ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দর্জি বাড়ির খবরা-খবর

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৬ জুন ২০১৬

দর্জি বাড়ির খবরা-খবর

ঈদুল ফিতর। মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে সব বয়সের, সকল শ্রেণীর আর সব রকমের মানুষ নতুন কাপড় কিনতে ব্যস্ত হয়ে পরে। নিজেকে রাঙ্গানোর এমন সুযোগ অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে অধিক আনন্দদায়ক। অন্যদিকে শিশু ও তরুণীদের আনন্দ যেন একটু বেশি। আর তাই তো রমজান শুরুর আগেই শুরু হয়ে যায় কেনাকাটা। ফ্যাশনেবল শুধু নতুন পোশাক হলেই হবে না তা হতে হবে আধুনিক ও নজরকাড়া ডিজাইনের। ফ্যাশনেবল রেডিমেট পোশাকের পাশাপাশি অনেকেই পছন্দ করেন নিজের পছন্দের ডিজাইন দিয়ে পোশাক তৈরি করে নিতে। আর তাই তো কাপড় কেনার পর সবার আগে তারা ছুটেন দর্জিবাড়ি। রোজা শুরুর আগেই ব্যস্ত সময় কাটান দর্জিবাড়ির লোকজন। রমজানের প্রথম থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পোশাকের দোকানে যেমন ভিড় দেখা যায়, ঠিক তেমনি লক্ষ্য করা যায় দর্জিদোকান ভিড়ে ঠাসা। পুরোদমে চলে ঈদকে সামনে রেখে পোশাক তৈরির কাজ। পুরুষ দর্জিদের চেয়ে লেডিস দর্জির কাছে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায়। জানা গেছে, ১৫ রমজান থেকে পোশাক তৈরির অর্ডার নেয়া কমিয়ে দেয় এসব দর্জিরা। আর ২০ রমজানের পর কোন অর্ডারই নেয়া হয় না। কারণ শবেবরাতের পর থেকে যেসব অর্ডার নেয়া হয় তা ডেলিভারি দিতে হয় ১০ রোজার মধ্যে। এ ছাড়া ২৮ রমজানের মধ্যে সকল অর্ডারের পোশাক ডেলিভারি দিতে হয় অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও আজকাল কম ফ্যাশনসচেতন নন। অনেকেই চায় ঈদের এই সময় স্যুট, কোট, সাফারি, পাঞ্জাবিসহ নানা ধরনের পোশাক বানিয়ে নিতে। কারণ, এতে নক্সা, কাটিং এবং কাপড়ের মানে অনেক বেশি পার্থক্য থাকে। পাঞ্জাবির মধ্যে বয়স্ক লোকের জন্য সাদা সুতি আর গরদ বেশি চলবে এবার। গরদের মধ্যে যে রংটা চলবে তা হলো, চাপা সাদা আর ছাই। তরুণদের মধ্যে বেশিরভাগই খাটো পাঞ্জাবি বানাবে এবারও। তবে কলার, গলার অংশ, আর হাতে পুঁতির ভারি কাজ করা থাকবে। রঙের তালিকায় গাঢ় রংগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেবে। লাল, ছাই, সাদা, কালো, নীল, সবুজÑ এসবই বেশি করে থাকবে। সময়টা এখন লং শার্টের। শার্টের নিচের অংশে চায়নিজ কাটিংও এখন বেশ চলছে। বানানো শার্টের ক্ষেত্রে তরুণদের আঁটসাঁট ধরনটাই বেশি পছন্দ। ইচ্ছা করলে শার্টের নিচের অংশ সমানও রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দুইপাশে সামান্য কাটা রাখতে পারেন। ঈদের পোশাক মানেই স্পেশাল কিছু। আর এই স্পেশাল পোশাকটিকে তো আর যেনতেন দর্জি দোকানে চলবে না। মাফ ঠিক হবে তো, কাটিং এ গরমিল হবে না তো এমন চিন্তা মাথায় থাকে সবারই। আর তাই তো ঈদের পোশাকটি একটু ভাল দর্জিদোকানে দেয়ার চেষ্টা থাকে সবারই। সেক্ষেত্রে চাঁদনীচক, গাউসিয়া, নিউমার্কেট, গাউসুল আজম মার্কেট, ফার্মগেট ও মোহাম্মদিয়া মার্কেটে রয়েছে মেয়েদের পোশাক তৈরির বেশকিছু ভাল ভাল দর্জিদোকান। এছাড়া গুলশান, উত্তরা, লালমাটিয়াতেও রয়েছে দর্জিদোকান। এসব টেইলারের দোকানে ফ্যাশনেবেল পোশাক তৈরি করা হয়। এ ছাড়া ইচ্ছা করলে বাড়ির পাশের গলির টেইলার দোকান থেকেও বানাতে পারেন আপনার পছন্দসই সালোয়ার-কামিজ, দাম পড়বে ৩০০-৪০০ টাকা। দরদামের ক্ষেত্রে নিউমার্কেট বা গাউসিয়ায় খরচ একটু কম। ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রে শার্ট সাড়ে তিনশ, প্যান্ট চারশ, স্যুট চার হাজার টাকা, প্রিন্স স্যুট আড়াই হাজার, ব্লেজার তিন হাজার, পায়জামা চারশ টাকা। চাঁদনীচক, গাউসিয়া, নিউমার্কেট ও গাউসুল আজম মার্কেটে রয়েছে মেয়েদের বেশিরভাগ টেইলার্স। এ ছাড়াও লালমাটিয়া, গুলশান, উত্তরা, ধানম-িতে রয়েছে পোশাক বানানোর আধুনিক টেইলার্স। ছেলেদের ক্ষেত্রে স্টার টেইলার্স, ফিট এলিগেন্স, দ্য রেমন্ড শপ, আইকনস টেইলর এ্যান্ড ফেব্রিকস, আইডিয়াল টেইলর এ্যান্ড ফেব্রিকস, আজিজস টেইলার্স এ্যান্ড ফেব্রিকস, এগুলোর শাখা বিভিন্ন জায়গায়। বসুন্ধরা শপিংমল, রমনা ভবন, সোনারগাঁও রোড, উত্তরা, ধানম-ি, মগবাজার বিশাল সেন্টার, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলশানের ইউনিকর্ন প্লাজা। আর ইচ্ছে করলে বাড়ির কাছের টেইলার্স থেকেও বানিয়ে নিতে পারেন আপনার পছন্দসই পোশাকটি।
×