ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘ক্যালেন্ডার স্লাম’ জয়ের স্বপ্ন এবার জোকোভিচের

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ৭ জুন ২০১৬

‘ক্যালেন্ডার স্লাম’ জয়ের স্বপ্ন এবার জোকোভিচের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেনিসের চার গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের তিনটির শিরোপা জিতেছেন আগেই। শুধু ফ্রেঞ্চ ওপেনের ট্রফিটাই ছোঁয়ার বাকি ছিল তার। এবারের আগে তিনবার ফাইনালে জায়গা করে নিলেও প্রতিপক্ষের আঘাতে রোঁলা গ্যাঁরোয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নটা বার বারই চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায় তার। অবশেষে স্বপ্নের মেলবন্ধন ঘটালেন জোকোভিচ। ছোঁয়ে ফেলেন অরাধ্য সেই শিরোপার। রবিবার ফাইনালে এ্যান্ডি মারেকে হারিয়ে ফরাসী ওপেনের প্রথম ট্রফি জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে টুর্নামেন্টের শীর্ষ বাছাই নোভাক জোকোভিচ এদিন ৩-৬, ৬-১, ৬-২ এবং ৬-৪ সেটে হারান স্কটিশ তারকা মারেকে। সেই সঙ্গে ক্যারিয়ারের ১২তম গ্র্যান্ডসøাম জয়ের অসামান্য কীর্তি গড়লেন তিনি। শুধু কী তাই? ৪৭ বছর পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে জোকোভিচ এখন ‘ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ডসøাম’ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। তার আগে সর্বশেষ এই রেকর্ড গড়েছিলেন রড লেভার। ১৯৬৯ সালে সর্বশেষ একই বছরে সবকটি গ্র্যান্ডসøাম জয়ের বিস্ময়কর কীর্তি গড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এই টেনিস কিংবদন্তি। টেনিস কোর্টে এখন জোকোভিচের সময়। সেটা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কেননা গত মৌসুমেই চার গ্র্যান্ডসøামের সবকটিতে ফাইনালে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য সার্বিয়ান তারকার। এই ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে সুইস তারকা স্টানিসøাস ওয়ারিঙ্কার কাছে হেরে যান তিনি। এবার রোঁলা গ্যাঁরোতে জয় পাওয়ায় ‘ক্যালেন্ডার সøাম’ জয়ের প্রশ্নটা বারবারই উঠে আসছে জোকোভিচের সামনে। সার্বিয়ান তারকাও সাংবাদিকদের বিনয়ী উত্তর দিলেন। এ প্রসঙ্গে জোকোভিচ বলেন, ‘আমি উদ্ধত কোন শব্দ করতে চাই না। কিন্তু আমি প্রকৃতপক্ষেই মনে করি জীবনে সবকিছুই অর্জনীয়।’ ক্যালেন্ডার সøাম জিতুক কিংবা না জিতুক ২৯ বছর বয়সী এই টেনিস তারকা এখন পরিপূর্ণ। উচ্ছ্বসিত এবং দারুণ রোমাঞ্চিতও। তার মতে, ‘আপনাদের বলে বুঝাতে পারব না যে আজ এই ট্রফিটা জিততে পারায় আমি কতটা আনন্দিত। প্রকৃতপক্ষেই এখন আমি পরিপূর্ণ। আমি ক্যালেন্ডার সøাম জয়েরও চেষ্টা করব। ক্যালেন্ডার সøাম জিততে পারি কিংবা না পারি, এই মুহূর্ত থেকে অবশ্যই আমি তা জয়ের স্বপ্ন সযতেœ হৃদয়ে লালন-পালন করব।’ রোঁলা গ্যাঁরোয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মুহূর্তটাকে অভুলনীয় বলেও মন্তব্য করেছেন জোকোভিচ, ‘এটা আমার পেশাদার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত। আমি বলব ২০১১ সালে উইম্বল্ডন জয়, তার আগের বছর (২০১০) ডেভিস কাপ এবং এবার ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়ের মুহূর্তটা সম্পূর্ণই উল্লেখযোগ্য এবং অভুলনীয়। জোকোভিচের ১২ গ্র্যান্ডসøামের ছয়টিই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। তিন উইম্বল্ডন, দুটি ইউএস ওপেনে এবং একটি ফ্রেঞ্চ ওপেনে। পুরুষ এককে তার সামনে এখন কেবল তিনজন। ১৪ গ্র্যান্ডসøাম জিতে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে আছেন স্প্যানিশ টেনিস তারকা রাফায়েল নাদাল এবং আমেরিকান কিংবদন্তি পিট সাম্প্রাস। এই তালিকায় ১৭ গ্র্যান্ডসøাম জিতে সবার উপরে আছেন রজার ফেদেরার। নাদালের মতো সুইজারল্যান্ডের জীবন্ত এই কিংবদন্তি এখনও খেলাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিওবা সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না। তাই জোকোভিচ যেভাবে টেনিস কোর্টে দাপড়ে বেড়াচ্ছেন তাকে স্পর্শ কিংবা ছাড়িয়ে যাওয়াটা কেবলই সময়ের বিষয়। তবে জোকোভিচ যেভাবে খেলছেন, কোথায় গিয়ে থামেন তার সঠিক উত্তর কেবল সময়ই দিতে পারে। তবে জোকোভিচের সামনে আরও এক অনন্য অর্জনের হাতছানি। কেননা এ বছরেই ব্রাজিলে যে শুরু হচ্ছে ক্রীড়াজগতের মহাযজ্ঞ অলিম্পিক। উইম্বল্ডন আর ইউএস ওপেনের সঙ্গে যদি রিও অলিম্পিকেও স্বর্ণপদক জিততে পারেন তিনি। তাহলে স্টেফি গ্রাফের পর ‘গোল্ডেন সøাম’ জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়বেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের নাম্বার ওয়ান। ১৯৮৮ সালে সিউলে টেনিস ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন সøাম জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন জার্মান কিংবদন্তি। এবার সেই স্টেফি গ্রাফকেই ছোঁয়ার হাতছানি জোকোভিচের।
×