ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জি-৭ থেকে জি-৮ এবং বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ৬ জুন ২০১৬

জি-৭ থেকে জি-৮ এবং বাংলাদেশ

বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে। শুধু দ্যাখা নয়, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পথ নির্দেশিকা এবং সঠিক কর্মসূচী নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যাত্রাপথ মসৃণ না হলেও, স্বপ্নপূরণের পালায় চড়াই-উতরাই ভেঙ্গে বেরিয়ে আসছে উন্নতির অগ্রযাত্রায়। তাকে পাড়ি দিতে হবে বহু পথ। সেই পথে যতই থাক কাঁটা বিছানো, তা উপড়ে ফেলার সক্ষমতাও ক্রমশ ধারণ করছে দেশটি। বাঙালীর আশা-আকাক্সক্ষার চৌহদ্দি স্বদেশ ছাড়িয়ে এখন বিশ্বসভায় পৌঁছে গেছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক সূচকে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হিসেবে সত্যিকারার্থেই উত্থান ঘটেছে দেশটির। তাই দেখা যায়, উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতিশীল নেতৃত্বের কারণে বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে একজন আদর্শ রাষ্ট্র নায়কের ইমেজ সৃষ্টি করতে পেরেছেন তিনি। তাঁর সামনে এখন ২০২১ সালের চ্যালেঞ্জ। এই সময়ের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত করার যে লক্ষ্য স্থির করেছেন, তা পূরণ করতে হবে। এজন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে। বিশ্বের মাঝে নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রটিও করতে হচ্ছে সম্প্রসারিত। এটা সত্য যে, জনগণের সমর্থন ছাড়া পৃথিবীর কোন নেতারই শক্তি নেই কোন কর্মসূচী সফলভাবে বাস্তবায়ন করার। শেখ হাসিনা এ ক্ষেত্রে ভাগ্যবান বলা যায়। দেশের ১৬ কোটি মানুষের বড় অংশও শ্রমজীবী, শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত, কৃষিজীবীসহ পেশাজীবী এবং অন্যান্য স্তরের জনগণের সমর্থন পাচ্ছেন ব্যাপকার্থে। জনগণ দু’বেলা দু’মুঠো খাবার এখন পাচ্ছে নিয়মিতভাবে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলো জনগণের দুয়ারে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। শেখ হাসিনা জাপান টাইমসে গত ২৫ মে প্রকাশিত তাঁর নিবন্ধে বলেছেন যে, ‘আমি জনগণের ক্ষমতার শক্তিতে বিশ্বাস করি।’ এই বিশ্বাসই তাঁকে দেশের গ-ি ছাড়িয়ে বিশ্ব নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আর জনগণের শক্তিতে বলিয়ান হতে পেরেছেন বলেই শত বাধা বিঘœতা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক অগ্রগতির রথ টেনে নিতে পারছেন। তাই দেখা যায় দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি উর্ধমুখী। বাড়ছে মাথাপিছু আয়। বেড়েছে গড় আয়ু। কমেছে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার। রফতানি আয় বাড়ছে। বিনিয়োগের নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি উপযোগী সময়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা ঠিক যে, দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর অকুণ্ঠ সহযোগিতা বাংলাদেশকে যে লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে নিয়ে যাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যে লক্ষ্য পূরণে দু’হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পরীক্ষিত বন্ধুরাষ্ট্র জাপান। বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রীও। শিনজো আবে বলেছেন, বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নত করার জন্য শেখ হাসিনার আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সবকিছুই করবেন। এই আশ্বাস অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল প্রাপ্তি বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে। কিন্তু বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত হবার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখবে, তা নয়। তার স্বপ্ন আরও দূরে, যেখানে বিশ্বের শিল্পোন্নত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ শক্তির পাশে দাঁড়াতে পারবে। উন্নত বিশ্বের সাতটি দেশের জোট জি-৭ এর পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ কাজ করছে। বিষয়টি অভাবনীয় মনে হলেও বাস্তবতা বলে যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হবে। আর এখন বাংলাদেশ আজকের জি-৭ এর সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে জি-৮-এ পরিণত হবে। জাপান প্রবাসী বাংলাদেশীরাও দেখছেন এমন স্বপ্ন। নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রী নিতে মনবুশো বৃত্তি নিয়ে অধ্যয়নরত ডাঃ শাহীন তার স্বপ্নের কথা জানালেন এভাবে, বাংলাদেশ যেভাবে সমৃদ্ধিতর হয়ে উঠছে, অগ্রগতির সোপানে নিজেকে সম্প্রসারিত করছে, তাতে ২০৪১-এর অনেক আগেই ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে। দেশবাসীর মধ্যে সেই স্বপ্ন জাগরিত করেছেন শেখ হাসিনা। এমনটাই তার ভাষ্য। শেখ হাসিনা নিজেও তাই ভাবেন। গত ২৫ মে জাপান টাইমসে প্রকাশিত তার নিবন্ধ ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের রূপকল্পে’ তিনি তেমন আভাসই দিয়েছেন। লিখেছেনÑ ‘বাংলাদেশকে এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান কিভাবে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে নিজেদের পুনর্গঠন করেছে এবং অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অর্থনৈতিক আরেকটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে আমাদের আকাক্সক্ষা ও দৃঢ় সংকল্প এতটুকু কম নয়। শেখ হাসিনা এই বিশ্বাস এবং আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে উল্লেখ করেছেন, ‘একটি উন্নততর বিশ্ব আরও উন্নত একটি গ্রহ এবং শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী বিশ্ব ব্যবস্থার জন্য জনগণের জীবনকে রূপান্তর করতে আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আমরা এ অঞ্চলের বাকিদের এবং বিশ্বের সঙ্গে হাত মেলাতে চাই।’ অনুরূপ বক্তব্যও উঠে এসেছে জাপান সোসাইটি বাংলাদেশ আয়োজিত শেখ হাসিনার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কণ্ঠেও। তারাও বলেছেন, আমরা চাই বাংলাদেশ জি-৭ এ যোগ দিয়ে সংস্থাটিকে জি-৮ এ পরিণত করুক। জাপানের প্রধানমন্ত্রীও বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে প্রশংসিত করে এক্ষেত্রে তার দেশের সহযোগিতার কথা গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন। জি-৭ এর আউটরিচ (সম্প্রসারিত) বৈঠকে শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ সেই লক্ষ্য পূরণের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার একটি ধাপ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এমনটাই মনে করেন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী ডাকসুর একদা জিএস ও ভিপি এবং গাজীপুরের বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারুজ্জামান। সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পথে বিমানে আলাপকালে তিনি স্পষ্ট করলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের কারিগর শেখ হাসিনাকে বিশেষভাবে জি-৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে উন্নত দেশের নেতারা প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে নানাভাবে। আউটরিচ বৈঠকে বাংলাদেশের কাছ থেকে বিভিন্ন সামাজিক সূচকে এগিয়ে যাওয়ার রূপরেখা অবহিত হয়েছেন। তারা আভাসও দিয়েছেন। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার পথে তারা সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবেন। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক বিশ্বে পরিচিত পাওয়া বাংলাদেশ শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এ কারণে বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে একজন আদর্শ রাষ্ট্রনায়কের ইমেজ সৃষ্টি করতে পেরেছেন। এভাবে এগিয়ে যাওয়ার পথ কণ্টকমুক্ত থাকলে বাংলাদেশকে নিয়ে জি-৭ পরিণত হতে পারে জি-৮-এ। টোকিও থেকে তিনশ’ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পর্বত ও জনবসতিপূর্ণ এলাকা ইসিশিমাতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের শেষ দিনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার কাছ থেকে শুনেছেন বাংলাদেশের সাফল্য গাথা। সম্মেলনে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে এবং এজন্যই বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। বিশ্ব নেতাদেরও আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং শেখ হাসিনার উন্নয়ন নীতিমালা। বাংলাদেশের দ্রুত ও অভাবনীয় উন্নয়নে বিশ্বনেতারা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। উন্নয়নের অংশীদার হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। গলা ফাটিয়ে না হলেও বলা যায়, এটা বাংলাদেশ বিশেষ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সাফল্য ও অর্জনের স্বীকৃতি অবশ্যই। আউটরিচ বৈঠকে যে সাতটি দেশ যোগ দিয়েছেন, তারা সবাই কোন না কোন আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক জোটের প্রতিনিধি হয়ে এসেছেন। আর শেখ হাসিনা বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হয়েছেন, তাঁর নিজের অর্জনগুলোকে তুলে ধরার জন্যই। তাঁকে রোল মডেল হিসেবে সামনে এনে শীর্ষ দেশগুলোর নেতারা চেয়েছেন, এখান থেকেই শিক্ষা নেবে আরও অনেক অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ। শেখ হাসিনার উপস্থাপনায় বিশ্ব নেতারা আরও সুনির্দিষ্টভাবে অবহিত হয়েছেন বাংলাদেশের অগ্রগতির রূপরেখা। এই সম্মেলনটি ছিল বাংলাদেশের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে