ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে জাদুঘরে স্মারক বক্তৃতা

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৫ জুন ২০১৬

নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে জাদুঘরে স্মারক বক্তৃতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৃষ্টির আলোয় প্রতিদিনই কোন না কোনভাবে স্মরণে আসেন সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তবে বিশেষ কোন দিবস উপলক্ষে জাতীয় কবি যেন হয়ে ওঠেন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। তাই তো এই মানবতা, প্রেম ও দ্রোহের কবির জন্মদিনটির কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও চলছে তাকে নিবেদিত নানান অনুষ্ঠান। সেই সুবাদে কবির ১১৭তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শনিবার নজরুল স্মৃতি বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। সকালে জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে নজরুল স্মৃতি বক্তৃতা উপস্থাপন করেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। আলোচনায় অংশ নেনÑ শিল্পী মোস্তফা জামান ও কবি সাখাওয়াত টিপু। স্বাগত বক্তব্য দেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতে নজরুলসঙ্গীত পরিবেশন করেন আফসানা রুনা। স্মৃতি বক্তৃতায় অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান নজরুল সাহিত্যের নানান দিক তুলে ধরেন। একই সঙ্গে সমসাময়িক সাহিত্যিক বিশেষ করে নজরুল সম্পর্কে বুদ্ধদেব বসুর অভিব্যক্তি উপস্থাপন করে বলেন, নজরুল মূলত তারুণ্যের কবি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মসিউর রহমান বলেন, নজরুলের বহুমাত্রিক সৃজনশীলতা অন্য যে কোন লেখক থেকে তাকে আলাদা করেছে। সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, দারিদ্র্য ও স্নেহহীনতা নজরুল সাহিত্যকে যেমন প্রভাবিত করেছে, তেমনি উগ্র মৌলবাদকে নজরুল কখনই ভাল চোখে দেখেননি। বরং এই উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বলেছেন সম্প্রীতি ও মানবতার কথা। আলোকচিত্রে ‘আক্রান্ত ঢাকা’ ॥ দেয়ালজুড়ে পোড়া মানুষের ছবি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পেট্রোল বোমার শিকার মানুষের মৃত্যুর অপেক্ষা। আগুনে পুড়ছে বাস, পুড়ছে পবিত্র কোরান শরীফ। ২১ আগস্টে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা, ৫ মে হেফাজতে ইসলামের তা-ব, ২০১৪ সালে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা ইত্যাদির চিত্র নিয়ে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে আলোকচিত্রী আলী হোসেন মিন্টুর ‘আক্রান্ত ঢাকা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এতে স্থান পেয়েছে আক্রান্ত ঢাকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ৭৫টি আলোকচিত্র। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও বিশেষ অতিথি খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। আলোকচিত্রী আলী হোসেন মিন্টুর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ। রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার চক্রান্ত করেছিল। অপারেশন ক্লিনহার্ট, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, জঙ্গীবাদ, হেফাজতের আক্রমণ, পেট্রোল বোমা ইত্যাদির মাধ্যমে এ অপশক্তি আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। জিয়াউর রহমানও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন। গহনযাত্রা নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী ॥ ঢাকার মঞ্চে যুক্ত হলো আরেকটি নতুন নাটক। গহনযাত্রা নামের প্রযোজনাটি মঞ্চে এনেছে পদাতিক নাট্য সংসদ (টিএসসি)। দ্বৈত ও অদ্বৈতের আখ্যানে উগ্রপন্থার ভয়াবহতাকে উপজীব্য করে নাটকটি লিখেছেন রুবাইয়াৎ আহমেদ। নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী। নাটকটিতে একক অভিনয় করেছেন শামছি আরা সায়েকা। শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে প্রযোজনাটির কারিগরি প্রদর্শনী হয়। নাটকের কাহিনীতে দেখা যায়Ñ এ ভূখ-ের কোন এক স্থানে জন্ম নেয় উগ্রপন্থার। সেই উগ্রপন্থার অনুসারীরা বিপরীত সব মতবাদ প্রত্যাখ্যান করে শুধু একটি মতবাদকেই প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এজন্য তারা চালায় ধ্বংসলীলা, বইয়ে দেয় রক্তগঙ্গা, হত্যা করে অগণিত মানুষ, ধর্ষিত হয় অসংখ্য নারী। ভিন্ন মতাদর্শের এক ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের মানুষদের তারা ধরে নিয়ে বন্দী করে রাখে। বন্দীদশা থেকে পালাতে চায় অনেকে। কিন্তু মারা পড়ে তারা। শুধু একজন বেঁচে যায়। সালমা। বেঁচে গিয়ে ফিরে আসে সালমা। খোলা প্রান্তরে পড়ে থাকা লাশগুলো সমাহিত করবে বলে। এ সময় সালমা নিজের অভ্যন্তরে টের পায় অপর কারও অস্তিত্ব। সেই অস্তিত্ব হয়ত তারই বর্ধিত কোন রূপ কিংবা অপরূপে সে নিজেই অথবা অন্যকিছু। আমরা জানি না। সেই অস্তিত্ব সঙ্গী হয় তার। মৃতদের কবর দেয়ার পর সালমা খোঁজ করে তার প্রার্থিত পুরুষের। খুঁজে পায় ল্যাম্পপোস্টে ছিন্নমস্তক ঝুলে আছে সেই পুরুষ। সালমা ধরা পড়ে উগ্রপন্থীদের হাতে। তাকে ধর্ষণের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বধ্যভূমিতে। আগুনে দগ্ধ হওয়ার পূর্বে সালমা যাচনা করে পরমের সান্নিধ্য। ক্ষমা চায় তাদের জন্যÑ যারা এ পরিণতির কুশীলব। নিজের অন্তর্ধানের মধ্য দিয়ে সব অনাচার আর বিভেদ যেন লুপ্ত হয় পৃথিবী থেকেÑ সেই প্রার্থনায় নত হয় সালমা। ব্রিটিশ কাউন্সিলে মঞ্চস্থ ‘মধু শিকারী’ ॥ বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সুন্দরবন এবং সংলগ্ন মানুষের যাপিতজীবন নিয়ে মঞ্চে এলো বটতলার নতুন নাটক ‘মধু শিকারী’। যার উদ্বোধনী প্রদর্শনী হলো মঙ্গলবার ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনে। কার্তিকা নায়ারের ‘হানি হান্টার’ গল্পের বাংলা অনুবাদ করেছেন শামীম আজাদ ‘মধু শিকারী’ নামে। নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার। সুন্দরবনের যে জায়গায় তিনটি নদী এসে মিলেছে, গল্পটি শুরু হয় সেখান থেকে। সুন্দরবনের ছোট্ট ছেলে শনু মধু খুব পছন্দ করে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবন একবার সাইক্লোনে তছনছ হয়ে যায়। ঝড় চলে গেলে আসে দুর্ভিক্ষ। ক্ষুধায় শনু এতই কাতর হয়ে পড়ে যে, সে মৌচাক থেকে মধু নিয়ে নেয়, যদিও মধু তোলার মৌসুম আরও অনেক পরে। শনু তখনও বুঝতে পারেনি তার জন্য কতবড় বিপদ বয়ে আনতে পারে। বনের রাজা দক্ষিণ রায় এবং বনবিব এতে ক্রুদ্ধ হয়। তারা শাস্তি দেয় শনুকে এবং এর কারণে শনুকে পোহাতে হয় অনেক কষ্ট। শেষ পর্যন্ত শনু তার প্রায়শ্চিত্ত করে।
×