ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিঙ্গাপুরের মতো স্মার্ট এলাকা হবে উত্তরা ফ্ল্যাট প্রকল্প॥ পূর্তমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ৫ জুন ২০১৬

সিঙ্গাপুরের মতো স্মার্ট এলাকা হবে উত্তরা ফ্ল্যাট প্রকল্প॥ পূর্তমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর উত্তরায় দেশের সরকারী বৃহত্তম ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প এলাকাকে সিঙ্গাপুরের ন্যায় পরিকল্পিত, আধুনিক, পরিবেশবান্ধব সবুজ চত্বরবিশিষ্ট ও স্মার্ট এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি। একই সঙ্গে গ্রাহককে প্রকল্পে ফ্ল্যাট কিনতে উৎসাহিত করতে অর্ধেক টাকা চার বছরে পরিশোধ করতে ও বাকি অর্ধেক টাকা ব্যাংক লোনের মাধ্যমে বাকি ২৫ বছরে মাত্র ৮ দশমিক ৫ ভাগ সুদে পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে। ১০টি ভবনের ফ্ল্যাট চলতি ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই বুঝিয়ে দেয়া হবে। তাই তাড়াতাড়ি এ প্রকল্পে ফ্ল্যাট বুকিং দিয়ে লাভবান হতে আগ্রহী সকল শ্রেণীর ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শনিবার উত্তরার ১৮নং সেক্টরে প্রকল্প স্থানে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রি বাড়াতে আয়োজিত এক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত আনুষ্ঠানিক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় ঢাকা ১৮ আসনের এমপি এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, এ কে এম ফজলুল হক এমপি, গণপর্ত সচিব মোঃ শহিদুল্লাহ খন্দকার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান, রাজউক সদস্য (স্টেট) আব্দুল হাই, পরিচালক প্রশাসন দুলাল কৃঞ্চ সাহা, রাজউকের উর্ধতন কর্মকর্তা, কর্মচারী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ কয়েক হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল চালু হলে এ ফ্ল্যাট প্রকল্পটি হবে রাজধানীর অন্যতম সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন প্রকল্প। এরপর এ প্রকল্পে আর ফ্ল্যাট খুঁজে পাওয়া যাবে না। অনেকেই এ প্রকল্পে কি কি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা জানেন না। তাই ফ্ল্যাট কিনতে তেমন একটা আগ্রহ প্রকাশ করেন না। ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে এলাকার বিভিন্ন বৈশিষ্ট তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর অন্য যে কোন এলাকায় ওয়াসার স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) বাস্তবায়ন করা হয় না। ফলে লেক বা নালাগুলোতে পয়বর্জ্য গিয়ে মিশে। ফলে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। এ প্রকল্পে প্রতিটি ভবনের নিচে একটি করে এসটিপি বসানো হবে। ফলে প্রকল্পের লেকের পানি কখনও দূষিত হবে না। এছাড়া লেকে ওয়াকওয়ে থাকবে, আলাদা সাইকেল চালানোর ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রতিটি ভবনের ওপরে বাচ্চাদের জন্য সুরক্ষিতভাবে খেলার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া প্রতিটি ভবনের ওপরে বৃষ্টির পানি ধারণ করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া ভবনের স্টোর বিদ্যুত হিসেবে প্রতিটি ভবনের ওপরে সোলার প্যানেল বসানো হবে। যাতে প্রয়োজনের সময় বসবাসকারীরা বিনামূল্যে বিদ্যুত পায়। এছাড়া সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা থাকবে এ প্রকল্পে। তাই ফ্ল্যাট ক্রেতাদের উচিত বেসরকারী ফ্ল্যাট কোম্পানির প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী সকল সুবিধা পেতে উত্তরা ফ্ল্যাট প্রকল্পে ফ্ল্যাট ক্রয় করে লাভবান হতে অনুরোধ জানান। কোন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আজীবন চলতে পারে না উল্লেখ করে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হোক। সরকার সকল শ্রেণীর নাগরিকের আবাসন নিশ্চিত করতে এ প্রকল্পের বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের নির্মিতব্য ৭৯টি ভবনের মধ্যে ১০টি ভবনের ফ্ল্যাট বিক্রেতাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে। এছাড়া চলমান সকল প্রকল্প অতি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। উত্তরা ৩য় পর্বের কাজ চলতি ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করা হবে। পূর্বাচলের সকল কাজ ২০১৮ সালেল মধ্যেই অবশ্যই শেষ করা হবে। এছাড়া রাজধানীতে বসবাসকারী সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে পূর্বাচলে ৬০ হাজার ফ্ল্যাট তৈরি করা হবে। এর মধ্যে নিম্ন আয়ের গৃহকর্মী নারী-পুরুষের জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। মূলত রাজধানী ঢাকাকে স্মার্ট, পরিবেশবান্ধব সবুজ ঢাকা গড়তেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
×