ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোহাম্মদ আলীর কিছু অজানা তথ্য

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৫ জুন ২০১৬

মোহাম্মদ আলীর কিছু অজানা তথ্য

বিডিনিউজ ॥ নিজের ক্ষেত্রকে ছাপিয়ে যাওয়া কিংবদন্তি বক্সার মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে কিছু অজানা তথ্য জানিয়েছেন তার আত্মজীবনী লেখক ও দীর্ঘদিনের বন্ধু ডেভিস মিলার। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনবারের হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ও অলিম্পিক স্বর্ণপদকজয়ী এই ক্রীড়াবিদকে নিয়ে লেখা হয়নি এমন তথ্য খুব বেশি নেই। তার পরও অনেকের অজানা কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন মিলার। একাধিকবার নাম বদল ॥ ১৯৬০-এর দশকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর কেন্টাকির তরুণ ক্যাসিয়াস ক্লে থেকে মোহাম্মদ আলী নাম নেয়ার বিষয়টি অনেকেরই জানা। ‘তবে খুব স্বল্পসংখ্যক মানুষই জানেন যে, তার নাম প্রথমবার বদলে ক্যাসিয়াস এক্স হয়েছিল’Ñ বলেন মিলার। তার দেয়া তথ্যমতে, হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন সানি লিসটনকে হারানোর পরদিন ১৯৬৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে তার এই নাম বদল হয়। এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর ৬ মার্চ তিনি ঘোষণা দেন, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা ইলাইজা মোহাম্মদ তাকে নতুন নাম দিয়েছেন ‘মোহাম্মদ আলী’। মিলার মনে করেন, বর্ণবাদবিরোধী নেতা ম্যালকম এক্সের নাম ধরেই ক্যাসিয়াস এক্স নাম নিয়েছিলেন তিনি। সুফিবাদী ॥ ১৯৬৭ সালের ২৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর আলীর শিরোপা কেড়ে নেয়া হয়। সে সময় সেনাবাহিনীতে না যাওয়ার পেছনে ধর্মীয় কারণ দেখিয়েছিলেন তিনি। তরুণ বয়সে আক্রমণাত্মক আফ্রিকান-আমেরিকান ইসলামীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তার। তবে পরবর্তীতে মরমীবাদের দিকে ঝুঁকে যান তিনি। ২০১৫ সালের শেষদিকে প্রকাশিত ‘এ্যাপ্রোচিং আলী’র লেখক মিলার বলেন, ‘২০০৫ সালের দিকে আলী নিজেকে সুফি ঘোষণা করেন। ইসলামের সব ধারার মধ্যে সুফিবাদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যাওয়ার কথা বলেন তিনি।’ চোটের সঙ্গে লড়াই ॥ সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তিন বছর সাত মাসের নির্বাসন থেকে আলী খেলায় ফিরেছিলেন হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নের প্রতিদ্বন্দ্বী জেরি কুয়ারির সঙ্গে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। সে সময় সফল প্রত্যাবর্তন হয়েছিল আলীর। তবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে তাকে অন্য লড়াইও করতে হয়। মিলার বলেন, ‘প্রতিযোগিতার প্রস্তুতির জন্য আলী মাত্র ছয় সপ্তাহ সময় পেয়েছিলেন। অনুশীলনে তার বাল্যকালের বন্ধু ও সাবেক হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন জিমি এলিসের আঘাতে পাঁজরের হাড় ভাঙ্গে আলীর।’ ‘ওই ইনজুরি নিয়েও আলী লড়াইয়ের সময় পাল্টাননি। এটা করতে গেলে যদি আর কখনও লড়াইয়ে নামার সুযোগ না পান সে আশঙ্কা থেকেই লড়েন তিনি।’ পারকিনসনে যোগাযোগের নতুন কায়দা ১৯৮৪ সালে ৪২ বছর বয়সে আলীর পারকিনসন রোগ ধরা পড়ার পর অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন কৌশল অবলম্বন করেন তিনি। ‘তিনি হাত ও আঙ্গুল, মুখের ভাব, চোখের ইশারার মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন।’ এ সময় তিনি বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে শব্দ করে দর্শনার্থীদের চমকে দেয়ার পাশাপাশি হাত মেলানোর সময় সুড়সুড়ি দেয়া ছাড়াও প্রায় সবাইকে খ্যাপাতেন বলে জানান মিলার। ‘হাঁটতে পারলেও প্রায়ই তিনি হুইলচেয়ারে বা ইজিচেয়ারে বসে থাকতেন।’ জাদুকর ॥ “প্রজাপতির মতো ‘উড়ে চলা’ এবং মৌমাছির মতো ‘হুল’ থাকলেও তার চোখ যা দেখে না তাতে তার হাত আঘাত করতে পারে না।” এই পঙ্ক্তিগুলোর মতো আঈর আরও কিছু চমকপ্রদ কৌশল ছিল। মিলার বলেছেন, ‘পারকিনসনসের বছরগুলোতে ভেল্কিবাজি (হাতের কৌশল) দেখিয়ে দর্শনার্থীদের আনন্দ দিয়েছেন আলী, যা কিছুদিন আগ পর্যন্তও তিনি করেছেন।’
×