ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সন্ত্রাসীদের কোন সীমান্ত নেই, ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের মোকাবেলা করতে হবে ॥ বার্নিকাট

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৬ জুন ২০১৬

সন্ত্রাসীদের কোন সীমান্ত নেই, ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের মোকাবেলা করতে হবে ॥ বার্নিকাট

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ সন্ত্রাসীদের কোন সীমান্ত নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট। তিনি সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। রবিবার রাজধানীর ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) ক্যাম্পাসে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কর্মসূচী নির্ধারণ ও করণীয়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে আইইউবি’র স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ও এনভায়রনমেন্টাল ক্লাব। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মার্শা বার্নিকাট বলেন, সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই। তাদের কোন সীমান্তও নেই। তারা যে কোন সময় যে কোন দেশে প্রবেশ করতে পারে। তাই আমাদের সচেতন থাকতে হবে। মার্শা বার্নিকাট বলেন, সন্ত্রাসীদের সংখ্যা কম। তাই আমরা সবাই মিলে যদি কাজ করি তাহলে তাদের মোকাবেলা করা সহজ হবে। এজন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তবেই সহজে সন্ত্রাস নির্মূল করা সম্ভব হবে। সন্ত্রাস নির্মূলে বাংলাদেশ সরকারকে আরও সোচ্চার হতে হবে। সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। জলবায়ু ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার বিষয়ে মার্শা বার্নিকাট বলেন, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকায় গড়ে ওঠা এ অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষয়ক্ষতির প্রান্তসীমায় রয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষ বন্যা, নদী ভাঙ্গন, ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রসীমায় পানি বৃদ্ধি ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে বসবাস করছেন। সম্প্রতি এ অঞ্চলে একই সঙ্গে যেমন বন্যা দেখতে পাচ্ছি, ঠিক একই সঙ্গে আমরা খরাও দেখতে পাচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এমনটি ঘটছে। সে কারণে প্রান্তিক মানুষের জীবনধারা রক্ষায় আমাদের বিভিন্ন উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মার্শা বার্নিকাট বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের একে অপরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় জরুরী। কোন দেশই এককভাবে এ প্রভাব মোকাবেলা করতে পারবে না। গত বছর জাতিসংঘ থেকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী গত ২২ এপ্রিল বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে প্যারিস এগ্রিমেন্টে ১৭৫ দেশ জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব মোকাবেলায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, ‘আমরা সময়ের বিরুদ্ধে দৌড়ে চলেছি’। মহাসচিবের বক্তব্য সঠিক। তবে আমরা বলতে চাই, বিশ্ব পরিবেশ রক্ষার জন্য আমাদের সামনে একটি সুযোগ এসেছে। আমরা এ সুযোগ যথাযথ কাজে লাগাতে চাই। রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, আগামী বছর তৃতীয়বারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর বিশ্ব সমুদ্র সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এ সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষ নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। সেখানে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড’ (বঙ্গোপসাগরের অতল গহ্বর) বিপন্নপ্রায় পাঁচ ধরনের ডলফিনের অবাধ বিচরণের জন্য বাংলাদেশ ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগ থেকে বিদেশের বিশেষজ্ঞরাও শিক্ষা নিতে পারেন। অনুষ্ঠানে আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইইউবি’র প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এ মতিন চৌধুরী, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রাশেদ চৌধুরী, উপাচার্য অধ্যাপক এম ওমর রহমান প্রমুখ।
×