ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

৬ দফা দিবসের আলোচনা

সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের চ্যালেঞ্জে আওয়ামী লীগই জিতবে, পরাজিত হবে অপশক্তি

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৮ জুন ২০১৬

সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের চ্যালেঞ্জে আওয়ামী লীগই জিতবে, পরাজিত হবে অপশক্তি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা বলেছেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের চ্যালেঞ্জে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগই জিতবে আর পরাজিত হবে অপশক্তি। একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা এখনও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আর এই অপশক্তিকে মদদ যোগাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। এখনও তার মদদে দেশে বিভিন্ন স্থানে হত্যাকা- ঘটছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে খালেদা জিয়ার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন কখনই পূরণ হবে না। ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগের যৌথভাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস পালন করা হয়। এদিন সকালে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ধানম-ির বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে স্থাপিত জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতির পিতার ছয়দফা কর্মসূচীর মধ্যে দেশের স্বাধীনতার বীজ লুকায়িত ছিল। ভারত-পাকিস্তানের তাসখন্দ চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক দিন পরই বঙ্গবন্ধু মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেন, ছয়দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু ৩৫ দিনে ৩২টি জনসভা করেছেন। এরমধ্যে তাঁকে আটবার গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যের প্রতি বঙ্গবন্ধু ছিলেন অবিচল। বঙ্গবন্ধুর সেই দৃঢ়চেতা মনোবল আজও তাঁকে বাংলার মানুষের মণিকোঠায় জায়গা করে দিয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তানের কারান্তরীণ থাকা অবস্থাতেও বঙ্গবন্ধু দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি তাঁর মমত্ব বোধের স্বাক্ষর রাখেন। কারাগারের পাশে তাঁর জন্য খোঁড়া কবর দেখে ভীত না হয়ে বলেছেন মৃত্যুর পরে বাঙালীর কাছে বাংলার মানুষের কাছে তাঁর মৃতদেহ যেন পৌঁছে দেয়া হয়। জীবন দিয়ে দেশকে আর দেশের মানুষকে ভালবেসেছেন বঙ্গবন্ধু। আজ তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র আজ বদলে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিশ্ব নেতারা জি-৭ সম্মেলনেও তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, যে জঙ্গীবাদ আজ বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ করছে, সেই চ্যালেঞ্জে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা জিতব আর তারা হারবে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে হরতাল পালন করতে গিয়ে মনু মিয়ারা যে রক্ত দিয়েছেন, ত্রিশ লাখ শহীদ যে রক্ত দিয়েছে তা আমরা বৃথা যেতে দেব না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ না হলে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হতো না। বাংলার মানুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তান বিলুপ্ত করা ছিল সময়ের প্রয়োজন ও ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ছয়দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু দেশের প্রতিটি জেলায় গিয়ে জনমত তৈরি করেছেন। তাকে জেল জুলুমসহ নানা নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সাহস, ধৈর্য্য আর নেতৃত্বের দৃঢ়তার কাছে কারোর তুলনা ছিল না। তিনি ধীরে ধীরে বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে ছয়দফা বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ৪৫ বছর আগে দেশ স্বাধীন হলেও এখনও পাকিস্তানীদের পেতাত্মারা রয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির পর পাকিস্তানের কর্মকা-েই তার প্রমাণ মেলে। ৪৫ বছর পরে এখনও যুদ্ধে থামেনি। এখনও একাত্তরে পরাজিত শক্তি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। তাই দেশবিরোধী শক্তির বিপক্ষে এখনও আমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। খালেদা জিয়ার মদদে যেসব গোষ্ঠী এখনও দেশে জঙ্গী কর্মকা- পরিচালনা করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ এমপির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি, আহমদ হোসেন, ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপি, হাবিবুর রহমান সিরাজ, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ। যুবলীগের আলোচনা সভা ॥ ঐতিহাসিক ছয়দফা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত যে হত্যা, গুম ও খুন-খারাবি হচ্ছে এর সঙ্গে কী বিএনপি-জামায়াত জড়িত নয়? চট্টগ্রামে এসপির স্ত্রী খুনের সঙ্গে অবশ্যই জামায়াত-শিবির জড়িত। তিনি কিছু মন্ত্রী-এমপির সমালোচনা করে বলেন, মোটা-তাজা করণ প্রকল্পে যারা আছেন তারাই নৌকা লীগ, প্রজন্ম লীগ, প্রচার লীগ বা সৈনিক লীগে বসেন। তারা গম খেয়ে পেটের ভুঁড়ি মোটা করেন। খালি খালি যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে নিয়ে কথা বলবেন না।
×