ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামে ৪ দফা সুপারিশ

প্যাকেজ ভ্যাট পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৪:১১, ৬ জুন ২০১৬

প্যাকেজ ভ্যাট পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আইনে ‘বহুস্তর বা প্যাকেজ ভ্যাট’ পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম। আগামী ২০ শে জুনের মধ্যে প্যাকেজ ভ্যাট পুনর্বহাল এবং ব্যবসায়ীদের ৪ দফা সুপারিশ সরকার না মানলে সারাদেশের দোকানপাট বন্ধ রেখে লাগাতার ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। আসন্ন রমজানের পর থেকে এমন কর্মসূচী পালনের ইঙ্গিত দেন তারা। রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু মোতালেব। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি, শিল্প, ভারি প্রকৌশল শিল্প, টেক্সটাইল, রফতানি খাতের মূসক অব্যাহতি বলবত করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সরকারের নিকট এফবিসিসিআইয়ের আন্তর্জাতিক প্রচলিত মূসক ব্যবস্থার সঙ্গে শতভাগ সঙ্গতিপূর্ণ প্রস্তাবনাসমূহ বিবেচনা করা হয়নি। এমনকি মূসক আইনের খসড়া পুনর্গঠনের জন্য গঠিত কমিটির মতামত এবং এফবিসিসিআইএ’র সাত দফা সুপারিশ কোন কারণ ছাড়াই নতুন মূসক আইনে স্থান পায়নি। তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বর্তমানে মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থায় ২২টি সেবার ক্ষেত্রে সংকুচিত ভিত্তিমূলক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট সেবা খাতসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি দেশীয় শিল্প প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য করা হয়েছে যা অযৌক্তিক। সংসবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইএ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যৌথ কমিটির সুপারিশের আলোকে মূসক আইনের চারটি ধারায় বিশেষ সুবিধা চান ব্যবসায়ী নেতারা। প্যাকেজ ভ্যাটের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ব্যবসায়ীরা বলেন, ইউরোপ, আমেরিকা এমনকি এশিয়ার দেশগুলোতেও এই প্যাকেজ ভ্যাট রয়েছে এবং আমাদের আশা, বাংলাদেশেও এই প্যাকেজ ভ্যাট কার্যকর হবে। তারা বলেন, খুচরা ব্যবসায়ী বা দোকান পর্যায়ে টার্নওভারের পরিমাণ নির্বিশেষে মূসক আইনে নিবন্ধন গ্রহণ করে বার্ষিক ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট পরিমাণে বিধি ধারা নির্ধারিত অর্থ টার্নওভার কর (প্যাকেজ ভ্যাট) হিসাবে পরিশোধের বিধান। এছাড়া ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে কেবল উৎপাদন পর্যায়ে ৩৬ লাখ টাকার উর্ধে ১.৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের ওপর ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার কর পরিশোধের বিধান করা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও সকল সেবা খাতের মূল সংযোজিত অংশের ওপর মূসক ১৫ শতাংশ সরবরাহ মূল্যের ওপর ৪ শতাংশ হারে মূসক পরিশোধের বিধান করা। ব্যবসায়ী পর্যায়ে তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্তিযোগ্য যারা ইসিআর/পওস ব্যবহার করে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রয় করে থাকে তারা টার্নওভারের পরিমাণ নির্বিশেষে মূল্য সংযোজন ১৩.৩৩ শতাংশ হিসেবে গননা করা। এক্ষেত্রে মূসক ১৫ শতাংশ সরবরাহ মূল্যের ওপর ২ শতাংশ হারে মূসক পরিশোধের বিধান করার পরামর্শ দিয়েছে ঐক্য ফোরাম। একই সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ৪টি সুপারিশ তুলে ধরে আবু মোতালেব বলেন, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আইনে ‘বহুস্তর বা প্যাকেজ ভ্যাট’ পুনর্বহাল করতে হবে। আগামী ২০ শে জুনের মধ্যে প্যাকেজ ভ্যাট পুনর্বহাল এবং ব্যবসায়ীদের ৪ দফা সুপারিশ সরকার না মানলে সারাদেশের সমস্ত দোকানপাট বন্ধ রেখে লাগাতার ধর্মঘটের ঘোষণা দেন তিনি।
×