ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আকিব জাভেদকে প্রস্তাব বিসিবির

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৬ জুন ২০১৬

আকিব জাভেদকে প্রস্তাব বিসিবির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হিথ স্ট্রিক বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব ছাড়ার পরই গুঞ্জন উঠেছিল, কে হবেন বোলিং কোচ? সেই গুঞ্জন বোধ হয় এবার শেষ হতে চলেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পাকিস্তানের সাবেক পেসার আকিব জাভেদকে বোলিং কোচ হতে প্রস্তাব দিয়েছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই তা জানিয়েছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক এ কোচই হবেন বাংলাদেশের বোলিং কোচ। তবে এজন্য জাভেদকে রাজিও হতে হবে। আজ-কালের মধ্যেই সেই সিদ্ধান্তও চলে আসবে। আইপিএল চলার সময়ই শোনা যায়, হিথ স্ট্রিক বাংলাদেশের বোলিং কোচ থাকছেন না। ভারত ক্রিকেট একাডেমির কোচ হচ্ছেন হিথ স্ট্রিক। সেটির এখনও কোন নিশ্চয়তা মিলেনি। তবে বিসিবি ঠিকই কোচদের একটা লম্বা তালিকা করে ফেলে। মে মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশের কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেন স্ট্রিক। এরপর থেকেই বিসিবি পুরোদমে কোচ খোঁজা শুরু করে দেয়। শেষপর্যন্ত আকিব জাভেদকে প্রস্তাব দেয় বিসিবি। এখন দেখা যাক, পাকিস্তানের হয়ে ২২ টেস্টে ৫৪ ও ১৬৩ ওয়ানডে খেলে ১৮২ উইকেট পাওয়া জাভেদ তাতে রাজি হন কিনা। হিথ স্ট্রিক যখন পদত্যাগ করেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানই তা নিশ্চিত করেন। বলেন, ‘সে (হিথ স্ট্রিক) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে। এখন আর কিছুই করার নেই।’ করার যা ছিল, নতুন কোচ খোঁজা। সেই কাজটি দ্রুতই করা শুরু করে বিসিবি। বোলিং কোচের একটি তালিকা আগেই করা ছিল। যে তালিকায় পাকিস্তানের আকিব জাভেদ, শ্রীলঙ্কার চম্পকা রমানায়েকে, চামিন্দা ভাস ও ভারতের ভেঙ্কটেশ প্রসাদের নাম ছিল। এর বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার কার্টলি এ্যামব্রোস ও বাংলাদেশের সাবেক কোচ শেন জার্গেনসনের নামও শোনা গিয়েছিল। এর মধ্যে প্রসাদ নিজেই বলে দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের কোচ হতে কোন আগ্রহ নেই।’ তাই প্রসাদকে বাদ দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়েছে বিসিবিকে। স্ট্রিকের সিদ্ধান্ত না জানা পর্যন্ত বিসিবিও কোন পছন্দের কোচের সঙ্গে আলোচনা করতে পারছিল না। এখন সেটিতে গতি এসেছে। সেই গতি এতটাই বেড়েছে যে জাভেদকে প্রস্তাবই দিয়েছে বিসিবি। জিম্বাবুইয়ে ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না হিথ স্ট্রিকের বেতন বহন করা। আর তাই ২০১৩ সালে বোলিং কোচের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় স্ট্রিককে। পরের বছরে ৮০ হাজার মার্কিন ডলারের চুক্তিতে বাংলাদেশের বোলিং কোচ হিসেবে যোগ দেন স্ট্রিক। ২ বছরের মেয়াদে তাকে নিয়োগ করে বিসিবি। তবে হিথ স্ট্রিকের বেতন কিন্তু মাসিক ভিত্তিতে ছিল না। চুক্তি অনুযায়ী বছরে ন্যূনতম ২০০ দিন তাকে থাকতেই হবে দলের সঙ্গে। কর্মদিবসের সংখ্যা বেশি হলে প্রতিদিন ৪৫০ ডলার হারে পেতেন বাড়তি মজুরি। মূলত এই চুক্তির কারণেই আইপিএলে গুজরাট লায়ন্সের বোলিং কোচের দায়িত্ব নেয়ায় হিথ স্ট্রিককে বাধা দিতে পারেনি বিসিবি। বাংলাদেশের বোলিং কোচের দায়িত্ব পেয়ে দলের পেস ইউনিটকে ভয়ঙ্কর করে তোলার পেছনে স্ট্রিকের অবদান অনস্বীকার্য। শেষ দুই বছরে বাংলাদেশ দলের ৩ টেস্ট, ১৮ ওয়ানডে এবং ৯ টি২০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটা তার কোচিং অধ্যায়েই। স্পিন নির্ভর বাংলাদেশ দলকে পেস বোলিং কেন্দ্রিক দলে পরিণত করেছেন তিনিই। দলে চার পেসার নিয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দুর্দান্ত পারফর্মেন্স করেছে হিথ স্ট্রিকের ফর্মুলাতে। বাংলাদেশের পর গুজরাট লায়ন্সের কোচের দায়িত্ব নিয়ে দলটির বোলিং ইউনিটকেও দারুণভাবে তৈরি করেছেন। যে কারণেই তার উপর নজর পড়েছে বিসিসিআইয়ের। ভারতের জাতীয় একাডেমির বোলিং কোচের দায়িত্ব পেতে আবেদনও করেছেন স্ট্রিক। এখনও বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তির দু’বছরের মেয়াদ শেষ হয়নি হিথ স্ট্রিকের। জুনে শেষ হবে তার মেয়াদ। তবে এর আগেই পদত্যাগপত্র দিয়ে দিয়েছেন স্ট্রিক। তার স্থানে এখন বিসিবি আকিব জাভেদকে বোলিং কোচ করতে চাচ্ছে।
×