ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

পঞ্চম প্রয়াণবার্ষিকীতে পপ সম্রাট আজম খান স্মরণ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৬ জুন ২০১৬

পঞ্চম প্রয়াণবার্ষিকীতে পপ সম্রাট আজম খান স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের ব্যান্ডসঙ্গীত আর আজম খান শব্দটি যেন সমার্থক শব্দ। একে অপরের পরিপূরক। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে তার কণ্ঠের আশ্রয়েই ছড়িয়েছিল পপসঙ্গীতের সুর। একইসঙ্গে এই পপসম্রাটের দেখানো পথেই গড়ে উঠেছিল আধুনিকতা আশ্রয়ী ব্যান্ড মিউজিক। রবিবার ছিল ব্যান্ডসঙ্গীত শিল্পীদের কাছে পপগুরু হিসেবে পরিচিত এই পথিকৃৎ শিল্পীর পঞ্চম প্রয়াণবার্ষিকী। সেই সূত্রে এদিন সন্ধ্যায় ব্যান্ডসঙ্গীত শিল্পীদের স্মরণে এলেন তাদের অতি আপনজন আজম খান। স্মৃতিচারণ ও তাকে নিবেদিত আলোচনায় মৃত্যুবার্ষিকীতে শিল্পীকে জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে স্মরণানুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস এ্যাসোসিয়েশন (বামবা)। স্মরণের এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন আজম খানের সহোদর সুরস্রষ্টা আলম খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী ও গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর। পিতা স্মৃতিচারণ করেন আজম খানের মেয়ে ইমা খান। এছাড়াও স্মৃতিচারণ ও উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বামবার সদস্যরা। তাদের মধ্যে ছিলেন ফুয়াদ নাসের বাবু, মানাম আহমেদ, লাবু রহমান, শেখ মনিরুল আলম টিপু, কাজী হাবলু, পিয়ারু প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন বামবার সভাপতি হামিন আহমেদ। এদেশের ব্যান্ডসঙ্গীতে আজম খানের অবদান ও তার দেশাত্মবোধের কথা উঠে হামিন আহমেদের বক্তবে। তিনি বলেন, আজম খানের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে রাইফেল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন একাত্তরের রণাঙ্গনে। এরপর স্বাধীন দেশে রাইফেল রেখে হাতে তুলে নেন গিটার। হয়ে ওঠেন দেশে রক ধারার জন্মদাতা। ব্যান্ডসঙ্গীতের ভিত্তিভূমিটিও গড়ে দেনে তিনি। এখন যারা ব্যান্ডসঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত সবাই তার গানের দর্শনকে পাথেয় করেই নিজেদের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। যাপিত জীবনের ভাষাটাকেই গানের সুরে মেলে ধরেছিলেন আজম খান। সুরের আশ্রয়ে বলেছেন একটি সময়ের কথা। এমন ভাবনার প্রকাশের কারণেই ব্যান্ডসঙ্গীতের প্রতি প্রজন্মের কাছে তিনি হয়ে আছেন পথ প্রদর্শক। বন্ধু আজম খানের প্রতি ভালবাসা জানিয়ে ফকির আলমগীর বলেন, আজম খানের গানের ধারাটি পপসঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃত। তার সুবাদেই গানের তালে এমন ছন্দ ও ক্ষিপ্রতা আগে কখনও দেখেনি এদেশের তরুণ সমাজ। এদেশের ব্যান্ডসঙ্গীতের জাগরণেও আজম খান ছিলেন পথিকৃৎ। ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন আজম খান। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১১ সালের ৫ জুন সকালে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। পরিবেশ দিবসে মঞ্চস্থ ‘নদ্দিউ নতিম’ ॥ রবিবার ছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এ উপলক্ষে সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় ম্যাড থেটারের প্রথম নাটক ‘নদ্দিউ নতিম’। হুমায়ূন আহমেদের ‘কে কথা কয়’ উপন্যাসের ন্যাটরূপ হচ্ছে নদ্দিউ নতিম। প্রযোজনাটির রূপান্তরের পাশাপাশি নির্দেশনা আসাদুল ইসলাম। মতিন একজন কবি। মনে মনে নিজেকে সে উজবেক কবি ভাবে। মতিনের মধ্যে বাস করে অন্য এক মতিন। দিনে দিনে মতিন উদ্দিন হয়ে ওঠে নদ্দিউ নতিম। মতিনের হৃদয়ের সবটুকু দখল করে থাকে সহপাঠিনী নিশু। ভাবের ভেলায় ভেসে বেড়ালেও ভাবাবেগে মতিন ডুবে যায় না, সে বুঝতে পারে নিশুর মতো বুদ্ধিমতী মেয়ের যোগ্য সে নয়। একদিন পত্রিকার বিজ্ঞাপনের বেতনের আকর্ষণীয় ক্ষমতায় মতিন তার কবিসত্তাকে স্তিমিত রেখে কমল নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চার টিউটর পদে অভিসিক্ত হয়। মতিনের কর্মকা-ে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হওয়ায় তাকে টিউটর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু প্রতিবন্ধী বাচ্চাটি কবিকে ভুলে না। বাচ্চাটি কবির সঙ্গে কথা বলতে চায়, কিন্তু সে সুযোগ তো আর নেই। কবি চলে গেছে। বাচ্চাটি জেদ ধরে সে কথা বলবেই বলবে। একপর্যায়ে সুযোগ হয় কবির সঙ্গে কথা বলার। কমল মতিনের সঙ্গে তার জীবনের একটি সিক্রেট শেয়ার করে, যে সিক্রেটের জন্য মতিনকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়াতে হয়। হাসপাতালের এক হিমশীতল ঘরে সে শুয়ে থাকে। মঞ্চায়িত ‘গহর বাদশা ও বানেছা পরী’ ॥ রবিবার মঞ্চায়িত হলো নাগরিক নাট্যাঙ্গন প্রযোজিত নাটক ‘গহর বাদশা ও বানেছা পরী’। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় নাগরিকের নতুন প্রযোজনাটি। ময়মনসিংহ গীতিকার লোকগাঁথা ‘গহর বাদশা বানেছা পরী’ অবলম্বনে বিন্যস্ত হয়েছে নাটকের কাহিনী। নাটকটির পুনঃকথন ও নির্দেশনায় ছিলেন হৃদি হক। গিলামাইট বনে বিশ্বিং বাদশা এসেছিল শিকার করতে। সারা বন খুঁজে শিকার না পেয়ে পরিশ্রান্ত বাদশা যখন দুষছিল তার ভাগ্যকে ঠিক তখনই অদূর জলাশয়ে হরিণ শাবকের আগমনে তীর ছোড়ে বাদশা। পরক্ষণেই মানব সন্তানের কান্নায় বুঝতে পারে কী ভয়ানক নিষ্ঠুরতায় সে তার হাত রাঙালো। অন্ধমুনি সন্তান হারানো বেদনায় জর্জরিত করল সন্তানহীন বাদশা বিশ্বিংকে। সেই অভিশাপের পর দুই পুত্রের চন্দ্রমুখ দেখার সৌভাগ্য হলো বাদশার। রাজ্যজুড়ে যখন আনন্দের বন্যা বাদশার মনে তখন সন্তান হারানোর ভয়। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাগরিক নাট্যাঙ্গনের নিয়মিত নাট্যকর্মীরা।
×