ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জেদ্দায় শেখ হাসিনা- বাদশাহ সালমান বৈঠক

বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৬ জুন ২০১৬

বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার

বাংলাদেশ এবং সৌদি আরব বিশ্বশান্তি, উন্নয়ন এবং মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর কল্যাণে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। রবিবার বিকেলে জেদ্দার আন্দালুসে বাদশাহর আল সালাম প্রাসাদে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এই ঐকমত্য হয়। খবর বাসসর। বৈঠকের পরে পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহীদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তারা জানান, প্রায় ঘণ্টাকালব্যাপী অন্তরঙ্গ পরিবেশে অনুষ্ঠিত আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী এবং সৌদি বাদশাহ বৈঠকে উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্ভাবনাগুলোকে খতিয়ে দেখার বিষয়েও একমত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে ৫ দিনের সরকারী সফরে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। পররাষ্ট্র সচিব জানান, সৌদি বাদশাহ বাংলাদেশকে শীর্ষ ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সমগ্র মুসলিম উম্মাহর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র।’ সৌদি বাদশাহ দুইবার একই শব্দ উচ্চারণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফর দুই দেশের মধ্যে নতুন অধ্যায়ের সূচনাই শুধু নয়, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও এর মাধ্যমে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হলো বলেও পররাষ্ট্র সচিব অভিমত ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক যে পূর্ণতা লাভ করল তা আগে কখনও দেখা যায়নি। সৌদি বাদশাহ বিশ্ব শান্তি, প্রগতি এবং উন্নয়নে বাংলাদেশের বিরাট ভূমিকা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব শান্তির অন্বেষণ, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যেতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। দুই নেতা বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ এবং উগ্রপন্থার বিরুদ্ধেও তাদের কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন বলেও পররাষ্ট্র সচিব জানান। সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশের ‘ইসলামী জোট’-এ শরিক হওয়ার বিষয়ে বাদশাহ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই কনসেপ্টের দুটি অংশ রয়েছে- একটি সামরিক কেন্দ্রিক এবং অপরটি রাজনৈতিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোন অংশে যোগ দেবে এটা বাংলাদেশের ওপরই নির্ভরশীল। এটা বাধ্যতামূলক নয়, এটা স্বেচ্ছাকেন্দ্রিক। আমরা বাংলাদেশের এই জোটে যোগদানের বিষয়টাতেই খুশি। পররাষ্ট্র সচিব এবং প্রেস সচিব জানান, দুই নেতা বর্তমান বিশ্বে বিদ্যমান অস্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তাহীনতা দূর করতে একযোগে কাজ করে যাওয়ার বিষয়েও অঙ্গীকার করেন। সৌদি বাদশাহ বলেন, তাঁর দেশ বাংলাদেশের ইসলামী জোটে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং এর মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে উঠছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব বরাবরই বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের একটি বিশেষ জায়গা দখল করে রয়েছে। কারণ মক্কা এবং মদীনায় দুটি পবিত্র মসজিদের অবস্থান রয়েছে এবং সৌদি আরব রাসুল হযরত মুহাম্মদের (সা) জন্মভূমি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী উপলব্ধি করতে হবে। যাতে কেউ এর ভুল ব্যাখ্যা করে কোন রকম ফায়দা লুটতে না পারে।’
×