শেখ হাসিনা রাজনীতিতে নারীর অধিক অংশগ্রহণ, নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, স্বাস্থ্য পরিষেবা বাড়ানোর ওপর যেমন জোর দিয়েছেন, তেমনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার চ্যালেঞ্জ উত্তরণে প্রযুক্তি হস্তান্তর, সম্পদের সংযোজন এবং দরিদ্র দেশগুলোর সামর্থ্য বৃদ্ধির ব্যাপারে উক্ত দেশগুলোকে আরও উদার হতে বলেছেন। সম্মেলনের ঘোষণায় শরণার্থী সমস্যা, বাণিজ্য, অবকাঠামো, নারীর ক্ষমতায়ন, সাইবার অপরাধ জলবায়ুর পরিবর্তনের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সমন্বিত ও জোটবদ্ধ অভিযানের কথা বলা হলেও বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। জি-৭ সম্মেলন প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে একটা জাগরণ তৈরি করেছে। জাপানে ২৮ বছর ধরে বসবাসরত বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জাপানের সভাপতি রফিক ফরাজী আলাপকালে বলছিলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন, অর্জন ও সাফল্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের জন্য অবশ্যই গর্ব ও আনন্দের। সব বাংলাদেশীর দায়িত্ব এ অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জন। এ পথে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতাও। গাড়ি ব্যবসা করেন জাপানে কুমিল্লার চান্দিনার হারং গ্রামের সবুজ। সম্মেলন তাকে আশাবাদী করলেও শঙ্কা রয়েছে মনে। জানালেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নৈরাজ্য সৃষ্টিতে জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি বিঘিœত করে দেশকে সন্ত্রাস সংঘাতময় জনপদ হিসেবে তুলে ধরতে নানাভাবে তৎপর। এসব মোকাবেলা করে অর্থনীতির চালিকাশক্তিকে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টার সঙ্গে সর্বস্তরের নাগরিকের ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা জরুরী। না হলে সবই বৃথা হয়ে যাবে। নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি কোর্স করছেন ঢাকার আরাফাত। তার মতে এবারের সম্মেলনের আউট রিচ বৈঠকে শেখ হাসিনার উপস্থিতির এক ভিন্ন দিক ছিল। বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্যই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে বিশ্ব নেতাদের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব স্পষ্ট হয়েছে। জাপান আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুন মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্লোবাল ইমেজ এবং এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃষ্টান্তের স্বীকৃতি পেল এই সম্মেলনে। বৈঠকের দুটি অধিবেশনে জননেত্রী অগ্রগতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে যা বলেছেন, তা সবার কাছে ইতিবাচক ও গ্রহণযোগ্য হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। বাংলাদেশের পথচলা যে অন্যদের জন্যও অনুকরণীয় হতে পারে, সম্মেলন সে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে অবশ্য এটাও তুলে ধরেছেন যে, উন্নত দেশগুলো যদি কারিগরি সহায়তা, অর্থায়ন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, তাহলে বিশ্ব আজকে যেসব সমস্যায় পড়েছে, তা আর হবে না। বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি তৈরি পোশাকশিল্প এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ধারণার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেছেনও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির গুরুত্ব অত্যধিক। জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতেমার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানালেন, বিশ্বের পশ্চাৎপদ অংশের এগিয়ে যাওয়া নির্ভর করছে সব ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর। তাঁর মতে দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এবং এর নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা যে বিশ্ব পরিম-লে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন তার সর্বশেষ উদাহরণ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ জোট-৭ এর দেশগুলোর সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ ও অংশগ্রহণ। মুন্সীগঞ্জের মোহাম্মদ শাজাহান, কুড়ি বছর ধরে জাপানে বসবাস করছেন, তার বিশ্বাস আঞ্চলিক সহযোগিতা ও মৈত্রীর ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থান বাংলাদেশকে একদিন উন্নত দেশে পরিণত করবে। বাংলাদেশকে নিয়ে জি-৭ একদিন জি-৮-এ উন্নীত হবে। সেই ভরসায় প্রবাসে ও দেশে কাজ করতে চান তিনি। সব মিলিয়ে ইসিশিমার সন্মেলন বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল অর্জন। এই অর্জনকে সুদূরপ্রসারী করার জন্য একযোগে কাজ করতে হবে জনগণকেও।
×