ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জয়ন্তী নদীতে বালু লুটের হিড়িক, রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ৬ জুন ২০১৬

জয়ন্তী নদীতে বালু লুটের হিড়িক, রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ মুলাদী উপজেলার জয়ন্তী নদীতে চলছে স্থানীয় বালুখেকোদের বালু লুটের হিড়িক। ফলে একদিকে যেমন সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব তেমনি অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীভাঙ্গন বেড়েই চলেছে। বালুখেকোদের কারণে সর্বগ্রাসী হচ্ছেন নদী তীরবর্তী বাসিন্দা। সরেজমিনে মুলাদী উপজেলার মৃধারহাট এলাকার জয়ন্তী ও আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরবর্তী এলাকা ঘুরে, এলাকার বাসিন্দার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এককালের রাক্ষসি জয়ন্তী ও আড়িয়াল খাঁ নদী ওই এলাকার তিনটি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। নদীর ভাঙ্গনে আজও মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলেনি গ্রামের শতাধিক পরিবারের। কয়েক বছর পূর্বে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় চর জেগে ওঠায় সর্বস্বান্ত পরিবারগুলো বাঁচার স্বপ্ন দেখেন। এরইমধ্যে জেগে ওঠা চরের ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে চরকালেখা গ্রামের প্রভাবশালী ভূমিদস্যু রোকন মোল্লা, মাওলানা আবু তাহের জমাদ্দার, আবু ছালেহসহ তাদের সহযোগীদের। তারা একমাস ধরে জেগে ওঠা চর ও নদীর বিভিন্নস্থানে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালুর ব্যবসা জমজমাট করে তুলেছে। তারা ড্রেজার দিয়ে গ্রামের পুকুর ও ডোবা ভরাটের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, অবৈধ ড্রেজিংয়ের ফলে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে নিজেদের বাড়িঘর রক্ষা করতে প্রভাবশালীদের বাধা দেয়ায় ইতোমধ্যে তাদের (বালুখেকো) হামলার স্বীকার হয়েছেন একই এলাকার সেকান্দার হাওলাদার। ওই হামলার পর বালুখেকোদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। জানা গেছে, জেলার অধিকাংশ এলাকার নদীতে বালুগ্রাসী সিন্ডিকেট চক্র দীর্ঘদিন থেকে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। ফলে প্রতিবছরই এ জেলায় নদীভাঙ্গনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বালুখেকোদের কারণে সর্বগ্রাসী হচ্ছেন নদীর তীরবর্তী বাসিন্দা। পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী বরিশালের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে জেলার বালুমহাল ইজারা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামান বলেন, ইজারাভুক্ত এলাকা ছাড়া কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। যদি কেউ ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে থাকে তা হলে তার লাইসেন্স বাতিলসহ ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মুলাদীর মৃধারহাট এলাকার জয়ন্তী ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
×