ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জড়িতদের ধরতে ১০ টিম মাঠে, বড় ভরসা সিসি টিভির ফুটেজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৬ জুন ২০১৬

জড়িতদের ধরতে ১০ টিম মাঠে, বড় ভরসা সিসি টিভির ফুটেজ

আহমেদ হুমায়ুন, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ও চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় সিআইডি, ডিবি, পিবিআই, র‌্যাবসহ পুলিশের ১০ বিশেষ টিম ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে মাঠে নেমেছে। রবিবার সকাল পৌনে সাতটায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হওয়ার পর থেকে মাঠে নামে পুলিশের এসব টিম। তবে সন্ধ্যা সাতটায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খবর নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। তবে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধারণা করছেন গোয়েন্দা পুলিশে কাজ করার সময় বাবুল আক্তার জঙ্গী দমনে বেশ কয়েকটি বড় বড় অভিযান পরিচালনা করেছেন সুতরাং জঙ্গী সম্প্রদায় এ জঘন্য কাজ ঘটাতে পারে। খুব শীঘ্রই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের তারা গ্রেফতার করতে সক্ষম হবেন। সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার জানিয়েছেন, গোয়েন্দা পুলিশে কাজ করার সময় বাবুল আক্তার জঙ্গীদের বিরুদ্ধে প্রসংশনীয় কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। এ জন্য তাকে বেশ কয়েকবার হুমকি দেয়া হয়েছে। তার জের ধরে জঙ্গী গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। এ বিষয়ে আমাদের কাছে বেশ কিছু প্রমাণ আসতে শুরু করেছে। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনী ও খুনের কারণ বেরিয়ে আসবে। একজন নিরাপরাধ নারীকে যারা হত্যা করল তার তাদের অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও ঘটনার সঙ্গে জঙ্গী সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। ঘটনার পর রবিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ের ‘ইকুইটি সেন্ট্রিয়ামে’ পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বাসায় গিয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জঙ্গী সম্পৃক্ততার বিষয়টি জানান। এদিকে খবর শুনেই র‌্যাবসহ পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার লোক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নামেন। তবে স্ত্রীকে হত্যার সময় বাবুল আক্তার চট্টগ্রামে ছিলেন না। তখন তিনি ঢাকায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অবস্থান করছিলেন। খবর শুনে একটি হেলিকপ্টারে করে তাকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। চট্টগ্রামে শোকের ছায়া ॥ এ হত্যাকা-ের ঘটনায় চট্টগ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিনসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ভিড় জমান। সকাল সাড়ে ১০টায় আ জ ম নাছির মেডিক্যালে যান। এ সময় তিনি ঘটনার সঙ্গে জঙ্গী সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জঙ্গীরা পুলিশ বাহিনী তথা রাষ্ট্রকে হুমকি দিতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। মহানগর পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও আ জ ম নাছিরের মতো একই ধারণা পোষণ করছেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মোক্তার আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করে দিয়েছি। খুনীদের গ্রেফতারে অভিযানও শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে জঙ্গীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। কারণ বাবুল আক্তার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে ছিলেন। তাকে ধমিয়ে দিতে তারা এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। তদন্তে অন্যতম ভরসা সিসিটিভি ফুটেজ ॥ ঘটনার তদন্তে অন্যতম ভরসা প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের গেটের সিসিটিভি ফুটেজ। কারণ ঘটনাস্থলে ওয়েলফুডের সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও ঘটনাটি ওই সিসিটিভির আওতার বাইরে ঘটায় তাতে কোন ক্লু পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ঘটনার সামন্য অদূরে কালী মন্দিরের গেটে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও ওই ক্যামেরায় সকাল নয়টার আগে কোন দৃশ্য ধারণ করা ছিল না। তাই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ অন্যতম ভরসায় পরিণত হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে দুইজন লোক মোটরসাইকেলে এসে হত্যাকা- ঘটনায়। পরে আরও একজনসহ তিনজন একই মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় একজনের মাথায় হেলমেট ছিল।
×