদাবাজি সারা বছরই চলে। কোথায় দেখতে চান এর বিচরণ- অফিস-আদালত, সড়ক-মহাসড়ক, ব্যবসা-বাণিজ্য; সবখানেই অবাধ চর্চা হচ্ছে এর। ঈদ উৎসব যত এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি। সরাসরি অস্ত্র ঠেকিয়ে তো বটেই, এর বাইরে অভিনব পদ্ধতিতে চলছে রমরমা চাঁদাবাজি। চলাচল অনেক বেড়ে যাওয়ায় সড়ক- মহাসড়ক ও জনপরিসরে নিরাপত্তার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশে। তাই পুলিশী টহল ও নজরদারি জোরদার করা দরকার। আজকাল সড়ক-মহাসড়কগুলোতে, বিশেষ করে কোরবানির সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও চাঁদাবাজিতে নেমে পড়ে এবং তা তারা করে যেন স্বাচ্ছন্দ্যেই। কখনও গরুবাহী ট্রাক আবার কখনও বা আমবাহী ট্রাকে ঈদ বকশিশের নামে তারা এসব অপকর্ম করে বেড়ায়। একজন শিক্ষিত ব্যক্তির অপকর্ম মূর্র্খ ব্যক্তির চেয়েও বেশি মারাত্মক হয়। বাংলাদেশের একশ্রেণীর আমলা ঘুষের আদলে করে যাচ্ছেন নীরব চাঁদাবাজি। টেবিলে টাকা না পড়লে লালফিতার ফাইল নড়ে না। এ যেন উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ! দেশের মানুষের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক যে বাহিনী সবচেয়ে বেশি সেটি হলো পুলিশ বাহিনী। এসপি বাবুল আক্তারের মতো চৌকস, সৎ, সাহসী পুলিশ অফিসার আছেন বলেই তো এ দেশের মানুষ কিছুটা হলেও শান্তি, সুখে দিন কাটাচ্ছেন; রেহাই পাচ্ছেন চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজদের করাল গ্রাস থেকে। চাঁদাবাজদের কখনও কখনও গ্রেফতার করা হলেও আইনের ফাঁক ফোকরে তারা সহজেই ছাড় পায় মামা-খালুর আশীর্বাদে। জেল থেকে বের হয়ে আরও ভয়ঙ্কররূপে আবির্ভূত হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আমরা আস্থা রাখতে চাই। চাঁদাবাজদের দমনে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার। এ ব্যাপারে জনসাধারণের সহযোগিতাও একান্ত জরুরী। চাঁদাবাজরা তো আর নিশাচর নয় যে রাতের আঁধারে বের হবে। প্রকাশ্যে যদি থাকে তাহলে এদের নির্মূল করা যাচ্ছে না কেন সেটাই বড় প্রশ্ন? চাঁদাবাজদের অধিকাংশেরই বড় ভাই, লাটভাই আছেন। আবার এদের অনেকেই থাকে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। চাঁদাবাজি এবং চাঁদাবাজদের রুখতে এসবই বিবেচনায় নিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×