ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কানাডায় প্রশংসিত ‘অস্তিত্ব’

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ৭ জুন ২০১৬

কানাডায় প্রশংসিত ‘অস্তিত্ব’

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ ভাল গল্প, ভাল নির্মাণ এবং ভাল অভিনয়সমৃদ্ধ চলচ্চিত্রকে দর্শক গ্রহণ করবেই। এর প্রমাণ অনেকবার দিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভাল চলচ্চিত্র নির্মাণ কমে গেছে। এছাড়া চলচ্চিত্রের দর্শক সঙ্কটের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে দেশের হলগুলোর পরিবেশ উন্নত নয়। তবে আশার কথা এতসব অভিযোগ সত্ত্বেও কোন কোন চলচ্চিত্র বেশ ভাল করছে। দর্শকদের কাছে প্রশংসাও পাচ্ছে। বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে বিদেশী চলচ্চিত্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছে এমন চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে। এমনি একটি চলচ্চিত্র ‘অস্তিত্ব’। অনন্য মামুন পরিচালিত ‘অস্তিত্ব’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ ও নুসরাত ইমরোজ তিশা। নানা বিপত্তি পেরিয়ে শিশুদের অলিম্পিকে অংশগ্রহণের স্বপ্নপূরণে তাদের শিক্ষকের সহযোদ্ধা হয়ে যাওয়ার গল্প নিয়ে এগিয়ে গেছে চলচ্চিত্রের কাহিনী। এতে তিশাকে দেখা গেছে এক প্রতিবন্ধী তরুণীর ভূমিকায়। আর শুভ অভিনয় করেছেন তার প্রশিক্ষকের ভূমিকায়। গত ৬ মে সারাদেশে মুক্তি পায় ‘অস্তিত্ব’। জানা গেছে, প্রথমবারের মতো বিদেশের কোন প্রেক্ষাগৃহে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ‘অস্তিত্ব’। চলচ্চিত্রটি গত ২৭ মে কানাডার টরেন্টোতে মুক্তি পায়। মুক্তির পরপরই চলচ্চিত্রটি বয়ে এনেছে সাফল্য। ২৭ মে মুক্তি পেয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো টরেন্টোতে সগৌরবে চলছে ‘অস্তিত্ব’। এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্রের পরিচালক অনন্য মামুন জানান, ২৭ মে শুক্রবার ছিল ‘অস্তিত্ব’ চলচ্চিত্র প্রদর্শনের প্রথম দিন। প্রথম সপ্তাহে আমাদের চলচ্চিত্রের প্রদশর্নের সংখ্যা ছিল ২৪টি। প্রথম সপ্তাহে শুক্র, শনি ও রবিবার প্রতিদিন চারটি করে এবং সোম, মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার প্রতিদিন তিনটি করে শো প্রদর্শিত হয়েছে। একই দিনে কানাডায় মুক্তি পায় ‘এক্স-মেন’ সিরিজের ‘এক্স-মেন : এ্যাপোকালিপ্স’ চলচ্চিত্রটি। টরেন্টোর এগ্লেন্টন টাউন সেন্টারের অদিওন সিনেপ্লেক্সে মুক্তির প্রথম দিনেই তাই হলিউডি চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে হয়েছিল ‘অস্তিত্ব’-কে। তিনি জানান, সকল প্রতিকূলতা পেরিয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘অস্তিত্ব’ চলচ্চিত্রটি। অনন্য মামুন আরও জানান, ওখানে আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রকে হলিউডের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে। কানাডার প্রবাসী বাংলাদেশী ও বিদেশী দর্শকদের কাছ থেকে ‘অস্তিত্ব’ চলচ্চিত্রের এমন ধরনের গ্রহণযোগ্যতা পাব তা ছিল আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি। চলচ্চিত্রটি নিয়ে অনন্য মামুনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘অস্তিত্ব’র টিকেট গড়ে বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬০-৭০ শতাংশ। এটাই দেশের বাইরে বাণিজ্যিকভাবে ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীর ঘটনা প্রথম বলে দাবি করেন র্নিমাতা। তিনি বলেন, এর আগে আমরা বিদেশে হল ভাড়া করে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী করতাম। কিন্তু এ ধরনের প্রদর্শনী এবারই প্রথম। আমি মনে করি, এটা শুধু ‘অস্তিত্ব’ নয়; বরং সারাবিশ্বে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শনের দুয়ার খুলে দিয়েছে। কানাডায় সাফল্যলাভের পর ৩ ও ৫ জুন প্যারিসে প্রদর্শিত হয় ‘অস্তিত্ব’। এছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য এরমধ্যেই মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ওমান, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়াতে ‘অস্তিত্ব’ প্রদর্শনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান মামুন। তরুণ প্রজন্মের দর্শকদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পাওয়ায় রাজধানীর মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে চলচ্চিত্রটির টিকেটের কাটতি ছিল বেশি। তবে বাকি হলগুলোতে ‘অস্তিত্ব’ গড়পড়তা ব্যবসা ছিল বলে জানা গেছে।
×